
নিকারাগুয়া, হন্ডুরাস এবং এল সালভাদরের দূতাবাসগুলো সম্প্রতি কুয়েতে তাদের ২০৪তম স্বাধীনতা বার্ষিকী যৌথভাবে উদ্যাপন করেছে। এই বিশেষ আয়োজনটি মধ্য আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে গভীর সংহতি এবং কুয়েতের সঙ্গে তাদের শক্তিশালী কূটনৈতিক সম্পর্কের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

গত রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) মারিনা হোটেলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি শুরু হয় কুয়েতের জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে, যা আয়োজকদের পক্ষ থেকে কুয়েতের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে। এরপর তিন দেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়।
অনুষ্ঠানে নিকারাগুয়ার রাষ্ট্রদূত এইচ.ই. মোহাম্মদ ফারারা ল্যাচটার কুয়েতের নেতৃত্ব এবং তাদের বিচক্ষণ কূটনীতির ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, কুয়েত বিশ্বজুড়ে মানবিকতা, সহাবস্থান এবং শান্তির প্রতীক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। তিনি আরও বলেন, মধ্য আমেরিকার দেশগুলোর স্বাধীনতা কেবল একটি ঐতিহাসিক ঘটনা নয়, বরং জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও স্বাধীনতার এক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিফলন।
অন্যদিকে, হন্ডুরাসের রাষ্ট্রদূত এইচ.ই. ফ্রান্সিসকো হোসে হেরেরা আলভারাদো কুয়েতের সঙ্গে তাদের দীর্ঘমেয়াদি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন। তিনি জানান, ১৯৭২ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হলেও ১৯৬০ সালেই হন্ডুরাস কুয়েতের সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। ১৯৯০-৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধের কঠিন সময়ে কুয়েতের পাশে থাকার কথাও তিনি স্মরণ করেন।

এল সালভাদরের রাষ্ট্রদূত এইচ.ই. হুয়ান কার্লোস স্টাবেন বোইলাট কুয়েতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠায় কুয়েত একটি মূল্যবান আন্তর্জাতিক অংশীদার। তিনি ১৮২১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর এল সালভাদরের স্বাধীনতার যাত্রাকে একটি মুক্ত ও সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠনের সাহসী পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেন।

এই অনুষ্ঠানে কুয়েতের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী (আমেরিকান অ্যাফেয়ার্স) নাওয়াফ আল-আহমাদ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি শেখ আবদুল্লাহ আল-মেশাল, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেন যোগ দেন।

এছাড়াও গাল্ফ বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান সমন্বয়ক, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. আকবর হোসেনও যোগ দেন।
অনুষ্ঠানস্থলে তিন দেশের ঐতিহ্যবাহী পণ্যের একটি বিশেষ প্রদর্শনীও অনুষ্ঠিত হয়, যা তাদের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে তুলে ধরে। এই যৌথ উদ্যাপন শুধু স্বাধীনতা দিবসের একটি আনুষ্ঠানিকতা ছিল না, বরং কুয়েত ও মধ্য আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে বন্ধুত্ব এবং পারস্পরিক সম্পর্কের গভীরতাকে আরও সুসংহত করেছে।