বিশ্বের সবচেয়ে ধনাঢ্য ব্যক্তিদের একজন সৌদি প্রিন্স আলওয়ালিদ বিন তালাল আটকের দুই মাস পর মুক্তি পেয়েছেন। তিনিই সম্ভবত এ পর্যন্ত মুক্তি পাওয়া সবচেয়ে প্রভাবশালী বন্দী। অর্থ প্রদানের বিষয়ে আপোষ-রফায় রাষ্ট্রীয় কৌসুলি অনুমোদন দেয়ার পর তাকে মুক্তি দেয়া হয় বলে দেশটির কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তবে অর্থের প্রকৃত অঙ্ক কত সেটি প্রকাশ করা হয়নি।
সৌদি আরবে ক্রাউন প্রিন্স যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে গত নভেম্বর মাসে তাকে আটকের পর থেকে রিয়াদের রাজকীয় রিজ-কার্লটন হোটেলে ছিলেন । তিনি ছাড়াও ২০০-র বেশি প্রিন্স, রাজনীতিবিদ এবং ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের ধরপাকড় চলে যাদের বিলাসবহুল ওই হোটেলটিতে রাখা হয়েছে।
রিয়াদের রাজকীয় বিলাসবহুল রিজ-কার্লটন হোটেলটির ব্রান্ড এমন যে, সেটি মূলত তাদের জন্য যারা রাজকীয় আরাম-আয়েশ প্রত্যাশা করেন। কিন্তু বর্তমানে সেটি যেন পরিণত হয়েছে সৌদি যুবরাজের দ্বারা পরিচালিত বিলাসবহুল ‘ফাইভ স্টার কারাগারে’।
প্রিন্স আলওয়ালিদ এ বিলাসবহুল হোটেলে বন্দি ছিলেন । সেখানে সৌদি আরবের সম্ভ্রান্ত ও প্রভাবশালী মহলের আরও প্রায় ২০০ সদস্য রয়েছেন বলে ধারণা করা হয়।
এই হোটেলটি গত কয়েক মাস ধরেই রিয়াদে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে। ১১ জন প্রিন্স এবং বহু কোটিপতি সৌদি ব্যবসায়ী, রাজনৈতিকের আটকের পর এই হোটেলটির ভেতরে আসলে কি ঘটছে সেটি নিয়ে জনমনে কৌতূহলের শেষ নেই। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কেউ এর ভেতরে ঢুকতে বা বাইরে যেতে পারেনা।
গত নভেম্বরের বিবিসির একটি দল পুলিশের এসকর্টের মাধ্যমে এই হোটেলের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে।
সেখানে প্রথাগত সাদা পোশাক এবং মাথায় লাল-সাদা চেকের স্কার্ফ পরা পুরুষদের চোখে পড়ে।
লবির অন্ধকার কোনে বসে তাদের কথাবার্তা চলে চাপা স্বরে। এমনকি কেউ চোখ তুলেও তাকায় না। ক্ষণে ক্ষণে অদ্ভুত নীরবতা ভেঙে দেয় আচমকা চামচের টুংটাং শব্দ এবং চিনামাটির পেয়ালা বা গ্লাসের শব্দ ।
এই হোটেলে এ সমস্ত লোকজনকে কেন আনা হয়? এর উত্তরে দুর্নীতি-বিরোধী অভিযানের একজন কর্মকর্তা জানান, “আমরা ভয় পাচ্ছিলাম যে তারা হয়তো পালিয়ে যেতে পারে। তাই তাদের আমরা এর ভেতরে রেখেছি”।
আর এই যুক্তিতেই কর্মকর্তাদের ভাষায় সেখানে এই “বিশেষ অতিথি”দের রাখা হয়েছে। যারা কখনোই এমন ট্রিট কল্পনাও করতে পারেননি।