জগলুল হুদা, রাঙ্গুনিয়া: বিনোদনপ্রেমীদের জন্য রাঙ্গুনিয়া উপজেলার হোছনাবাদ ইউনিয়নের কোদালা বিটের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ২’শত দশ হেক্টর এলাকাজুড়ে বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ সন্তান শেখ রাসেলের নামে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের পরিচালনায় শেখ রাসেল এভিয়ারী এন্ড ইকোপার্ক নির্মাণের পর বিনোদন প্রেমিদের প্রিয় স্থানে পরিণত হয়েছে। বিনোদনকেন্দ্রে গড়ে তোলা হয়েছে বৃক্ষাচ্ছাদিত সবুজ বাগান। পাহাড়ের বুকে শত শত পাখি উড়ে বেড়াচ্ছে। হরেক জাতের পাখির কলকাকলিতে সুবজ পাহাড় মুখরিত হয়ে উঠেছে। ঘন সবুজ পাহাড়ের মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য ট্যুরিষ্টদের মনে খুবই আনন্দ দেয়। পার্কের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ বাংলাদেশের প্রথম রোপওয়ে ক্যাবল কার যা ২.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ। উঁচু-নিচু পাহাড়ের মাঝপথ দিয়ে বয়ে গেছে এ ক্যাবল কার। প্রতিটি কারে ৬ জন ভ্রমণকারী মাত্র ১৫ মিনিটে ২.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকা ঘুরে আসতে পারবে। পার্কের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি ও পাখিদের জন্য প্রয়োজনীয় পানির ব্যবস্থা করতে পার্কের সদর দরজায় খনন করা হয়েছে কৃত্রিম লেক। পাখিকুলের পানীয়, ¯œান এবং আহার-বিহারে পানির ব্যবহার, প্রকৃতি ও পাখিদের জীবন ধারার অপরূপ দৃশ্যের অবতারণ হয়েছে এ লেকে। রাজ, জিংডিং, খাকি, ক্যাম্বলসহ বিভিন্ন জাতের শত শত হাঁস ভাসছে লেকটিতে। লেকে সংযোজিত হয়েছে প্যাডেল বোট। সড়ক আর বনাঞ্চলের মাঝখানে দ্বীপসমেত কৃত্রিম লেকের দারুণ উপভোগ্য এই দৃশ্য আকর্ষণ করছে পর্যটকদের। লেকের মাঝখানে নির্মিত দ্বীপ থেকে তীরে আসা-যাওয়ার জন্য নির্মিত হয়েছে ব্রীজ। দ্বীপের আকর্ষণ ছাড়াও পার্কের অভ্যন্তরে একাধিক স্থানে বাঁধ দিয়ে তৈরী করা হয়েছে কৃত্রিম লেক।
শেখ রাসেল এভিয়ারী পার্কের পরিচালক ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বিপুল কৃষ্ণ দাশ জানান, বড় ছোট ৫ টি এভিয়ারীতে দেশি পাখির পাশাপাশি আফ্রিকার ক্রাউন ক্রেন, ফ্লেমিংগো, পেলিক্যান, ম্যাকাও, রেইনব্রো লরি, রোসেলা, ইলেকট্রাস প্যারট, গ্রে প্যারট, টার্কি, তিতির, ময়ূর, সোয়ান ইত্যাদি সংরক্ষণ করা হয়েছে। এছাড়া পার্কের চারদিকে গড়ে তোলা হয়েছে সবুজ গাছপালা। রোপণ করা হয়েছে পাখিদের খাদ্য যোগানো বৃক্ষ। পাখিশালা এলাকার খালি জায়গা ও বাগানের শুন্যস্থানে এসব বৃক্ষের চারা রোপণ করে পাখিকুলের সকল প্রকার খাদ্য উৎপাদন ও প্রাকৃতিক খাদ্যের সংস্থান করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বিগত ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে শেখ রাসেল এভিয়ারী এন্ড ইকোপার্ক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মনোরম পরিবেশে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সবুজ পাহাড় ও অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করা যায়। টুরিষ্টদের জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে এই পার্কে।
পার্কে কৃত্রিম হ্রদ, ক্যাবল কার, সুবজ পাহাড়ের বুকে শত শত পাখির বিচরণের পাশাপাশি রয়েছে খাঁচার ভিতরে বিভিন্ন পশু পাখি। ক্যাবল কার চালুর মাধ্যমে ভ্রমণ পিপাসুদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ট্যুরিষ্টদের নিরাপত্তা শতভাগ নিশ্চিত করা হয়েছে। পার্কের অধিনে রয়েছে পর্যাপ্ত জনবল। সর্বোপরি বাংলাদেশে প্রথমবারের মত চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় এভিয়ারী পার্ক ও দীর্ঘতম ক্যাবল কার এই সরকারের যুগান্তকারী উন্নয়নের একটি বড় সাফল্য বলে মনে করছেন রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম মজুমদার।