ডেস্ক রিপোর্টঃ ক’দিন আগেই হুমকি দিয়েছিলেন জন কেরি। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই হুমকি মতোই সিরিয়া সংকট সমাধানে রাশিয়ার সঙ্গে চলমান সব আলোচনা-প্রচেষ্টা স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা বলেছে, আলেপ্পোয় রুশ বিমান হামলা বন্ধ না হওয়ায় ওয়াশিংটন এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে।
সোমবার (৩ অক্টোবর) মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর থেকে এক বিবৃতিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। বিবৃতি দেন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র জন কিরবি। এ নিয়ে কথা বলেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জশ আর্নেস্টও।
কিরবি তার বিবৃতিতে বলেন, বেসামরিক এলাকা ও স্থাপনায় এবং মানবিক ত্রাণবাহী বাহনে হামলা চালাবে না বলে দেওয়া নিজেদের অঙ্গীকার দুর্ভাগ্যবশত ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে রাশিয়া। একইসঙ্গে এসব এলাকায় হামলা হবে না বলে সিরিয়ার সরকারকে অনুগত রাখার ব্যবস্থা নিতেও তারা আন্তরিক নয় বা অসমর্থ হয়েছে। সেজন্য সিরিয়ায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে সন্ত্রাসবিরোধী হামলা সংক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের যে সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা চলে আসছিল তা স্থগিত করতে বাধ্য হলো ওয়াশিংটন।
গত সপ্তাহেই রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্জেই লাভরভকে আলোচনা স্থগিতের সতর্কতা দিয়েছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেরি। ঈদুল আজহাকেন্দ্রিক যুদ্ধবিরতির পর রাশিয়া ও সিরিয়ার যুদ্ধবিমান বেসামরিক এলাকায় এবং ত্রাণবাহী বহরে বিমান হামলা চালাতে থাকায় আলেপ্পো ও এর আশপাশ কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে লাভরভকে দ্রুত হামলা বন্ধের আহ্বান জানান কেরি।
এ বিষয়ে জশ আর্নেস্ট সাংবাদিকদের বলেন, রাশিয়া নিয়ে সবার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। অনেক অঙ্গীকার করেও সেসব পালনের কোনো নির্দশন না দেখিয়ে তারা বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। তারা বেসামরিক লোকদের মেরে চলেছে।
স্থগিত প্লুটোনিয়াম চুক্তি
অবশ্য ওয়াশিংটনের এ ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্লুটোনিয়াম নিষ্ক্রিয়করণ চুক্তি স্থগিত করে দেন। যার ফলে স্নায়ুযুদ্ধ যুগের দুই বৈরী দেশের সম্পর্কে আরও অবনতির ইঙ্গিত মিললো।
২০০০ সালে এ চুক্তি স্বাক্ষর করে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। চুক্তিটির উদ্দেশ্য ছিল- নিজ নিজ প্রতিরক্ষা কাজে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির রাসায়নিক উপাদান প্লুটোনিয়াম নিষ্ক্রিয় করা। মাঝে সম্পর্কে উত্তেজনার পর ২০১০ সালে এটি বাস্তবায়নের বিষয়ে আবারও অঙ্গীকার করে দুই দেশ। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘অবন্ধুসুলভ কার্যক্রম’র অভিযোগ তুলে চুক্তিটি স্থগিত করে দিলেন পুতিন।
তবে তিনি রাশিয়ার কাছাকাছি ন্যাটো দেশগুলোকে সামরিক উপস্থিতি কমাতে এবং দেশটির ওপর আরোপিত সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন।