মুক্তমত ডেস্ক: যে নেতা কোনদিন পর্যন্ত জানতে দেন নি। আজ তার মেয়ে শাহনাজ প্রধান জানালো তার অব্যাক্ত কথা। বাংলাদেশ তাঁতীলীগ এর সংগ্রামী সভাপতি আমাদের শ্রদ্ধেয় বড় ভাই আলহাজ্ব ইঞ্জিনিয়ার শওকত আলির সুযোগ্য কন্যা শাহনাজ প্রধান তার বাবার কিছু অব্যক্ত কথা আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। বাংলাদেশ তাঁতীলীগের গর্বিত কর্মী হিসেবে প্রিয় দেশবাসীর কাছে শাহনাজ প্রধান এর লিখাটি তুলে ধরলাম।
শাহনাজ প্রধানের ভাষ্যমতে: ইঞ্জিনিয়ার শওকত অালী সাহেবকে অাপনারা খুব ভালবাসেন তা বুঝি, তবে অাপনারা জনাব ইঞ্জিনিয়ার সাহেব সম্পর্কে মনে হয় ভাল ভাবে জ্ঞাত নন। উনি মাত্র ৩২/৩৩ বছর বয়সে নরসিংদী জেলার মুকুট মাধবদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং টানা তিন বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বাবুর হাট হল বাংলাদেশের ১ নং বিখ্যাত হাট। মাধবদী এবং শেখেরচর মিলেই বাবুর হাট তৈরী হয়। মাধবদীকে প্রাশ্চ্যের ম্যানচেষ্টার বলা হয়।
ইঞ্জিনিয়ার সাহেবের হাত ধরেই মাধবদী পৌরসভা হয়, মানে উনি মাধবদীর পৌর পিতা এবং মাধবদীর প্রশাসক নিযুক্ত হন অর্থাৎ মাধবদীর ক্ষমতায় টানা ৪ বার থাকেন! ইঞ্জিনিয়ার সাহেব নরসিংদী জেলার ৭০ টি ইউনিয়নের সকল চেয়ারম্যানের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন, মানে উনি নরসিংদী জেলা চেয়ারম্যান এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। ইঞ্জিনিয়ার শওকত অালী পুরো বাংলাদেশ সমবায় শিল্প সমিতির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বাংলাদেশ কৃষকলীগের সেন্ট্রাল কমিটির মেম্বার ও অনেক অাগে ছিলেন। ইঞ্জিনিয়ার সাহেব নরসিংদী জেলা অাওয়ামীলীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং মানবাধীকার কাউন্সিলের নরসিংদী জেলার প্রেসিডেন্টও উনি।
সবচেয়ে বড় ব্যাপার হল উনি প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান এর সাক্ষ্মরিত বাংলাদেশ তাঁতীলীগের সম্মানিত সভাপতি ছিলেন। উনার কমিটি ভেঙ্গে ২০০৩ সালে বাংলাদেশ তাঁতীলীগকে সহযোগী সংগঠন করে অাহ্বায়ক কমিটি করা হয়। অার তখন ইঞ্জিনিয়ার সাহেব হন বাংলাদেশ তাঁতীলীগের ১ নং সদস্য। দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর পর সম্মেলনের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, দেশরত্ন শেখ হাসিনা ইঞ্জিনিয়ার শওকত অালী সাহেবকে পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত করেন। মানে দেশনেত্রী সাবেক সভাপতিকেই পুনরায় সভাপতির দায়িত্বে সম্মানিত করেন। অর্থাৎ উনার পর কেউ সভাপতি হননি, হয়েছেন অাহ্বায়ক। অাহ্বায়ক কমিটির পর উনিই পুনরায় সভাপতি হলেন। তাঁতীলীগের কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি ও অাহ্বায়ক কমিটির ১ নং মেম্বার হয়েও তাঁতীলীগ থেকে কিছুটা দূরে ছিলেন কারণ অভিমান, তাঁতীলীগ হল ইঞ্জিনিয়ার সাহেবের ভালবাসা, অার তাই তাঁতীলীগ থেকে অাঘাত উনি সহ্য করতে পারেননি। তারপর এবার জাতীয় সম্মেলনের বছর খানেক অাগে থেকে অামি উনার ব্রেইনে দিতে থাকি। প্রথম প্রথম তো অামাকে অনেক বকা দিত।বলত, উনি অনেক ব্যাথা পেয়েছেন ২০০২ এবং ২০০৩ সালের শুরুর দিকে তো এটা সহযোগী সংগঠন ছিল না। কিন্তু অাব্বা তখন এ তাঁতীলীগকে সংগঠিত করতে নিজের পকেটের টাকা দুহাতে উড়িয়েছেন!
অবশেষে অামার বিরক্তে উনি পুনরায় তাঁতীলীগে এ্যাক্টিভ হলেন। অাপনারা জেনে অত্যন্ত খুশী হবেন যে, ইঞ্জিনিয়ার সাহেবের বাবা হাজ্বী অাস্ররব অালী প্রধান ছিলেন একজন অবস্হা সম্পন্ন তাঁতী এবং গ্রামের মোড়ল। ইঞ্জিনিয়ার সাহেব ছোট বেলায় পড়া ফাঁকি দিলে শাস্তি হিসেবে ইঞ্জিনিয়ার সাহেবের বাবা ইঞ্জিনিয়ার সাহেবকে তাঁতে বসাতেন। উনি তখন এতই ছোট হয়ে তাঁতে বসেছেন যে,উনি উপরে হাত দিয়ে নাগাল পেতেন না, তাই বসার নীচে বালিশ দিয়ে বসতেন! মানে উনি হলেন তাঁতীর ঘরের তাঁতী, ইঞ্জিনিয়ার সাহেবের ও কাপড়ের ইন্ডাস্ট্রিজ ছিল এবং অলওয়েজ উনারা কাপড় ব্যবসার সাথে জড়িত। বংশ পরমপরায় উনারা প্রধান বংশ, সাথে শেখ। যা কেউ লিখে না, ইঞ্জিনিয়ার সাহেবের বাবার নাম হাজ্বী মো: অাস্রব অালী প্রধান, উনার দাদার মো: ছাহাদ অালী প্রধান, বড় বাবার নাম শেখ ধঞ্জি প্রধান, শেখ ধঞ্জি প্রধানের বাবার নাম শেখ স্যারে মামুন, শেখ স্যারে মামুনের বাবার নাম সম্ভবত (শেখ স্যারে মাসুদ, এই নামটির ব্যাপারে অামি পুরা সিওর না)। উনারা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিচারক ছিলেন। সাত পুরুষ ধরে উনাদের বংশ মোড়ল। উনি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এ ৫ম স্ট্যান্ড করেছেন। অল্প সময়ের জন্য সরকারী চাকরীও করেছেন, ঘুষ এর অফার অাসে বলে চাকরী ছেড়ে দিয়েছিলেন, উনার জীবনে কোন দিন ইনশাল্লাহ একটাকা ও ঘুষ খান নি, উনি সেটা জন সভায় দাঁড়িয়ে অলওয়েজ বলেন এবং চ্যালেঞ্জ করেন। উনার হাতেই মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানার প্রথম গেইট তৈরী হয়।
অামি শাহনাজ প্রধান নাজ, লোকে ভালবেসে বলে প্রিন্সেস অব মাধবদী, তাঁতী কন্যা ও বলে কারণ অামি এক তাঁতীর নাতি, অারেক তাঁতীর কন্যা, ইঞ্জিনিয়ার সাহেবের প্রথমা কন্যা অামি। অামার একটি ছেলে অাছে, বেশ বড় হয়ে গেছে। অামি তিনটি দেশ থেকে মাস্টার্স করেছি, বাংলাদেশ থেকে মাস্টার্স করেছি পলিটিক্যাল সাইন্সের উপরে। ইংল্যান্ড থেকে মাস্টার্স করেছি ম্যানেজমেন্টের উপর।অার ওয়েলস এর রাজধানী কার্ডিফ এর কার্ডিফ মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি থেকে মার্কেটিং এ এম. বি. এ. করেছি। পড়াশোনা শেষ করে বাংলাদেশে এসেছি প্রায় তিন বছর অাগে। লেখালেখি করি, তবে খুব অনিয়মিত, অলস অামি। এত কথা এজন্য বললাম যে, উনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থেকে বাংলাদেশ তাঁতীলীগের সভাপতি হননি, এটা উনার খুব কম বয়সের একটা পদ! বাংলাদেশ তাঁতী লীগের সভাপতিই পুনরায় বাংলাদেশ তাঁতীলীগের সভাপতি হয়েছেন। উনি ছাত্র রাজনীতি করেছেন, উনার এলাকায় স্বাধীনতার পর থেকে উনিই মেইন নেতা। মাধবদী সহ এই অঞ্চলের সকল ইউনিয়নগুলির বলতে গেলে উনি একক নেতৃত্ব দিয়েছেন, উনার সমকক্ষ এ দক্ষিণাঞ্চলে কেউ ছিল না। উনি সকল সময় পুরো নরসিংদী জেলায় স্বনামধন্য এবং জনপ্রিয় ব্যক্তি এবং নরসিংদী জেলার অাশেপাশের জেলাগুলিতে ও উনার পরিচিতি ছিল বহু অাগে থেকেই। ইঞ্জিনিয়ার সাহেবকে বলা হয় অামাদের দক্ষিঞ্চলের সিংহ পুরুষ। জনপ্রিয়তার জরিপে উনি চার টার্মই এগিয়ে ছিলেন, কিন্তু অামার বাবার দুর্ভাগ্য উনি এমপি নমিনেশন পাননি।
ইঞ্জিনিয়ার সাহেব বলতে গেলে মাধবদী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের প্রতিষ্ঠাতা, যদিও এটা উনি বলতে চাননা, উনি মাধবদীর চার টার্ম ক্ষমতায় ছিলেন কিন্তু নিজের নামে একটি রাস্তার ও নাম করণ করেননি। অথচ অাজকের মাধবদীর যত উন্নয়ন তার সিংহ ভাগটাই অাব্বা করে গেছেন। অামাদের গ্রামের ঈদ গা অামার বাবার দেয়া জমির উপরই বেশীর ভাগটা।অসহায় ছেলে মেয়েদের জন্য কত কত বৃত্তি উনি দিছেন! কত কত মানুষকে যে উনি সাহায্যে করেই যান, কত কত মসজিদ, মাদ্রাসা স্কুল, কলেজের সাথে যে জড়িত তা বলতে গেলে অনেক লিখতে হবে! ইঞ্জিনিয়ার সাহেবের দানের হাত অতুলনীয় যা সকলে জানেন, নিজে কষ্ট করে মানুষকে দেন। কোন অসহায় মানুষ এলে যদি বলা হয় অাব্বা বাড়ি নেই, তবে অামরা শেষ! অাব্বা বলেন, এই অসহায় মানুষ অাব্বার মেহমান।
অামার জানা মতে অাব্বা প্রায় ৬০ টি পরিবার দেখা শোনা করছেন রেগুলার।সম্ভবত মাফ করো কথাটা কাউকে বলা উনি শিখেননি। অামি দেখিনি খালি হাতে কোন অসহায় মানুষ অাব্বার কাছ থেকে ফিরে গেছেন।ধন্যবাদ জানাই শাহানাজ প্রধান আপুকে আমাদের এই মহান নেতা সম্পর্কে জানানোর জন্য। বিস্বাস করেন এই লোকটার প্রতি ব্যাক্তি জলী হিসেবে আমার গভীর শ্রদ্ধা প্রথম থেকেই ছিল আজ তা আরও গাঢ় রং এ প্রকাশ পেল। ধন্য আপু এমন পিতার কন্যা হতে পেরে। আর আমরা ধন্য তার কর্মী হতে পেরে। জয় হোক সহজ সরল চেহারার এই মহান নেতার। আমরা এই ত্যাগী মহান মানুষ কে এইবার সংসদ সদস্য হিসেবে দেখতে চাই। জয় হোক বাংলাদেশ তাঁতীলীগের দীর্ঘজীবি হোক মানবতার নেতা শওকত আলী ভাই।
সৌজন্য : বাংলাদেশ তাঁতীলীগ