এন.আই.মিলন,বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) থেকে ঃ বীরগঞ্জ পল্লীবিদ্যুত সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ঘুষ দূর্নীতি সহ গ্রাহক হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। সমিতির অর্ন্তভুক্ত সংশ্লিষ্ট এলাকায় একজন ক্ষুদ্র শিল্প গ্রাহকের সাথে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে চোরাই পথে অতি গোপনে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন অবৈধ বিদ্যুৎ লাইন নির্মান করে ‘স’ মিল ও চালের মিলে ব্যবহার করার সুযোগ করে দিলে গণ অভিযোগ উত্থাপিত হয়। ফলে দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ডিজিএম শাহীন চৌধুরী নিজেদের দোষ আড়াল করতে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন।
প্রকাশ্য দূর্নীতির ঘটনা ধামাচাপা দিতে অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী ঐ মিলারের ৯২০/৭০৮০ নম্বর সংযোগটি সাময়িক বিচ্ছিন্ন করলেও তার বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কিংবা মামলা করা হয়নি বরং লোক দেখানো অফিসিয়াল কাগজ চালাচালি ও তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও প্রকৃত ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে জোর তদ্বির চলছে। তাছাড়া দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বিরুদ্ধে সরকারীভাবে নতুন নতুন এলাকা বিদ্যুতায়িত করণ কাজে সংশ্লিষ্ট তালিকাভুক্ত গ্রাহকদের নিকট অবৈধভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা উৎকোচ আদায় ও আত্মসাত এবং গ্রাহক হয়রানীর গুরুত্বর অনেক অভিযোগও রয়েছে।
জানা গেছে বীরগঞ্জ পল্লীবিদ্যুত সমিতির আওতাধীন গোলাপগঞ্জ বাজারে সোলায়মান আলী নামে পল্লীবিদ্যুতের ৯২০/১২২০ এবং ৯২০/৭০৮০ নম্বরের দ’ুটি ক্ষুদ্র শিল্প ‘স’ মিল ও চালের মিল সংযোগ রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী,প্রতিবেশী মিলারগন সহ পল্লীবিদ্যুত সমিতি ঝাড়বাড়ী অভিযোগ কেন্দ্র ইনচার্জ মোঃ আল আমিন জানান কাঠ মিলের সংযোগ ব্যবহারকারী সোলায়মান আলীর ছেলে তোজম্মেল হক @লিমন গত ১৭ জুলাই/১৫ তারিখে বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সক্রিয় সহযোগিতায় সরকারী মূল্যবান বিদ্যুতের খুঁটি ও তার সংগ্রহ করে বহিরাগত,বে-সরকারী,নন-ট্রেইন স্থানীয় শ্রী নবাব নামের জনৈক ইলেক্ট্রিশিয়ান কে দিয়ে অবৈধভাবে খুঁটি স্থাপন ও তার টানিয়ে ঝুকিপুর্ণ উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিপদ জনক লাইন নির্মান করে মিলে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে নিত্য দিনের কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে।
লিমনের কাঠ মিল থেকে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি গোলাপগঞ্জ অভিযোগ কেন্দ্রের দুরত্ব আনুমানিক মাত্র এক/দেড়’শ গজ,সেখানে প্রকাশ্য দিবালোকে সকলের জ্ঞাতসারে একটি মিলে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ কিভাবে চলতে পারে ? এটি জনমনে একমাত্র প্রশ্ন।
এ ব্যপারে গতকাল আমাদের প্রতিনিধি সরজমিন তথ্য সংগ্রহে গেলে গোলাপগঞ্জ অভিযোগ কেন্দ্রের ইনচার্জ এলটি কায়কোবাদ জানান তিনি ঘটনার দিন ছুটিতে ছিলেন তবে ফিরে এসে জানতে পেরে বিষয়টি ডিজিএম স্যারকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।
দায়িত্বরত ইনচার্জ আতিকুর রহমান লাইনম্যান-১ বলেন আমি এখানে সদ্য যোগদান করেছি কিছুই জানি না। এছাড়া আপনাদের আরও জানার প্রয়োজন হলে ডিজিএম স্যারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
পল্লীবিদ্যুত সমিতি, বীরগঞ্জ ডিজিএম শাহীন চৌধুরীর সাথে কথা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন এখন বাজারে এসব খুটি ও তার কিনতে পাওয়া যায়,অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী মিলার লিমন নিজেই সেগুলো সংগ্রহ করেছে এবং নবাবকে দিয়ে ঈদের ছুটির সুযোগে টাকার বিনিময়ে কাজ করিয়ে নিয়েছে,আমি অথবা অফিসের কেউ জড়িত আছে কিনা তদন্ত ছাড়া বলা যাচ্ছে না। আজ বুধবার এজিএমকম ফরিদ আল দ্বীনের নেতৃত্বে জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার আমিনুল ইসলাম সহ লাইনম্যানদের সহায়তায় অবৈধবাবে চলমান মিলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। নবাবের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। মিলার একজন প্রভাবশালী আ’লীগ নেতা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে আমার ক্ষতি হতে পারে।
অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী অভিযুক্ত মিলার লিমনের মুখোমুখি হলে তিনি জানান সরকারী এসব বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তার আমি কোথায় পেয়েছি,কে কাজ করেছে এসব প্রশ্ন আমাকে কিংবা অভিযোগ কেন্দ্রের কাউকে জিজ্ঞাসা না করে সরাসরি ডিজিএম শাহীন সাহেব কে বলেন,তবেই সঠিক উত্তর পেয়ে যাবেন। প্রায় ৪০ হাজার টাকা দিয়ে আমাকে লাইন নির্মান করতে হয়েছে। কিন্তু কেন আমাকে এভাবে বলা হচ্ছে কিছুই বুঝে আসছে না।
দিনাজপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার জিএম মোহাম্মদ আলীর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি ঘটনাটি অবগত আছেন উল্লেখ করে বলেন ঘটনার ক্লু উদ্ধারে সদর অফিসে কর্মরত দুই সদস্যের একটি শক্তিশালি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অপরাধী যেই হোক না কেন,দায়ী কর্মকর্তা/কর্মচারী সহ সংম্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।