রাঙ্গুনিয়ায় চাঞ্চল্যকর ফকির জিল্লুর রহমান ভাণ্ডারী হত্যা মামলার আসামিদের জামিন আবেদন হাইকোর্টেও না মঞ্জুর করেছে। মঙ্গলবার হাইকোর্টের ১৮ নম্বর বেঞ্চের বিচারপতি শেখ আবদুল আউয়াল ও খসরুজ্জামান আসামিদের এই জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন। গত সোমবার হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি, আইনজীবি মহসিন হোসাইন ফরাজি আসামিদের পক্ষে জামিনের আবেদন করেন।
আইনজীবি মহসিন হোসাইন ফরাজি জানান, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার আলোচিত হত্যা মামলার আসামি শহীদুল ইসলাম খোকনসহ ১৩ আসামির পক্ষে জামিন আবেদন দাখিল করা হয়। ওইদিন আবেদনের পর শুনানি করেন আদালত। আদালতে এ মামলা যে মিথ্যা তার পক্ষে তদন্ত কর্মকর্তার রিপোর্ট উপস্থাপন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত মঙ্গলবার সকালে সময় ধার্য করেন। ধার্য দিনে আদালত জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তিন সপ্তাহ পর পুনরায় সময় নির্ধারণ করেন।
মামলার পক্ষে শুনানি করেন আদালতের ডেপুটি আ্যাটর্নি জেনারেল ফজলুর রহমান খান। তিনি বলেন, থানার তদন্ত কর্মকর্তার রিপোর্টের বিভ্রান্তি এবং নিম্ম আদালতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়। এছাড়া আসামিরা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি জোরালোভাবে উপস্থাপন করা হয়। ফলে আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করেন।
প্রসঙ্গত, গত ১১ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুল হাসানের আদালত ফকির জিল্লুর রহমান ভান্ডারি হত্যা মামলার ১১ আসামীর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরপর পুলিশ মামলার আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী জসিমকে গ্রেপ্তার করে।
চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আইনজীবি আবদুস সাত্তার জানান, আসামী জসিম হাইকোর্টের জামিনে ছিলেন। কিন্তু চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তার জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পুলিশ তাকে কারাগারে প্রেরণ করেছে। এর আগে আরও দুই আসামী পুলিশের হাতে ধরা পড়ে কারাগারে রয়েছে। বাকী আসামীরা এখনো পলাতক রয়েছে। মামলার আসামিরা হচ্ছেন, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের শহীদুল ইসলাম খোকন, ইসমাইল, আবু, সাইফুল, কামাল, জসিম, আজিম, নাজিম, তোতাইয়া, সুমন, নাছির, রঞ্জু ও জাহাঙ্গীর।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৫ সালে ২১ জানুয়ারি রাতে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের রাণীরহাট থেকে বাড়ি ফেরার পথে সন্ত্রাসীরা ফকির জিল্লু ভান্ডারীকে ধরে নিয়ে গিয়ে আরএবিএম উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পায়ে গুলি ও নির্যাতন করে নির্মমভাবে হত্যা করে। ফকির জিল্লুর রহমান উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের খামারিপাড়া গ্রামের নুরুল আলম সওদাগর প্রকাশ লেদুর পূত্র।
ফকির জিল্লুর রহমান ভান্ডারী মাইজভাণ্ডারী দরবারের তালিকাভুক্ত খাদেম ছিলেন। হত্যাকান্ডের পর তার ভাই বাদী নুরুল আজিম বাদি হয়ে ১৩ সন্ত্রাসীকে আসামি করে রাঙ্গুনিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য স্বপরিবারে বাদিপক্ষকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে বলে জানান নুরুল আজিম।