ডেস্ক নিউজ: মোবাইল ব্যাংকিংয়ের অপব্যবহার রোধে লেনদেন সীমা কমানোর পর এবার অ্যাকাউন্টে সর্বোচ্চ কত টাকা রাখা যাবে তার সীমা নির্ধারণ করে দিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
আগামী ১ জানুয়ারি থেকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ব্যক্তি মোবাইল হিসাবে সর্বোচ্চ ৩ লাখের বেশি টাকা রাখা যাবে না। এছাড়াও যেসব অ্যাকাউন্টে ৩ লাখে টাকার বেশি টাকা রয়েছে তা আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কমিয়ে আনতে হবে। এতদিন গ্রাহকরা মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে যে কোনো পরিমাণের অর্থ জমা রাখতে পারতেন।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের অপব্যবহার করে হুন্ডি পথে রেমিট্যান্স এনে সুবিধাভোগির কাছে পৌঁছে দেওয়া, জঙ্গি ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন, ঘুষ লেনদেনসহ নানা জালিয়াতি প্রতিরোধে এমন নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক সোমবার (৬ নভেম্বর) এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে মোবাইল ব্যাংকিং পরিচালনাকারী ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেসের অপ্যবহার রোধ এবং সুশৃঙ্খল ও যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে আগামী ১ জানুয়ারি হতে একজন গ্রাহকের গ্রাহক তার ব্যক্তি মোবাইল হিসাবে সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা রাখতে পারবেন। যে সকল ব্যক্তি মোবাইল হিসাবে ৩ লাখ টাকার অধিক স্থিতি রয়েছে, সে সকল হিসাবের স্থিতি আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে উপর্যুক্ত সীমার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে হিসাবধারীর হিসাবের সঙ্গে সংযুক্ত ব্যাংক হিসাবে অর্থ স্থানান্তরের মাধ্যমে তা করা যেতে পারে।
এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে জারি করা সার্কুলারে মাধ্যমে বলা হয়, একটি জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে একটি মোবাইল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে একটি মাত্র অ্যাকাউন্ট চালু রাখা যাবে। প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১৫ হাজার এবং মাসে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা জমা (ক্যাশ ইন) করা যাবে। এছাড়া প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা এবং মাসে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন (ক্যাশ আউট) করা যাবে। আগে প্রতিদিন ২৫ হাজার এবং মাসে দেড় লাখ টাকা ক্যাশইন ও ক্যাশ আউট করা যেতো।
ওই সার্কুলারে আরও বলা হয়েছে, দিনে সর্বোচ্চ ২ বার ক্যাশ ইন করা যাবে, আগে ক্যাশ ইন করা যেতো ৫ বার। তবে মাসিক ক্যাশ ইন সংখ্যা ২০ বার অপরিবর্তিত রাখা হয়। এছাড়া ক্যাশ আউটের সংখ্যা ৩ বার থেকে কমিয়ে দিনে ২ বার এবং মাসে ১০ বার অপরিবর্তিত রাখা হয়। এছাড়া টাকা ক্যাশইন করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৫ হাজার টাকার বেশি ক্যাশ আউট করা যাবে না। কোনো মোবাইল হিসাবে ৫ হাজার টাকার বেশি ক্যাশ ইন ও ক্যাশ আউট করতে হলে গ্রাহককে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখাতে হবে এবং এজেন্ট ওই পরিচয়পত্রের নম্বর রেজিস্টার খাতায় লিখে রাখবেন। ক্যাশ ইন ও ক্যাশ আউটের আলাদা রেজিস্ট্রার খাতায় গ্রাহকের স্বাক্ষর বা টিপসই রাখতে হবে। এই নির্দেশগুলো পরিপালন না করলেও এজেন্টশিপ বাতিল করতে হবে। এজন্য এজেন্টদের প্রতি নজরদারি বাড়াতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সেপ্টেম্বরভিত্তিক তথ্য অনুযায়ী, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নিবন্ধিত গ্রাহক রয়েছে ৫ কোটি ৭৭ লাখ। দেশের ৭ লাখ ৭৩ হাজার এজেন্টের মাধ্যমে এসব হিসাবধারীরা লেনদেন করছেন। গত সেপ্টেম্বরে মোট ২১ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। ঈদের মাস হওয়া আগস্টে অবশ্য লেনদেন হয়েছিল ৩২ হাজার ১৮৩ কোটি টাকা।