খুব সকালে কিছুটা বৃষ্টি হয়ে গেছে। এরপর সারাবেলা মেঘের আনাগোনা মাথার ওপর। কিন্তু সূর্যের তেজ বারবার মেঘ সরিয়ে আশার আলো ছড়াচ্ছিল। এরই মধ্যে প্রোটিয়ারা কঠিন অনুশীলন করে দুপুরে মাঠ ছেড়েছে। এরপর মাঠে আসে টাইগাররা। মুশফিক বরাবরের মতো সবার আগে অনুশীলনে ব্যস্ত। তামিম অনুশীলনের আগে কথা বলে গেছেন সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে। একে একে সাকিব, মাহমুদুল্লাহরা ব্যাটিং অনুশীলন শুরু করলেন ইনডোরে। প্রধান কোচের মনোযোগটা ব্যাটিং জুড়েই রইলো। অন্যদিকে পেস বোলিং কোচ হিথ স্ট্রিক ও ফিল্ডিং কোচ রিচার্ড হ্যালসল ভীষণ ব্যস্ত বোলিং ফিল্ডিং নিয়ে। দুপুর তিনটা থেকে বড় একটা সময় কাটালেন মো. শহীদ ও মুস্তাফিজকে নিয়ে। বিশেষ করে তরুণ প্রতিভা মুস্তাফিজুর রহমানের দিকে তাদের নজরটা রইলো দীর্ঘক্ষণ। ব্যাটিং অনুশীলন সেরে এসে নিস্তার নেই কারও- হ্যালসল ডেকে এনে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছেন ফিল্ডিং অনুশীলনে। অন্যদিকে ট্রেইনার ভিল্লাভারায়নও কম নন। ফিল্ডিং কোচ, বোলিং কোচ আর ট্রেইনার মিলে বোলিং মেশিন দিয়ে অনুশীলন করালেন অনেকক্ষণ। সর্বশেষ লিটনকে নিয়ে রিচার্ডের দীর্ঘক্ষণ কিপিং অনুশীলন। সব মিলিয়ে বৃষ্টিমুক্ত দিনে খুব কঠিন পরিশ্রমে কাটলো টাইগারদের।
একটা সময় ছিল অনুশীলনে ক্রিকেটারদের মনোযোগ নিয়ে বেশ প্রশ্ন ছিল। এর মধ্যে তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান অন্যতম। খুব একটা মনোযোগী দেখা যেতো না তাদের। কিন্তু বদলে গেছে দিন। গতকাল মুশফিকুর রহীমের সঙ্গে সবার আগে সাকিব আল হাসানকেই দেখা গেল অনুশীলনে আসতে। বদলে যাওয়ার বড় কারণ কি? ভাল করার ক্ষুধা ও জয়ের আশা। টেস্ট দলের সহ-অধিনায়ক তামিম ইকবাল সেটাই মনে করেন। কারণ এমন সিরিজের শেষ সময়টা বাংলাদেশ দলকে দেখা গেছে অনেক ক্লান্ত। সারা বছরই এমন ধারাবাহিক কোনভাবেই ছিলেন না ক্রিকেটাররা। তামিম এই খানে এগিয়ে রাখলেন কোচিং স্টাফদের পরিশ্রমকেই। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, এটা নির্ভর করে ‘মাইন্ড সেট’ এর উপর। সত্যি কথা, এ বছরের আগ পর্যন্ত আমরা খুব বড় কিছু অর্জন করতে পারিনি। কিন্তু এ বছর সেটা পেরেছি। বিশেষ করে ওয়ানডে ক্রিকেটে। দলের প্রতিটি খেলোয়াড়ের মধ্যে সাফল্যের ক্ষুধা আছে। সবাই উন্নতি করতে চায়। বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে। এখানে আমাদের আরও অনেক উন্নতি করতে হবে। মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়লে তা পারফর্মে প্রভাব ফেলে। আমাদের ফিজিও- ট্রেইনাররা আমাদের নিয়ে প্রচুর কাজ করেন। একেক দিন একেক ধরনের অনুশীলন করানোর চেষ্টা করেন। যাতে কেউ ক্লান্ত হয়ে না পড়ে। আমরা সবাই ওই অনুশীলন স্বতঃস্ফূর্তভাবে উপভোগ করি। অনুশীলন, টিম মিটিং এসব আমরা এখন উপভোগ করা শিখে গেছি। আমার মনে হয়, যে কোন বিষয় উপভোগ করা শিখলে সেটার ফলাফল ভাল হয়।’