জগলুল হুদা, রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা : চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে প্রচন্ড চাপে পড়েছে দুই দলই। বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় বিভাজন হয়ে পড়েছে দুই দলের সাধারন নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সম্পর্কে একে অপরের শশুড় জামাই হওয়ায় সাধারন ভোটারদের মাঝে এ নিয়ে বিশেষ আমেজ বিরাজ করছে। আওয়ামী লীগ থেকে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শশুড় শাহজাহান সিকদারকে মনোনয়ন দেয়া হলেও মনোনয়নে ব্যর্থ হয়ে স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের বনও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক জামাই কামরুল ইসলাম চৌধুরী। এর আগে বর্তমান মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কামরুল ইসলাম চৌধুরীর চাচা খলিলুর রহমান চৌধুরী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করলেও পরে ভাতিজা কামরুল ইসলাম চৌধুরীকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন না করার ঘোষনা দেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক(ভারপ্রাপ্ত) ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার দলীয় প্রার্থী শাহজাহান সিকদারের পক্ষে কাজ করায় উপজেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভাজন প্রকাশ্যে রূপ নিচ্ছে। অন্যদিকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে পৌর বিএনপি’র যুগ্ন আহবায়ক ও পৌর কাউন্সিলর হেলাল উদ্দিন শাহ। তিনি যুদ্ধপরাধে ফাঁসি কার্যকর হওয়া রাঙ্গুনিয়ার সাবেক এমপি সালাউদ্দিন কাদের(সাকা) চৌধুরী পরিবারের প্রার্থী বলে দলীয় একটি সূত্র জানিয়েছে। বিএনপি থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতস্ত্র থেকে নির্বাচন করছেন বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী ও সাবেক পৌর মেয়র নুরুল আমিন ও সাবেক পৌর কমিশনার বিএনপি নেতা মফিজুল ইসলাম। এছাড়া ইসলামী ফ্রন্ট থেকে পৌর ইসলামী ফ্রন্টের আহবায়ক আবদুর রহমান জামী, স্বতন্ত্র থেকে ইমাম হোসেন, মোজাম্মেল হক নির্বাচন করছেন। ৩ ডিসেম্বর মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময পর্যন্ত ৮ জন মেয়র, ১২ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ও ৪০ জন কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেয়। ৫ ডিসেম্বর যাচাই বাচাই শেষে ৮ মেয়র প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ হওয়ার পর ৬ ডিসেম্বর বিকাল ৩টা পর্যন্ত কোন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়নি বলে জানা যায়।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহজাহান সিকদার জানান, রাঙ্গুনিয়াবাসীকে আধুনিকায়ন করতে পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। নির্বাচিত হলে পৌরসভার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করব এবং রাঙ্গুনিয়ার সাংসদ ড. হাছান মাহমুদ এমপি’র চলমান উন্নয়নের অগ্রযাত্রার সাথে সাথে পৌরবাসীকে পরিপূর্ন নাগরিক সুবিধা দেয়ার জন্য কাজ করে যাব।
বিএনপি’র প্রার্থী হেলাল উদ্দিন শাহ জানান, পৌরসভার আমূল পরিবর্তন আনতে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। বিএনপি গনতন্ত্রে বিশ্বাসী। গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হলে,কোন কারচুপি না হলে আমার জয় সুনিশ্চিত।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী কামরুল ইসলাম চৌধুরী জানান, এলাকাবাসীর প্রেরনায় প্রার্থী হয়েছি। তবে যেহেতেু আমি দল করি দল যদি আমাকে নির্বাচন করতে বলে তাহলে আমি নির্বাচনে জনগনের ম্যান্ডেট নিয়ে অবশ্যই জয়ী হব।
বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী নুরুল আমিন তালুকদার বলেন, নির্বাচন অবশ্যই করব। তবে দলের নীতি নির্ধারকদের সাথে এখনো আলোচনা চলছে। দলের বাইরে তো যেতে পারিনা।
ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী আবদুর রহমান জামী বলেন, দলীয়ভাবে মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। আমি নির্বাচিত হলে নাগরিক সুবিধাবঞ্চিত পৌরবাসীকে নাগরিক সুবিধা দেব ও পৌরসভাকে ডিজিটাল পৌরসভায় রুপান্তরিত করব ইন্শাহআল্লাহ। তবে সব জটিলতা ও জল্পনা কল্পনার অবসান হবে আগামী ১৩ ডিসেম্বর ।