(সদ্য প্রয়াত গোলাম মওলা ভাইর স্মরণে)
চতুর্দিকে এম্বুলেন্সের শব্দ ক্ষণে ক্ষণে বাজে।
জানালায় উঁকি দিই রাস্তাগুলো ফাঁকা নির্মল আকাশ
সাদা সাদা মেঘগুলো দিগন্তবিস্তৃত অবিরত ছুটে।
গেটের সামনে দেখি এম্বুলেন্স কিছুক্ষণ পর……..!
মধ্যবয়সী মহিলা ধীরপায়ে এগিয়ে যায় এম্বুলেন্সে দিকে
হঠাৎ উধাও! আবার শব্দ বহুদূর থেকে ভেসে আসে।
কিছুদিন আগে কোলাহলমূখর ছিলো শহরের অলিগলি
শিশুদের হৈ-হুল্লোলে মুখরিত পার্ক স্কুলের আঙ্গিনা।
এখন সবই নীরব,নিশ্চুপ শব্দহীন অচেনা এক পৃথিবী।
বিস্মিত হই অতিক্ষুদ্রের সাথে অস্ত্রবিহীন যুদ্ধরত ধরণী।
মানুষগুলো গৃহবন্দি অসহায় বিচলিত শক্তিহীন।
সপ্ত আসমানে বসে মর্তের খেলা দেখছে অধিপতি।
আকাশেরবুক ফাঁকা,নির্মল বায়ু বিমান মেলছে না ডানা
ভোরের আকাশে সূর্য আগের মতই করে খেলা।
উহানের শব্দহীন ঢেউ মিশেছে বেরগামো শহরের বুকে।
সে ঢেউ রক্তহয়ে ছুটছে ইউরোপের প্রতিটি ঘরে ঘরে।
বোবাকান্না কভূ শুনছে না ঢেউ বাড়ছে ধীরে ধীরে।
হাসপাতালের আঙিনায় ভীড় জমে শয্যাশায়ী মানুষের।
ভারবাহী ক্লান্ত পশুরমতই নার্স,ডাক্তার এম্বুলেন্স কর্মী
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও সমবেত হয় মৃত্যুর সারিতে।
এতটুকু নেই জায়গা কবরস্হানে লাশের গাড়ি ছুটছে
কোথায় যাবে জানা নেই তবুও যেতে হবে।
মিলান শহর এখন শোকাহত এক নীরব নগরী
এখানেই নেই মানুষের ব্যস্ততা যানবাহনের ভীড়
বিপণী গুলোও বোবা ঠাঁয় দাঁড়িয়ে সময়ের অপেক্ষায়।
কখন চঞ্চলতা ফিরে আসবে জনসমাগমের মাঝে।
টেমসের পাড়, নিউইয়র্ক স্কোয়ার, লুবরো মিউজিয়াম ভেনিসের নগরী,তাজমহলের পাদদেশ নীরব নির্জীব।
ঢাকার শহরও কোলাহলমুক্ত কাঁদে নীরবে।
শঙ্কাহীন চিত্তে উড় দিতে পারিনা স্বপ্নের আকাশে।
কষ্টের মেঘ গুলো হৃদয়ের আকাশে ভাসে
বুক দুরুদুরু কাঁপে হঠাৎ হঠাৎ সাইরেন বাজে।
ঘরের ভেতর যুদ্ধ হয় একঘেয়েমি সময়ের সাথে।
বাচ্চাগুলোও বেপরোয়া হয় ওঠে বন্দি সময়ে
বদ্ধ ঘরের দেয়াল ভেঙ্গে মুক্ত হতে চায় সর্বক্ষণে।
মাঝে মাঝে মৃত্যুর সংবাদে ভারী হয় পত্রিকার পাতা
লাখো মানুষের আহাজারি ভাসে মহামারীর আঘাতে।
হঠাৎ সমস্ত অনুভূতি কাঁপিয়ে মৃত্যুর খবর আসে
গোলাম মওলা ভাই নেই পৃথিবীর বুকে।
শোকের ছায়া নামে শহরের বুক জুড়ে
ক্রন্দনের ঢেউ জাগে লাখো বাঙালির বুকে।
শহিদীমৃত্যুর কাফেলায় সমবেত হয় যেন দোয়া মাঙ্গি
মহান আল্লাহর দরবারে।
শক্তি দিও মোদের শোক সহিবারে হেফাজত করো মোদের আছি যারা মছিবতে।
তুহিন মাহমুদ
সাংবাদিক
ইতালি প্রবাসী