ঝালকাঠি প্রতিনিধি ॥ ঝালকাঠি সদর উপজেলার ৮৯নং মধ্য গুয়াটন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন করতে ঠিকাদারের খামখেয়ালিতে ৩ বছর ধরে শিক্ষা কার্যক্রম চরম বিপর্যয়ের মুখে। ১৯৪৩ সালে নির্মিত এই বিদ্যালয়টি এতই জরাজির্ন যে, যেকোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দেখেও যেন না দেখার ভান করছে। বিদ্যালয়টির নতুন ভবনের কাজ ২০১১-১২ অর্থ বছরে শুরু করেন ঝালকাঠির ঠিকাদার আমিনুল ইসলাম লিটন। কিন্তু কলাম করে ছাদ ডালাই দিয়ে উধাও ঠিকাদার। পুরানো ভবনের ৩ কক্ষের একটি শিক্ষক কক্ষ, একটি ঠিকাদারের মালামাল রেখে তালাবদ্ধ, বাকি একটি কক্ষে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় জরাজির্ন ভবনের ঐ নির্ধারিত কক্ষে শিক্ষার্থীদের হৈচৈ এর মধ্যে ক্লাশ নিচ্ছেন এক শিক্ষক। কথা হয় বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষিকা মমতা রানী হাওলাদারের সাথে তিনি বলেন তিন বছর ধরে আমরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে চরম আতংকে ক্লাশ নিচ্ছি। একটি রুমের মধ্যে ৭০-৮০ জন শিক্ষার্থীর ক্লাশ নিতে হিমশিম খেতে হয়। ১৯৪৩ সালে নির্মিত এই ভবনের একবার সংস্কার করা হয়েছে। ২০১১ সালে নতুন ভবনের নির্মান কাজ শুরু হলেও ঠিকাদারের খামখেয়ালিপনার কারনে আজও শেষ হয়নি এবং কবে শেষ হবে তাও অনিশ্চিত। ঠিকাদারকে একবার মোবাইল করে ছিলাম, তিনি আমাকে ধমক দিয়ে বললেন, আপনার বেশি দরকার হলে নিজেই কাজ করিয়ে নেন। প্রধান শিক্ষিকা আরো বলেন, শিক্ষা অফিসে এই দূরবস্থার কথা জানাবার পর গত বছর ডিসেম্বর মাসে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার (এটিও) আমিনুল স্যার এসেছিলেন তিনি এদূরবস্থা দেখে যান। সংবাদ কর্মীরা এসেছে খবর পেয়ে উপস্থিত কয়েকজন শ্রমিক জানান, আমরা পেটের দায়ে দিনমজুরের কাজ করি অথচ এই ঠিকাদারের অধীনে কাজ করলাম কিন্তু আমাদের টাকা আজও পাইনি বরং টাকা চাইলে চাঁদাবাজির মামলা দেওয়ার হুমকী দেয়। ভবনের মিস্ত্রি মোঃ আলী হোসেন (৫৫) বলেন আমি প্রায় ১০ হাজার টাকা পাই। ৩/৪ বার ঠিকাদারের ঝালকাঠি বাসায় গিয়েছি তাও তার দেখা পাইনি। কাওছার হোসেন ৫২ বলেন আমার ৮ হাজার টাকা পাওনা আছে। এই ঠিকাদারের বানারীপাড়া গুয়াচিত্রা এলাকায় একটি কালবার্ডে কাজ করেছি সেই টাকাও পাইনি। শ্রমিক মোফাজ্জেল (৫৫) বলেন, আমিও ঠিকাদারের কাছে কাজের টাকা পাই। কাউখালীর মনিরের কাছ থেকে ছাদ ডালাইয়ের জন্য টিনের শীট ভাড়া নেয় ঐ ঠিকাদার। ৫ মাস অতিবাহিত হলেও শীট এবং মালের ভাড়া কোনটাই পায়নি মনির। শীট ও ভাড়ার টাকার জন্য উক্ত মনির শেখেরহাট পুলিশ ফাড়িতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর লিখিত অভিযোগ দিয়ে কোন ফল পাচ্ছেনা। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়টি ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ইউপি সদস্য শেখ শাহ্ জাহান বলেন, ঠিকাদার আমিনুল ইসলাম লিটন কাজ তো শেষ করেনি, যেটুকু করেছে তাও একেবারে নি¤œমানের। ঠিকাদার সম্পূর্ন খামখেয়ালি করেই এই কাজ ফেলে রেখেছে। ঠিকাদার আমিনুল ইসলাম লিটনের সাথে মুঠোফোনে যোগযোগ করতে গেলে ০১৭১১৩৫৮৬৮৮ নম্বরটিতে ফোনদিলেও ফোন রির্সিভ করেননি।