আন্তর্জতিক ডেস্ক : দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলের যুদ্ধমন্ত্রী এভিগডোর লিবারম্যান ফিলিস্তিনিদের ওপর আরো বেশি হত্যা-নির্যাতন চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনিদের দুর্বার আন্দোলনে ভীত হয়ে তিনি এ নির্দেশ দিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইসরাইলের যুদ্ধমন্ত্রী গণযোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া এক বার্তায় ফিলিস্তিদেরকে ব্যাপকমাত্রায় হত্যার নির্দেশ দিয়ে আইন প্রণয়নের আহ্বান জানান। তিনি আমেরিকায়ও একই ধরণের আইন থাকার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ভালো হয় এ বিষয়ে ইসরাইলও আমেরিকার নীতি অনুসরণ করুক।
ইসরাইলের ছয়টি দলের সমন্বয়ে গঠিত জোটের নেতারা কিছুদিন আগে একটি প্রস্তাব পাস করেন যাতে প্রতিবাদী ফিলিস্তিনিদের হত্যা করার কথা বলা হয়েছে। ওই প্রস্তাবে জর্দান নদীর পশ্চিম তীরে ইসরাইল বিরোধী বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী ফিলিস্তিনিদের কঠোর হস্তে দমন ও হত্যা করার জন্য সামরিক আদালতকে বিশেষ ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ফিলিস্তিনে ইসরাইলবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ এবং আমেরিকায় তরুণ ফিলিস্তিনিদের প্রতিবাদ আন্দোলনে ভীত হয়ে ইসরাইল এসব পদক্ষেপ নিয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরাইলে তাদের দূতাবাস তেলআবিব থেকে বায়তুল মোকাদ্দাসে সরিয়ে আনার ঘোষণা দেয়ার পর এর প্রতিবাদে জর্দান নদীর পশ্চিম তীর ও গাজায় ফিলিস্তিনিরা ক্ষোভে ফেটে পড়েছে এবং ইসরাইলি সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষ নিয়মিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে। ফিলিস্তিনিদের ডাকা তৃতীয় ইন্তিফাদা গণআন্দোলন ইসরাইল ও আমেরিকার জন্য বিরাট দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় আমেরিকার সবুজ সংকেত পেয়ে এবং বিভিন্ন দেশের জনগণের ওপর আমেরিকার দমন-পীড়নের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দখলদার ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের ওপর আরো বেশি হত্যা ও জুলুম-নির্যাতন চালানোর পদক্ষেপ নিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরাইল-মার্কিন যৌথ ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবেই ইসরাইলি কর্মকর্তারা আন্দোলন দমনের নামে অবাধে ফিলিস্তিনিদের হত্যার কথা বলছে। তাদের মতে ফিলিস্তিনিদের সাথে ইসরাইলের বর্তমান আচরণ মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং জাতিগত শুদ্ধি অভিযানের বড় দৃষ্টান্ত। গত কয়েক বছর ধরে চলা ইসরাইলের সীমাহীন এই অপরাধযজ্ঞ সারা বিশ্বের মানুষের বিবেককে নাড়া দিয়েছে।
আমেরিকায় যুদ্ধবিরোধী কর্মী ক্যান উকায়েভ বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের অপরাধযজ্ঞ তাদের উগ্র বর্ণবাদী চিন্তা-ভাবনারই ফসল। ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চরম অবিচার করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেছেন, এর পেছনে পাশ্চাত্যের সমর্থন রয়েছে।
নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের দমন-পীড়ন থেকে তাদের মানবতা বিরোধী চরিত্রের বিষয়টি আগের চেয়ে আরো বেশী স্পষ্ট হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত বিভিন্ন রিপোর্ট ও পরিসংখ্যান থেকে ইসরাইলি বর্বরতার ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে। হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি ঘরবাড়ি ধ্বংস করে তারা সহিংসতার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। ইসরাইলের এ আচরণ জেনেভা কনভেনশনের ২৭ নম্বর ধারার লঙ্ঘন যেখান দখলদার শক্তিকে ওই অঞ্চলের জান মাল রক্ষার কথা বলা হয়েছে। এ অবস্থায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলি হত্যাকাণ্ড বন্ধে পদক্ষেপ নেয়া আন্তর্জাতিক সমাজের জন্য জরুরি হয়ে পড়েছে। (পার্সটুডে)