বিনোদন ডেস্ক : কনকচাঁপা শুধুই একজন কন্ঠশিল্পী এমনটি নয়। তিনি আপাদমস্তক একজন ভালো মনের মানুষ, একজন আদর্শবান মানুষ। বহু গুণেই গুণান্বিত তিনি।
গানের বাইরে তার রয়েছে নিজস্ব চিন্তার এক জগত। মানুষের কল্যাণেই তিনি সেই জগতে নিজে বিচরণ করেন। শুধু শিল্পী হয়েই তিনি আছেন, এমন নয়। এর বাইরেও তিনি সমাজের মানুষের জন্য কাজ করেন নীরবে নিভৃতে। সেসব তিনি নিজে থেকেই প্রচারণায় আনেন না কখনো। তাই যারা তার খুউব কাছের মানুষ, তারাই জানেন সমাজের মানুষের প্রতি তার এই অবদানের কথা।
বই লিখে মানুষের মনে আনন্দ দেয়াও এক অন্যরকমের ভালোলাগা কনকচাঁপার। তাই এবারের অমর একুশে গ্রন্থ মেলায় প্রকাশিত হলো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নন্দিত কন্ঠশিল্পী কনকচাঁপার স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ ‘কাটাঘুড়ি’। ‘অন্তর্যাত্রা’, ‘ওই বয়সে নতুন অনুভুতির ছোট্ট একটা ভ্রমণ হয়ে গেলো’, ‘হারানো বোন বন্ধু নাসিমাকে’,‘আমার জীবন আর আমার হাতে রইলোনা’, ‘আমার সব্যসাচী বাবা’, ‘বাবার দূরদর্শী চশমা’, ‘এইসব আপেক্ষিকতার টানা এবং পোড়েন এর খেলায়’, ‘আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন’, ‘মা আমার পূবের আলো পশ্চিমা গোধূলি’, ‘একটি আত্মকথন’, ‘এই দেখিলাম সোনার ছবি আবার দেখি নাই’, ‘মানসবসেবা’, ‘দ্বিধার দোলাচলে বেড়ে ওঠা’, ‘রাঙামাটির রং-এ বদলে যাওয়া ভাবনা’, ‘কুমির তোর জলে নেমেছি’, ‘বড়রাও ভুল করে’, ‘একটি ভাবনার আকাশ ও একটি সূর্য’, ‘মায়ের তৃতীয় নয়ন’, ‘পেয়ে হারানো পরশ পাথর’, ‘প্রতিধ্বনি শুনি আমি প্রতিধ্বনি শুনি’, ‘অদ্ভূত সেই আটার জাউ ও আমি’, ‘মানিপ্ল্যান্ট’, ‘আমি ও হিংসুটে ডাইনী’, ‘বৃক্ষপ্রেমিক আমি এবং আমার সুন্দরী অরবড়ই’, ‘অংকুর প্রেম’, ‘আমার সোনার মাদারটেক আমি তোমায় ভালোবাসি’, ‘বন্ধু তুমি এভাবেই পাশে থেকো’, ‘গুছানো ও গুটানো জীবন’, ‘হাতের লেখায় মননশীলতা’, ‘নিজকে চেনা বড়ই কঠিন’, ‘কয়েকটি ডায়েরি ও জীবনলেখা’, ‘অতল জলের আহবান’, ‘ছোটবেলার গল্প : নানাবাড়ি’, ‘সংসার সুখের হয় রমনীর গুণেসহ আরো কয়েকটি শিরোনামে কনকচাঁপা তার এবারের বইটিতে জীবনের ফেলে আসার দিনের স্মৃতিচারণ করেছেন।
‘অনন্যা প্রকাশনী’ থেকে প্রকাশিত এই বইটির মোড়ক উন্মোচন হয় প্রকাশনা সংস্থার ভেতরেই শুক্রবার বিকেলে। একুশে গ্রন্থমেলায় আগত আগ্রহী পাঠকদের উপচেপড়া ভীড় তখন প্রকাশনা সংস্থার সামনে। সবাই এক নজর কনকচাঁপাকে দেখার এবং কথা বলার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেন। সেই মুহুর্তেই প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন, বরেণ্য সঙ্গীত পরিচালক মইনুল ইসলাম খান এবং কনকচাঁপা ‘কাটাঘুড়ি’ বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন।
কনকচাঁপা বলেন, আমি বার বার মহান আল্লাহর প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি এ কারণেই যে, আল্লাহ কিছু কিছু মানুষকে বিশেষত্ব দিয়ে দেন, সেই বিশেষত্বের কারণে মানুষ তাকে অনেক শ্রদ্ধা করে ভালোবাসে। এটা আমি এখন উপলদ্ধি করি। বইমেলা পবিত্রতম একটি স্থান। এই পবিত্রতম স্থানে দাঁড়িয়ে মানুষের ভালোবাসা কাছে থেকে অনুভব করেছি, এটা সত্যিই ভাষায় প্রকাশের নয়। আমি যাদেরকে মোড়ক উন্মোচনে আসতে বলেছিলাম, তারাও এসেছেন। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আর আমার জন্য দীর্ঘ সময় একই স্থানে কষ্ট করে দাঁড়িয়ে থেকে আমার স্বামী মইনুল ইসলাম খান আমাকে যে উৎসাহ দিয়েছেন, তাতে তার সঙ্গে জীবনের খেলায় আবারো হেরে গেলাম আমি।
একজন লেখক হিসেবে কনকচাঁপার আত্মপ্রকাশ ঘটে ২০১০ সালে অনন্যা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত ‘স্থবির যাযাবর’ বইটি প্রকাশের মধ্যদিয়ে। এরপর ‘মুখোমুখি যোদ্ধা’ ও ‘মেঘের ডানায় চড়ে’ বই দুটি প্রকাশিত হয়।