মাত্র এগারো দিন আগে ধূমধাম করে বিয়ে হয়েছিল মেয়েটির। এক সপ্তাহ শ্বশুরবাড়ি থাকার পর গত শুক্রবার বাবার বাড়ি আসেন। পরদিনই তার স্বামী তাকে তালাক দিয়ে মাকে বিয়ে করেন।
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার কড়িয়াটা গ্রামে শনিবার এ ঘটনার পর ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তাদের পিটুনি দিয়েছে।
মেয়ের পরিবার ও এলাকাবাসীর সম্মতিতে বিয়ে হলেও ক্ষুব্ধ একদল গ্রামবাসী ওই দুইজনকে পিটুনি দিয়েছে।
হাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য করিআটা গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম জানান, ধনবাড়ী উপজেলার হাজরাবাড়ী পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত ওয়াহেদ আলীর ছেলে মোনছের আলী (৩২) গত ২ অক্টোবর গোপালপুর উপজেলার কড়িয়াটা গ্রামের এক তরুণীকে (১৯) বিয়ে করেন। বিয়ের পরদিন মোনছেরের শ্বাশুড়ি (৪০) মেয়ের বাড়ি বেড়াতে যান এবং সেখানে মেয়ের সঙ্গে এক সপ্তাহ অবস্থান করেন। এরপর গত শুক্রবার মেয়ে ও মেয়েজামাইসহ বাড়ি ফেরেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, শনিবার সকালে মোনছেরের স্ত্রী বরের সঙ্গে সংসার করবেন না বলে পরিবারের সদস্যদের জানালে পারিবারিক কলহ শুরু হয়।
“তখন শাশুড়ি বলেন, মেয়ে সংসার না করলে তিনি নতুন জামাতার সংসার করবেন।”
নজরুল বলেন, এ অবস্থায় মোনছেরের শ্বশুর গ্রামের সালিশ ডাকেন। হাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের তালুকদার, তিনি নিজেসহ (নজরুল ইসলাম) এলাকার গণ্যমান্যরা সালিশি বৈঠকে বসেন।
“বৈঠকে মোনছের আলী ও তার শাশুড়িকে মারধর করা হয়। এরপর পরিবারের সবার সম্মতিতে মোনছেরের শ্বশুর প্রথমে স্ত্রীকে তালাক দেন। এরপর মোনছের আলী তার নবপরিণীতা স্ত্রীকে তালাক দেন। এরপর একই অনুষ্ঠানে সবার উপস্থিতিতে মোনছের আলীর সঙ্গে তার শাশুড়ির এক লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে হয়।”
হাদিরা ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী জিনাত এ বিয়ের কাজে যুক্ত ছিলেন।
তিনি বলেন, “ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার, গ্রাম্য মাতব্বর এবং ওই পরিবারের সকল সদস্যের সম্মতিতে দুটি তালাক এবং একটি বিবাহের কাজ একই অনুষ্ঠানে সম্পাদন করা হয়।”
ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, পুরো কাজটি হয়েছে ওই পরিবারের সম্মতিতে। তবে এর আগে গ্রামবাসীদের উপস্থিতিতে মোনছের ও তার শাশুড়িকে (পরে স্ত্রী) মারধর করা হয়।
ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের তালুকদার বলেন, এই বিয়ের খবরে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী বাড়ি ঘেরাও করে তাদের দুজনকে মারপিট শুরু করে। খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। পরিবারের সকলের সম্মতির বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে বিয়েতে সম্মতি দেন।
সূত্র, বিডিনিউজ২৪