অগ্রদৃষ্টি ডেস্কঃ
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদকে অপহরণ ও হত্যা পরিকল্পনা মামলায় গ্রেপ্তার সাংবাদিক শফিক রেহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত।
২০১৫ সালে করা ওই মামলায় শফিক রেহমানকে সাত দিন হেফাজতে চেয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির সহকারী কমিশনার হাসান আরাফাত যে আবেদন করেছিলেন তাতে আদালত পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন মিঃ আরাফাত।
আজ শনিবার সকালে ঢাকার ইস্কাটনে তার বাসভবন থেকে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা তাকে গ্রেপ্তার করেছে বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বিবিসি বাংলার কাছে নিশ্চিত করেছেন।
শফিক রেহমানের বাসার বাবুর্চি আলী আজম যিনি ওই বাসাতেই থাকেন এবং সকালের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেছেন যারা মিঃ রেহমানকে নিয়ে গেছে তারা ভোর ছয়টায় বাসার বাইরে এসেছিল এবং বাসার ভেতরে ঢোকে সাতটার দিকে।
”ওরা বলল বৈশাখী চ্যানেল থেকে আসছে সাহেবের সাক্ষাৎকার নিতে। সাহেবের কাছে জানানোর পর সাহেব বলছেন নিচে বসাও আর ওদের চা-নাস্তা দাও।”
আলী আজম বলেন ‘ম্যাডামের’ শরীর অসুস্থ থাকায় তিনি তার জন্য নাস্তা তৈরি করছিলেন, তাই দারোয়ানকে দিয়ে চা-নাস্তা নিচে পাঠিয়ে দেন।
আলী আজম জানান কিছুক্ষণ পর তিনি দেখেন মিঃ রেহমান তিনতলা থেকে নিচে নামছেন।
”সাহেব নাস্তা না খেয়েই নামছেন দেখে আমি ভাবছি সাহেব কি যাইতেছে ক্যান? নাস্তা কি না খাইয়াই যায়গা? তো আমি সামনের দিকে আগাইসি। সামনে আগানোর পর দেখি যে একটা লোক সামনে। এরপরে মাঝখানে হল সাহেবে- এবং আরেকজন লোক। নেমে যাইতেসে গিয়া সিঁড়ি দিয়া।”
তিনি বলেন বাসার বাইরে এসেছিল বেশ কয়েকজন লোক, কিন্তু বাসার ভেতরে ঢোকে সাদা পোশাকে তিনজন লোক।
তারা তাদের পরিচয়ের একটি কার্ড দিয়েছিল বলে বাবুর্চি আলী আজম বিবিসি বাংলাকে জানান যে কার্ডটি মিঃ রেহমান তাকে রাখতে দিয়েছিলেন। শফিক রেহমান নিচে নেমে যাবার পর তারা ওই কার্ডটি ফেরত চান বলে জানান মিঃ আজম।
”একজন লোক আইস্যা কয় কার্ডটা দাও। তো আমি কই কার্ডটা আমাকে দিসে সাহেবে- আমি আপনারে দিমু ক্যান? তো কয় – ওই ব্যাটা দে। ওই ব্যাটা দে। দিবি না?- বলে তখন দুইটা ঘুঁষি মারছে আমাকে। ঘুঁষি মাইরা কয় আমরা ডিবির লোক। তখন কার্ডটা নিয়া গেল।”
এরপর নিচে থেকে তারা খবর পান যে মিঃ রেহমানকে ধরে নিয়ে গেছে। বাবুর্চি আলী আজমের কথায় সময়টা তখন ছিল সকাল আটটা পঁচিশ।
বিএনপির পক্ষ থেকে বিএনপি-ঘনিষ্ঠ এই সাংবাদিকের গ্রেপ্তারের নিন্দা করা হয়েছে এবং দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী শনিবার সকালে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে মিঃ রেহমানের মুক্তির দাবি জানিয়েেছন।