জগলুল হুদা, রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি: রাঙ্গুনিয়া উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের জঙ্গল দক্ষিণ নিশ্চিন্তাপুর হাজির টিলা গ্রামের শ্বাশুড়ি কর্তৃক পুত্রবধুকে গলাটিপে হত্যা করা হয়েছে। নিহত রুনা আক্তারের গলায় আগাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এই ব্যাপারে রাঙ্গুনিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগে শ্বাশুড়ি ও স্বামীকে আটক করা হয়েছে। নিহত রুনা আক্তারের আট মাস বয়সের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। রাঙ্গুনিয়া থানা ও স্থানীয়রা জানায়, দক্ষিণ নিশ্চিন্তাপুর হাজির টিলা গ্রামের নজির আহম্মদ পুত্র সিএনজি চালক বাচা মিঞার সাথে রুনা আক্তারের গত ২০১২ সালে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই শ্বাশুড়ি ও দুই ননদ পারিবারিক বিভিন্ন কলহের জেরে নানা ভাবে তাকে নির্যাতন চালিয়ে আসছে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বিয়ের পর রুনা আক্তার অধিকাংশ সময় বাপের বাড়িতে বসবাস করে। গত ২৯ নভেম্বর বাপের বাড়িতে থাকা অবস্থায় রুনা আক্তারকে তার স্বামী বাচা মিঞা আর কোন নির্যাতন করা হবে না বলে অঙ্গিকার করে শ্বশুড় বাড়িতে নিয়ে আসে। নিয়ে আসার পর থেকে রুনা আক্তারকে আবারও ননদ আর শ্বাশুড়ি মিলে নানাভাবে নির্যাতন চালায় এবং তকে দুইদিন ধরে ভাত না দেওয়ায় তিনি উপোস ছিলেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। গতকাল বুধবার (২ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় স্বামী বাচা মিঞা ননদকে নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হয়ে এলাকার সিএনজি স্টেশনে গেলে সে মুহুর্তে তার মা ফোনে তার স্ত্রী মাথা ঘুরে পরে যায় বলে জানায়। সে ঘরে ফিরে এসে তার স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য চন্দ্রঘোনা খ্রিষ্টিয়ান হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষনা করে। খবর পেয়ে রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। সাথে শ্বাশুড়ি ও স্বামীকে আটক করা হয়।
রাঙ্গুনিয়া থানার উপপরিদর্শক মুহাম্মদ আরমান অগ্রদৃষ্টিকে জানান, নিহত গৃহবধু রুনা আক্তারের গলায় জখমের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে শ্বাশুড়ি এবং স্বামীকে থানায় আটক করা হয়।
নিহতের রুনা আক্তারের বড় ভাই মোহাম্মদ শফি জানায়, বিয়ে দেওয়ার পর থেকে আমার বোনকে শ্বাশুড়ি ও ননদ মিলে নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। আটমাস বয়সি শিশু কন্যার কথা চিন্তা করে আমরা অনেকবার জগড়া বিবাদ মিটিয়ে ঘর সংসার করার সুযোগ করে দিই। ঘটনার তিন দিন আগেও আমার বোন আমাদের বাড়িতে ছিল। স্বামী আর কোন জগড়া বিবাদ না হওয়ার কথা বলে আমার বোনকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। এরপর শ্বাশুড়ি ও ননদ আমার বোনকে গলা টিপে হত্যা করা হয় বলে জানতে পারি।
রাঙ্গুনিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবির জানান, গৃহবধুকে গলাটিপে হত্যা করার অভিযোগে হত্যা মামলা রুজু হয়। ময়না তদন্তের পর হত্যা না আত্বহত্যা নিশ্চিত হওয়া যাবে।