সিলেট, বুধবার, ১৬ মার্চ ২০১৬ :: সিলেটে রাগীব আলী ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে দায়ের করা দুটি জালিয়াতি মামলা ফের সচল হয়েছে। বুধবার সিলেট মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতের বিচারক সাইফুজ্জামান হিরো মামলা দুটি সচল করার নির্দেশ দেন। এমন তথ্য দিয়েছেন মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মফুর আলী।
তিনি বলেন, রাগীব আলী গংদের বিরুদ্ধে দায়ের করা জালিয়াতি মামলা অতীতে হাইকোর্টের নির্দেশে বাতিল হয়ে গিয়েছিল। অবৈধ দখলে থাকা তারাপুর চা বাগান উদ্ধারে সম্প্রতি সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগের দেয়া রায়ে রাগীব আলী গংদের বিরুদ্ধে দায়ের করা দুটি জালিয়াতি মামলা সচলেরও নির্দেশনা দেয়া হয়। উচ্চ আদালতের রায়ের নির্দেশনা অনুসারে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চিঠি প্রাপ্ত হয়ে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ হিসাবে মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে মামলা দুটি চালুর আবেদন জানাই। বিচারক সাইফুজ্জামান হিরো আবেদন আমলে নিয়ে মামলা দুটি পুনরুজ্জীবিত করে তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলা দুটি পুনরুজ্জীবিত করণের আবেদন শুনানীর সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মফুর আলী, অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন, পিপি অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম ও সহকারী পিপি জসীম উদ্দিন।
রাগীব আলী গংয়ের বিরুদ্ধে সিলেট কোতোয়ালী থানায় দায়ের করা দুটি জালিয়াতি মামলা দায়ের হয়েছিল। এরমধ্যে ২০০৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর দায়ের করা মামলা নং-১১৭। যার জি,আর মামলা নম্বর- ৯৭৪/২০০৫ইং। ধারা- ৪১৯/৪২০/৪০৬/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ দন্ডবিধি। একই বছরের ২ নবেম্বর একই থানায় দায়ের করা মামলা নম্বর-১২। যার জি,আর মামলা নম্বর-১১৪৬/২০০৫ ইং। ধারা- ৪৬৬/৪৬৮/৪৭১/৪২০/৩৪ দন্ডবিধি। সুপ্রীম কোর্টের সিভিল আপীল মামলা নং- ১৬৩/২০০৯ ইং মামলার রায় দেন গত ১৯ জানুয়ারি। এতে উপরোক্ত মামলা দুটি চালুর নির্দেশনা দেন আপিলেট ডিভিশন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, তৎকালীন সিলেট সদর ভূমি কমিশনার এসএম আব্দুল কাদের কোতোয়ালী থানায় এই দুটি মামলা দায়ের করেছিলেন। মামলায় উল্লেখ করা হয় রাগীব আলী তার নিজের স্বার্থে পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের নামে জাল আমমোক্তারনামা তৈরি করেছেন। তিনি তারাপুর চা বাগান আত্মসাৎ করার জন্য জাল অনুমতিপত্র এবং সন্দেহজনক আমমোক্তারনামার বলে নিজের লোক দিয়ে আব্দুল হাই’র নামে বিক্রি রেজিস্ট্রেশন করে নিয়েছেন। মামলায় উল্লেখ করা হয়, বাগানের সেবায়েত পঙ্কজ কুমার গুপ্ত ৪২২.৯৬ একর জমি সাড়ে ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে বিক্রির চুক্তিতে আবদ্ধ হন। অথচ সেবায়েত ঐ দলিলে স্বাক্ষর করেননি। পরবর্তীতে হাইকোর্টের নির্দেশে এই প্রতারণা মামলা স্থগিত করা হয়।
তবে গত ১৯ জানুয়ারি আপিল বিভাগের চার বিচারক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিক এর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ প্রদত্ত রায়ে এই প্রতারণা মামলা পুনরায় চালুর নির্দেশ দেন। এই রায়ে রাগীব আলীর দখল থেকে তারাপুর চা বাগান ৬ মাসের মধ্যে উদ্ধারসহ ১৭ টি নির্দেশনা দেয়া হয়।
সুত্র,সিলেটভিউ২৪ডটকম