প্রতি ১০ মিনিটের আলাপে গড়ে তিনটা করে মিথ্যা কথা বলে মানুষ। আর এ মিথ্যার মধ্যে অধিকাংশই হয় অতি সাধারণ মিথ্যা কথা। যেমন অত্যন্ত খারাপ কোনো অবস্থায় আপনি বলতে পারেন ‘আমি ভালো আছি’। এ ছাড়াও কারো অতি বিরক্তিকর পোশাকের যদি মিথ্যা প্রশংসা করেন তাও মিথ্যা হিসেবে বলা যায়। কেউ যদি মিথ্যা কথা বলে তাহলে সেগুলো কীভাবে ধরা যাবে? এ প্রসঙ্গে কয়েকটি বিজ্ঞানসম্মত উপায় উল্লেখ করেছে হাফিংটন পোস্ট।
১. বেসলাইন পদ্ধতি : এ পদ্ধতিতে সত্য কথা বলার সময়ের পরিস্থিতির সঙ্গে মিথ্যা কথা বলার পরিস্থিতির তুলনা করা হয়। এ জন্য তাদের কিছু সত্য উত্তর দেওয়ার মতো বা অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করা হয়। তার পর উভয়ের উত্তর দেওয়ার সময় বক্তার নানা পরিবর্তন তুলনা করা হয়। এতে দেখা যাবে সত্য বলার সময় বক্তা যেমন আচরণ করবে, মিথ্যা বলার সময় তার তুলনায় ভিন্ন আচরণ করবে।
২. শয়তানের উকিল পদ্ধতি : ‘ডেভিলস অ্যাডভোকেট’ নামে এ পদ্ধতিতে মিথ্যাবাদী নির্ণয় করা যায় সহজেই। এ জন্য কোনো একটি মিথ্যা বিষয়ের ওপর মতামত দিতে বলা হয়। সত্যবাদীরা এ ক্ষেত্রে তেমন সাফল্য না পেলেও মিথ্যাবাদীরা সহজেই তাতে সফল হয়।
এ পদ্ধতিতে নির্ভুলভাবে ৭৫ ভাগ সত্যবাদী ও ৭৮ ভাগ মিথ্যাবাদী নির্ণয় করা যায়।
৩. ঘটনার নিরবচ্ছিন্নতা ভঙ্গ : সত্যবাদীদের কোনো ঘটনা বর্ণনা করতে বললে তারা তা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে বলতে পারবে। কিন্তু কোনো মিথ্যাবাদীকে ঘটনা বর্ণনা করতে বললে তারা তার মাঝখানে কোনো এক পর্যায়ে গণ্ডগোল করে ফেলবে। আর ঘটনাটির মাঝখানের কোনো একটি পর্যায়কে ভিন্ন দিক থেকে বলতে বললে তারা তাতে ভুল করবে।
মিথ্যা কথা নির্ণয় করুন বিজ্ঞানসম্মত সাতটি উপায়ে
৪. আমি থেকে আমরা : মিথ্যার ক্ষেত্রে মানুষ ‘আমি’ কথাটিকে ‘আমরা’ হিসেবে বলতে শুরু করে। যেমন ‘আমি সেখানে কয়েকজন বন্ধুসহ গিয়েছিলাম।’ কথাটিকে মিথ্যার ক্ষেত্রে বলা হতে পারে ‘আমরা সেখানে কয়েকজন বন্ধুসহ গিয়েছিলাম।’
৫. প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কথা : মিথ্যা কথার ক্ষেত্রে মানুষ প্রত্যক্ষ কথার বদলে পরোক্ষ কথা বলা শুরু করে। সে ক্ষেত্রে ‘জেন টেনিস খেলতে ভালোবাসে’ কথার বদলে বলা হতে পারে ‘জেনের অন্যতম প্রিয় শখ টেনিস খেলা।’ যার অন্যতম উদ্দেশ্য হয় মিথ্যাবাদী তার কথাটি এ থেকে বাদ দিতে চায় (আমি কথাটি বাদ দেওয়ার প্রসঙ্গ)।
৬. কয়েকটি শব্দ বারবার বলা : মিথ্যাবাদীদের কয়েকটি শব্দ বারবার বলতে দেখা যায়। তাদের মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য কয়েকটি কথার ওপর মনযোগ দিতে হয়। এ কারণে তারা বারবার নির্দিষ্ট কয়েকটি কথা বলতে পারে।
আর কোনো একটি প্রশ্ন বারবার করা হলে সত্যবাদীরা বিভিন্ন শব্দ ব্যবহার করে কথাটি বলতে থাকবে। কিন্তু মিথ্যাবাদীরা একই শব্দ ব্যবহার করে ঘটনাটি তুলে ধরবে।
৭. অস্বাভাবিক অঙ্গভঙ্গি : মিথ্যাবাদীর কথার সঙ্গে অঙ্গভঙ্গি নাও মিলতে পারে। সে হয়তো কোনো একটি কথা বলছে কিন্তু তার সঙ্গে তার অঙ্গভঙ্গি না মিললে সেই কথার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন করা যেতে পারে।