বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে একটি ৪৫ ফুট লম্বা তিমি ভেসে আসার একদিন পর বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী আজ সেটিকে সৈকতেই মাটি চাপা দেয়া হয়েছে।
স্খানীয় প্রশাসন বলছে, এক বছর পর তিমিটির কংকালটি মাটি থেকে তুলে পর্যটকদের জন্য প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা যাবে বলে তারা আশা করছেন।
শনিবার ভোররাতের দিকে কুয়াকাটা সৈকতের ঝাউবন এলাকায় ভেসে আসা তিমিটি প্রথম দেখতে পান একদল পর্যটক। এর পর খবর ছড়িয়ে পড়লে এটি দেখার জন্য স্থানীয় লোকজনের ভিড় জমে যায়।
ধারণা করা হচ্ছে, অন্তত ১৫ দিন আগে গভীর সমুদ্রে তিমিটি মারা গেছে।
কলাপাড়ার স্থানীয় ফিশারিজ কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, হয়তো সাগরে কোন জাহাজের সাথে ধাক্কা লেগে তিমিটি মারা গিয়ে থাকতে পারে।
তিনি আরো বলেন, এত বড় তিমিটিকে কোথাও নিয়ে যাওয়া কষ্টসাধ্য ছিল। কিন্তু মাটি চাপা অবস্থায় থাকলে এক বছর পর সহজেই তিমিটির কংকালটি অবিকৃত অবস্থায় সংগ্রহ করা যাবে এবং তখন এটিকে প্রদর্শনের ব্যবস্থাও করা যেতে পারবে।
সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়াইল্ডলাইফ কনজার্ভেশন সোসাইটির একজন সমন্বয়কারী ফারহানা আখতার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, এটি একটি ব্রাইডস তিমি, যাদের দাঁত থাকে না তার বদলে মুখের ভেতর ছাঁকনির মতো একটা অংশ থাকে যাকে বেলীন বলা হয়।
এ ধরণের তিমি ছোট মাছ ও চিংড়িজাতীয় প্রাণী খেয়ে বেঁচে থাকে। ব্রাইডস তিমি ৪০ থেকে ৫০ ফুটের মত লম্বা হয়ে থাকে, ওজন হতে পারে ২৫ টন পর্যন্ত।
দক্ষিণ আফ্রিকা, ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ, মেক্সিকো, ও ক্যালিফোর্নিয়া এলাকার সাগরে এই ব্রাইডস তিমি দেখা যায়।
ফারহানা আখতার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বাংলাদেশের জলসীমাতেও কখনো কখনো এই তিমিকে দেখা যায়।
তিমির কংকাল সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের দৃষ্টান্ত নতুন নয়।
লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামে প্রায় ৭৫ ফুট লম্বা একটি তিমির কংকাল স্থায়ীভাবে প্রদর্শিত হচ্ছে।
এই কংকালটিও ১৮৯১ সালে সাগর থেকে ভেসে আসা একটি মৃত তিমি থেকেই পাওয়া।
পরের বছর মিউজিয়াম এটি কিনে নেয়, এবং ১৯৩৮ সাল থেকে এটি প্রদর্শিত হচ্ছে।
সূত্র, বিবিসি