রাঙ্গুনিয়া উপজেলার অধিকাংশ কৃষক শীতের সবজি বিক্রি করে আর্থিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্ঠায় উঠে পড়ে লেগেছেন। এসব কৃষকরা সকাল হলেই পাইকারি ও খুচরা দামে বিক্রির উদ্দেশ্যে ট্রলি কিংবা ভটভটি ভ্যানে সবজি বোঝাই করে হাট-বাজারে নিয়ে যাচ্ছে নিজেদের উৎপাদিত শীতের সবজি। কেনাবেচা ভালো হওয়ায় তাদের চোখেমুখে আনন্দের হাসি চোখে পড়ার মতো। তাই এবার শীতের সবজিতে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন উপজেলার কৃষকেরা।
মাঠ পর্যায়ে উপজেলার পোমরা, বেতাগী, সরফভাটা, শিলক, কোদালা, পদুয়া, রাণীরহাট, স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া, লালানগর, পারুয়া, হোছনাবাদ ইউনিয়ন ও রাঙ্গুনিয়া পৌরসভায় ঘুরে দেখা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ব্যাপক সবজি চাষ করা হয়েছে। এসব এলাকার চাষিরা দিনরাত সবজির নিবির পরিচর্যা করছেন। কেউকেউ পোকামাকড় দমনে কীটনাশক দিচ্ছে, কেউ সেচ দিচ্ছে আবার কেউবা লোক লাগিয়ে সবজির পরিচর্যা করেছেন। তাদের ফসলি ক্ষেত লালশাক, পালংশাক, শিম, টমেটো, বেগুন, লাউ, শসা, চিচিঙ্গা, পটোল, ঢেড়স, কাঁচা মরিচ, মিষ্টিকুমড়া, বরবটি, বাধাকপি, ফুলকপি, ধনেপাতা, মুলা, করলা, ডাঁটা প্রভৃতি সবজিতে ভরে গেছে পুরো এলাকা।
পারুয়ার রাবারড্যাম এলাকার কৃষক শফিউল আলম (৭০), মিজানুর রহমান (২২) জানান, কযেক বছর ধরে শীতের সবজি আবাদ করে দুটো টাকার মুখ দেখছি। তবে তারা আধুনিক সবজি চাষে কৃষি অফিসের সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ করেন।
এদিকে উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি শিম ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৩৫ টাকা, ফুলকপি ৩৫ টাকা, কাঁচা মরিচ ৫০ টাকা, ধনেপাতা ১৫০ টাকা, সরিষাশাক ২০ টাকা,লাউ ৪০ টাকা, মুলাশাক ১০ টাকা, ও মুলা ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এখানকার পাইকারি বাজার থেকে কিনে খুচরা দোকানিরা কেজিতে ৫ থেকে সর্বোচ্চ ২০ টাকা লাভ করছেন। এ ছাড়া এখানকার পাইকারী বাজার থেকে পাইকাররা শীতের সবজি কিনে ট্রাকযোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন।
পৌরসভার মধ্যম নোয়াগাঁও এলাকার পাইকারি আড়তদার মো. নাছের বলেন, চাষিরা বিক্ষিপ্ত কয়েক জায়গায় সবজি বিক্রি করলেও অধিকাংশ সবজি তারা প্রথমে পাইকারি বাজারে নিয়ে আসেন। তারপর আড়তদাররাই চাষির সবজি কিনে অথবা বিক্রি করে দেন। বিনিময়ে আড়তদাররা পণ্য অনুযায়ী কমিশন ৫০ থেকে সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা কৃষকের গুনতে হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কারিমা আক্তার জানান, উপজেলায় ধান ব্যাতিত সবজি ও অন্যান্য ফসল চলতি রবি মৌসুমে প্রায় ৩৫০০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে শুধুমাত্র পৌর এলাকায় প্রায় ১৯০ হেক্টর জমিতে রবি শস্য অর্জিত হয়েছে। ভৌগলিক দিক থেকে সবজি চাষের জন্য এখানকার জমি বিশেষ উপযোগী। তাই এখানকার জমিতে কৃষকরা শস্য উৎপাদন করে তাদের আশানুরূপ লাভবান হতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।