দক্ষিণ ছাতকের প্রবাসি অধ্যুষিত ধনাঢ্য এলাকা দোলারবাজার ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ফেসবুকে অস্ত্রের মহড়া চলছে বেশ জোরেশোরেই। একশ্রেনীর অস্ত্রবাজরা নিজেদের সংগ্রহে রাখা অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্রে গুলি ভর্তি করা, অস্ত্র প্রদর্শন ও গুলি ছোঁড়ার দৃশ্যসহ অস্ত্র হাতে নিয়ে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গির দৃশ্য ধরণ করে নিজ ফেসবুক আইডিতে পোষ্ট করে যাচ্ছে। অনেকে গ্রাম্য বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষকে ভয়ভীতি প্রদর্শনের জন্যে ফেসবুকে তাদের গালাগালসহ অস্ত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। সরকার ফেসবুক, মোবাইল নাম্বারসহ বিভিন্ন ব্যক্তিগত তথ্যগুলো আইনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করলেও এক্ষেত্রে চরম উদাসিনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ফলে দিন দিন এলাকায় অস্ত্র প্রদর্শনীসহ গুলিবিদ্ধ হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করছেন বিপুল সংখ্যক নিরীহ লোক। এব্যাপারে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করছেন এলাকাবাসী। অভিযোগে জানা যায়, দোলারবাজার ইউনিয়নের পালপুর, জটি, মঈনপুর, বসন্তপুর, নরসিংপুর, লক্ষীপাশা, বুরাইয়া, জাহিদপুরসহ অন্যান্য গ্রামে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্য অস্ত্র প্রদর্শনের ঘটনা নতুন কোন বিষয় নয়। গ্রাম্য বিরুধের জের ধরে প্রতিনিয়তই বের করা হয় আগ্নেয়াস্ত্র। ১৯নভেম্বর পালপুর জামে মসজিদে মাগরিবের নামাজ চলাকালে একই গ্রামের টিএম আহসান মাহবুব, শাহ আলম, হোসেন ও লন্ডনী ফখরের বন্দুকের গুলিতে মিলন, সেবুল, শাহজাহান, এমাদসহ ৫জন গুলিবিদ্ধ হন। এব্যাপারে আবুল হোসেন বাদি হয়ে ছাতক থানায় মামলা (নং ১৯, তাং ২০.১১.২০১৬ইং) দায়ের করা হয়। এরআগে জটি, পালপুর, কল্যাণপুর, বারগোপি, মঈনপুর, বসন্তপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের অনেক লোক গুলিবিদ্ধ হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। ১০ডিসেম্বর মঈনপুর গ্রামের আফরোজ আলীর পুত্র মফিকুল বারি অস্ত্র হাতে নিয়ে গুলি ভর্তি করার দৃশ্য ধারণ করে নিজের ফেসবুক আইডিতে পোষ্ট করেন। তাৎক্ষনিক আইডিতে কমেন্টের ঝড় উঠে। একইভাবে পালপুর গ্রামের সুনু মিয়ার পুত্র রায়হান ৫ডিসেম্বরসহ বিভিন্ন সময়ে নিজস্ব আইডিতে আগ্নেয়াস্ত্রের ছবি পোষ্ট করে আসছে। একইভাবে তার চাচা কাপ্তান মিয়ার পুত্র শাহ আলমের আইডিতে একাধিক অত্যাধূনিক অস্ত্রের ছবি পোষ্ট করলে ভাতিজা রায়হান সব সময় গুলি লোড রাখার জন্যে এটিতে মন্তব্য করে। একটি গ্রাম্য বিরোধের জের ধরে তাদের প্রতিপক্ষকে এসব অস্ত্র প্রদর্শন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এগুলো উদ্ধারসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্যে প্রশাসনের শীর্ষ মহলের কাছে দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এব্যাপারে ডিবির এসআই ও পালপুরের অস্ত্র প্রদর্শনী মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই দ্বীবাংশু জানান, আসামি শাহআলমকে রিমান্ডে এনেও তার কাছে মজুদকৃত অস্ত্রের সঠিক তথ্য প্রমাণ না পাওয়ায় কোন পদক্ষেপ নেয়া যায়নি। এলাকায় গোয়েন্দার মাধ্যমে জড়িতদের গ্রেফতার ও তাদের ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের তৎপরতা চালানো হচ্ছে। ছাতক থানার অফিসার্স ইনচার্জ আশেক সুজা মামুন জানান, ফেসবুকে অস্ত্রের ছবি দেয়ার বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।