নিজস্ব প্রতিবেধকঃ- আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে আচরণবিধি তদারকিতে প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় একজন করে নির্বাহী হাকিম নামছেন আজ রোববার থেকে। সেই সঙ্গে ভোটের আগে-পরে চার দিন আরও এক হাজার নির্বাহী ও বিচারিক হাকিম দায়িত্বে থাকবেন।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, পৌর ভোটে মোট ৯৭০ জন নির্বাহী হাকিম এবং ২৩৪ জন বিচারিক হাকিম দায়িত্ব পালন করবেন। গত বুধবার কমিশন সভায় ২৩৪ পৌরসভায় হাকিম নিয়োগের বিষয়টি অনুমোদন করা হয়। গত বৃহস্পতিবার প্রায় ১২শ’ নির্বাহী ও বিচারিক হাকিম নিয়োগের বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে এবং হাই কোর্ট বিভাগের পরামর্শ নিয়ে আইন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেন ইসির আইন শাখার উপ সচিব মহসিনুল হক। ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ১৩ ডিসেম্বর থেকে প্রতি পৌরসভায় একজন করে একজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। প্রতীক বরাদ্দের পর ১৪ ডিসেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু হবে। আচরণবিধি লঙ্ঘন হলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেবেন তারা। এ নির্বাচনে মেয়র পদে সহস্রাধিক এবং কাউন্সিলর পদে প্রায় ১২ হাজার প্রার্থীকে বৈধ ঘোষণা করেছে ইসি। ১৩ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সংখ্যা চূড়ান্ত হবে। ইতোমধ্যে অনেক এলাকায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এসেছে। এ বিষয়ে সতর্ক করে ভোটে থাকা ২০টি দলকে চিঠিও দিয়েছে ইসি। পথসভা ও ঘরোয়া সভার বাইরে জনসভা, শোভাযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ইসি বলেছে, ১৪ ডিসেম্বর থেকে কঠোর অবস্থান থাকবে তাদের। ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব সামসুল আলম জানান, পৌরসভা নির্বাচনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ প্রতিরোধ কাযক্রম পরিচালানায় প্রতিটি পৌরসভার জন্য ২৩৪ জন হাকিম প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৩ ডিসেম্বর থেকে ভোটের পরদিন ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাঠে থাকবেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভ্রাম্যমাণ ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের নেতৃত্ব দেবেন নির্বাহী হাকিম। নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবেন তারা। পৌর এলাকায় নির্বাচনী অপরাধ আমলে নিতে প্রতি পৌরসভায় একজন করে এবং আঠারোর বেশি ওয়ার্ডের পৌরসভায় দুইজন করে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হবে। ফলে ২৩৪ পৌরসভায় ২৩৯ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ পাবেন। এ সময় প্রতিটি পৌরসভার তিনটি ওয়ার্ডের জন্য একজন করে ৭৩০ জন নির্বাহী হাকিম আচরণবিধি সংক্রান্ত মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য থাকবেন। ইসির আইন শাখার কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘনের অপরাধে ছয় মাস থেকে সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত এবং আচরণবিধি লংঘনের দায়ে অনধিক ৬ মাসের কারাদ-ের বিধান রয়েছে। বিচারিক হাকিম নির্বাচনী অপরাধ ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনায় সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত সাজা দেওয়ার এখতিয়ার রাখেন। অন্যদিকে নির্বাহী হাকিম ছয় মাস থেকে সর্বোচ্চ দুই বছর সাজা দিতে পারেন। এর সঙ্গে অর্থদ-েরও বিধান রয়েছে। বিধি লঙ্ঘনের দায়ে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতাও ইসির রয়েছে। এবারের পৌরসভা নির্বাচনে সাড়ে তিন হাজার কেন্দ্রে ভোট হবে। এতে পুরুষ ভোটার ৩৫ লাখ ৮৬ হাজার ৩৫৬ জন এবং নারী ভোটার ৩৫ লাখ ৭৬ হাজার ৪০ জন। ৩০ ডিসেম্বর এসব পৌরসভায় মেয়র পদে ২৩৪ জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৩৮ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২ হাজার ৯৫২ জনকে নির্বাচিত করবেন ভোটাররা। ভোট গ্রহণ করবেন ৬১ হাজার ১৪৩ জন কর্মকর্তা।