কোরবানির ঈদ সামনে রেখে বাসের আগাম টিকেট বিক্রি শুরু করেছে পরিবহন সংস্থাগুলো; বরাবরের মতোই রাজধানীর বিভিন্ন বাস কাউন্টারে দেখা গেছে টিকেটপ্রত্যাশীদের দীর্ঘ লাইন।
শুক্রবার সকালে গাবতলী বাস টার্মিনাল এবং কল্যাণপুর, শ্যামলী ও মিরপুর মাজার রোডের বাস কাউন্টার থেকে ঈদের আগাম টিকেট বিক্রি শুরু হয়। এসব কাউন্টারে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন গন্তব্যের টিকেট বিক্রি হচ্ছে।
আর সায়দাবাদ ও মহাখালী থেকে দূরপাল্লার বাসের অগ্রিম টিকেট বিক্রি হবে শনিবার থেকে। বিআরটিসির আগাম টিকেট পাওয়া যাবে আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে।
সকালে গাবতলী টার্মিনাল ও বিভিন্ন কাউন্টার ঘুরে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিচ্ছিন্ন কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনলাইনে টিকেট না পাওয়ার অভিযোগও করেছেন কেউ কেউ।
সকাল থেকে দীর্ঘ অপেক্ষার পর যারা টিকেট পাচ্ছেন, তারা বাড়ি ফিরছেন স্বস্তি আর আনন্দ নিয়ে।
সকাল ৬টা থেকে টিকেট বিক্রির কথা থাকলেও বেশিরভাগ কাউন্টার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ৮টার পরে খুলেছে বলে লাইনে দাঁড়ানো যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন।
কল্যাণপুর বাস টার্মিনালে টিকেটের অপেক্ষায় থাকা রংপুরের রাসেল আহমেদ বলেন, “সকাল ৬টার আগেই কাউন্টারে এসেছি। লাইনে দাঁড়িয়ে আছি তিন ঘণ্টা। টিকেট পাব কি না জানি না।”
অনেকে লাইনে না দাঁড়িয়েও টিকেট ‘ম্যানেজ’ করে ফেলছেন বলে অভিযোগ করেন রাসেল।
সাভার থেকে টিকেট কাটতে কল্যাণপুর এসেছেন পোশাক কারখানার কর্মী আলমগীর ও রাকিব।
আলমগীর জানান, সকাল ৬টায় লাইনে দাঁড়িয়ে তিনি টিকেট পেয়েছেন বেলা ১২টায়। অন্য সময় ঢাকা থেকে রংপুরের টিকেট ৫০০ টাকা হলেও এখন টিকেটের দাম ৬০০ টাকা নেওয়া হয়েছে।
কল্যাণপুরে টিআর পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার শাহেদুর রহমান মুক্ত জানান, চাহিদা মেটাতে গিয়ে তারা হিমশিম খাচ্ছেন।
দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট কিনতে ভোগান্তির কথা স্বীকার করেই তিনি বলেন, “এই ভোগান্তি আনন্দেরই অংশ। আমরা চেষ্টা করছি যেন টিকেট কাটতে যাত্রীদের ভোগান্তি কম হয়।”
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২৫ সেপ্টেম্বর হতে পারে কোরবানির ঈদ। এ কারণে ২৩ ও ২৪ সেপ্টেম্বরের টিকেটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি বলে জানান শাহেদুর।
টার্মিনাল ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ কাউন্টারেই পুরুষ ও নারীদের জন্য আলাদা লাইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি কাউন্টারের প্রবেশমুখে মোতায়েন রয়েছেন একজন করে পুলিশ সদস্য। এরপরও অনেকে লাইন ভেঙে সামনে গিয়ে টিকেট কাটার চেষ্টা করছেন, যা নিয়ে হৈ চৈ হচ্ছে।
পঞ্চগড়ের টিকেট কাটতে গাবতলীতে আসা সোহেল রানা বলেন, “লাইনে দাঁড়িয়ে বলতে পারছি না টিকেট কাউন্টারের ভেতরে কি হচ্ছে। টিকেট পাব কি না জানি না।”
হানিফ এন্টারপ্রাইজের বিপণন এক্সিকিউটিভ ইকবাল হোসেন আগেই অগ্রদৃষ্টিকে জানিয়েছিলেন, প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত টিকেট বিক্রি করবেন তারা। গাবতলীতে এ পরিবহনের কাউন্টারে সকাল থেকেই দেখা যায় দীর্ঘ লাইন।
বিভিন্ন বাস কোম্পানি অনলাইনে টিকেট কেনার সুযোগ রাখার ঘোষণা দিলেও ঈদের আগাম টিকেট অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন বেশ কয়েকজন।
নওগাঁর আশিক হোসেন অগ্রদৃষ্টিকে বলেন , “অনলাইনে টিকেট কাটার চেষ্টা করেও পাইনি। তাই ভোর ৫টায় কল্যাণপুরে বাস কাউন্টারে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছি।”
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব মো. এনায়েতুল্লাহ অগ্রদৃষ্টিকে জানান, মহাখালী ও সায়দাবাদ থেকে যে বাসগুলো ছাড়বে, সেগুলোর অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হবে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে।