ঢাকা: পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে সকাল থেকেই মানুষের ভিড়। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছেন যাত্রীরা। লঞ্চের সিঁড়ি, কেবিনের বারান্দা কিংবা ছাদ, যেখানেই একটু স্থান সেখানেই আসন বা বিছানা পেতে বসে পড়েছেন নাড়ির টানে ঘরে ফেরা মানুষ। যেকোনো মূল্যেই তারা ফিরতে চান পরিবার-পরিজনের কাছে।
বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, যাত্রীরা লঞ্চে উঠে যে যার মতো করে স্থান করে নিচ্ছেন। গল্প-গুজব করে সময় পার করছেন। কেউ বা আবার সময় পার করতে বসে পড়েছেন তাস বা লুডু খেলার কোর্ট নিয়ে। সঙ্গে রেখেছেন শুকনা খাবার। গল্প ও খেলার ফাঁকে চিবাচ্ছেন চানাচুর কিংবা মুড়ি।
দক্ষিণের জেলা পটুয়াখালীগামী সুন্দরবন ১১ লঞ্চের সিঁড়িতে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে বিছানা পেতে বসেছেন সৈয়দ মো. নান্নু। তিনি জানালেন, সকাল ৭টায় নারায়ণগঞ্জ থেকে এসে লঞ্চে উঠেছেন। বাড়িতে মা-বাবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে একমাত্র মেয়ে আফসানা আক্তার মীম ও স্ত্রীকে নিয়ে রওনা দিয়েছেন।
বরিশালগামী পারাবাত ১০ লঞ্চের ডেকে গিয়ে দেখা যায়, অসংখ্য যাত্রী গাদাগাদি করে শুয়ে-বসে আছেন। কেউ বসে তাস খেলে সময় পার করছেন, কেউ খেলছেন লুডু। সবারই চোখে-মুখে খুশির আমেজ। যেভাবেই হোক ঈদে বাড়িতে ফিরতে পারবেন এতেই সন্তুষ্ট সবাই।
লঞ্চের ছাদে ওঠার নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানতে রাজি নন ঘরমুখো এসব মানুষ। বৃষ্টি ও আইনশৃংখলা বাহিনীর বাধা অতিক্রম করে অনেকেই উঠেছেন ছাদে। তাদের নিচে নামাতে গলদঘর্ম হতে হচ্ছে আইনশৃংখলা রক্ষায় নিয়োজিত আনসার সদস্যদের।
দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াতকারী প্রিন্স সোহাগ, প্রিন্স অব হাসান-হোসেন ১ ও অভিযান ৫ লঞ্চে দেখা গেলো যাত্রীদের ছাদে চড়ে যাওয়ার দৃশ্য। তখনও টার্মিনাল থেকে ভেসে আসছে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে লঞ্চে না ওঠার অনুরোধ।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিটিসি) টার্মিনাল ব্যবস্থাপকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে টার্মিনাল ছেড়ে গিয়েছে ২৬টি লঞ্চ আর ঘাটে ভিড়েছে ৬২টি লঞ্চ।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) যুগ্ম-পরিচালক (ট্রাফিক ব্যাবস্থাপনা) জয়নাল আবেদীন অগ্রদৃষ্টিকে বলেন, সকাল থেকেই যাত্রীদের চাপ বাড়ছে। তবে মূল চাপটা পড়বে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর)।
তিনি বলেন, সেদিন পোশাক কারখানার কর্মীরা যেতে শুরু করবেন। যাত্রীদের ঈদে বাড়ি ফেরা নির্বিঘ্ন করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করি বড় কোনো ঝামেলা ছাড়াই তারা গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন।