জাকির সিকদারঃ বাংলাদেশে ২৫ হাজার কোটি টাকা যাকাত আদায় করে বন্টন করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন বক্তারা। শুক্রবার (২৭ মে) সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দুই দিনব্যাপী চতুর্থ যাকাত ফেয়ার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা জানান। সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্ট (সিজেডএম) মেলার আয়োজন করে।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ যাকাতযোগ্য সম্পদের পরিমাণ ১০ লাখ কোটি টাকা। এর আড়াই শতাংশ হারে যাকাতের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। প্রতিবছর বাংলাদেশে যে পরিমাণ মোট সম্পদ আছে তাতে বছরে ২৫ হাজার কোটি টাকা যাকাত আদায় করে বন্টন করা সম্ভব।
সঠিকভাবে যাকাত আদায় করলে ১৫ বছরে দেশে যাকাত নেওয়ার মতো কোনো মানুষ পাওয়া যাবে না বলে জানান বক্তারা। বক্তারা যাকাত আদায়ের কয়েকটি খাত উল্লেখ করে বলেন, প্রতি বছর ফসলি জমির মালিক এক হাজার কোটি, মায়েদের গচ্ছিত স্বর্ণ অলঙ্কারে একশ কোটি, ব্যাংকিং খাতে ১ হাজার ২৪০ কোটি, শিল্প কারখানা থেকে এক হাজার কোটি টাকা যাকাত আদায় করা সম্ভব।
এছাড়া সঞ্চয়পত্র ও বন্ড থেকে বছরে ৩ হাজার কোটি টাকা যাকাত আদায় করা সম্ভব। বর্তমানে দেশে এক লাখ ১৪ হাজার ২৬৫ জন কোটিপতি রয়েছেন। ফেয়ারের উদ্বোধন করেন সাবেক সেনাপ্রধান ও মন্ত্রী লে. জে (অব.) এম নুরুদ্দীন খান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, দারিদ্র্য দূরীকরণে এবং মানবিক উন্নয়নে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনার ভিত্তিতে যাকাত দেওয়া উচিত। গতানুগতিক রিলিফের মতো করে যাকাত দেওয়া উচিত নয়। সম্মানের সঙ্গে যাকাত দিতে হবে। সঠিকভাবে যাকাত দেওয়া হলে দেশে যাকাত নেওয়ার মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। যাকাত ফেয়ার আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক সালাহউদ্দিন কাসেম খান বলেন, যাকাত নিঃস্ব ও দরিদ্রের মধ্যে নিরাপত্তাসহ ধনি-দরিদ্রের বৈষম্য কমিয়ে আনে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং দারিদ্র্য বিমোচনে যাকাত কল্যাণ রাষ্ট্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট একে আজাদ বলেন, দেশে ১০০ জন লোক হাজার কোটি টাকার মালিক। অথচ সবাই সঠিকভাবে যাকাত দিলে গরিব লোক থাকবে না। যাকাত আদায় করতে হলে সঠিক নেতৃত্বের প্রয়োজন।
আগামীতে কোনো একটা দরিদ্র গ্রামকে বেছে নিয়ে দারিদ্র্য বিমোচনের কাজ করারও আশাবাদ ব্যক্ত করেন একে আজাদ।
সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান মেজর (অব.) ডা. মো. রেজাউল হক বলেন, বছরে ২৫ হাজার কোটি টাকা যাকাত আদায় করা সম্ভব। কিন্তু যাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে নানা ধরনের বাধা রয়েছে। সঠিকভাবে যাকাত আদায় বন্টন করা গেলে ১৫ বছরের মধ্যে দেশের সব যাকাত গ্রহীতা রূপান্তরিত হতেন যাকাত দাতায়।
যাকাত ফেয়ার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- ইসলামী ব্যাংক কনসালটেটিভ ফোরামের ভাইস চেয়ারম্যান একেএম নুরুল ফজল বুলবুল, সিজেডএমের চেয়ারম্যান নিয়াজ রহিম। যাকাত ফেয়ারে স্পন্সর হিসেবে রয়েছে ইসলামী ব্যাংক কনসালটেটিভ ফোরাম, ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, এক্সিম ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ইসলামী রিলিফ বাংলাদেশ।