নিউজ ডেস্কঃ দেশের বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি নেই দাবি করে বাণিজ্য সচিব মো. জাফর উদ্দীন বলেছেন, দাম দ্রুত কমে আসছে, ভোক্তাদের আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।
সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পেঁয়াজের বাজার পরিস্থিতি নিয়ে আমদানিকারক, পাইকারি ও খুচড়া ব্যবসায়ী এবং অংশীজনদের সঙ্গে এক বৈঠকে বাণিজ্য সচিব এই আশ্বাস দেন বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
সচিব বৈঠকে বলেন, চাহিদা পূরণে প্রধান আমদানি বাজার ভারতের পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে ইতোমধ্যে পেঁয়াজ কেনা শুরু হয়েছে। মিশর ও তুরস্ক থেকেও পেঁয়াজ আমদানির এলসি খোলা হয়েছে।
ভারত পেঁয়াজের ন্যূনতম আমদানি মূল্য প্রায় তিনগুণ বাড়িয়ে নির্ধারন করায় বাংলাদেশে গত ১০ দিন ধরে পেঁয়াজের দাম ঊর্ধমুখী। বর্তমানে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকায়।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দফায় দফায় বৈঠক করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়া টিসিবি খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেছে।
বাণিজ্য সচিব বলেন, “সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে পেঁয়াজের আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের নৈতিকতার সাথে ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে। পেঁয়াজ আমদানি ও বাজারজাত সহজ ও দ্রুত করতে সরকার ইতোমধ্যে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং তদারকি জোরদার করেছে।”
ভারতের পাশাপাশি অন্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির তথ্য তুলে ধরে বাণিজ্য সচিব বলেন, “মিয়ানমার থেকে প্রতিদিন উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে, প্রতিদিন আমদানির পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে।”
অভ্যন্তরীণ বাজরে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহও বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “মিশর ও তুরষ্ক থেকে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানির এলসি খোলা হয়েছে, কয়েক দিনের মধ্যে এগুলো এসে পৌঁছাবে। তাছাড়া ভারত থেকে নতুন পেঁয়াজ শিগগিরই বাজারে আসছে।”
বিভিন্ন হাট-বাজারের পেঁয়াজ দ্রুত দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছানোর জন্য সরকার সর ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে দাবি করে সচিব বলেন, “দেশে পেঁয়াজের মজুদ ও সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। কোনো বাজারেই পেঁয়াজের ঘাটতি নেই। ভোক্তাদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। মূল্য দ্রুত কমে আসছে।”
বাণিজ্য সচিব উপস্থিত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আমদানি, মজুত ও মূল্য পরিস্থিতি জানতে চাইলে তারা বলেন, পেঁয়াজের দাম যা বেড়েছে তা ‘খুবই সাময়িক’। স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে, আমদানিও বাড়ছে। সরকারের সহযোগিতা অব্যাহত থাকায় পেঁয়াজের বাজার ‘দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে আসছে’।
অন্যদের মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব (আইআইটি) মো. শাখাওয়াত হোসেন, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা, ট্যারিফ কমিশনের সদস্য আবু রায়হান আল-বেরুনী এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
ব্যবসায়ীদের মধ্যে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ পাইকারী বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. ইদ্রিস, মো. জাহাঙ্গীর আলম ও মো. মিজানুর রহমান; ঢাকার শ্যামবাজারের পেঁয়াজ আমদানিকারক হাজী মো. মাজেদ, মো. হাবিবুর রহমান, মো. হাফিজুর রহমান, নারায়ণ চন্দ্র রায়, উত্তম কুমার সাহা, মো. আব্দুল মান্নান এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন সভায়।