
সুনামগঞ্জের একটি আদালত ধর্ষণের দুই মামলায় পাঁচ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে।
একই আদালত আরেকটি ধর্ষণচেষ্টার মামলায় এক বাসচালকের পাঁচ বছর কারাদণ্ড ও জরিমানা করেছে।
বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন পৃথক এই তিন মামলার রায় ঘোষণা করেন।
এর মধ্যে দলবেঁধে ধর্ষণ করে তার ভিডিও ফেইসবুকে ছড়ানোর মামলায় চারজনের এবং ধর্ষণের আরেকটি মামলায় এক আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়।
যাবজ্জীবন দণ্ডিতরা হলেন আনোয়ার হোসেন, ছয়ফুল্লাহ, সাইদুর রহমান, শফিকুল ও ইকবাল হোসেন। রায় ঘোষণার সময় আসামীগণ কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি নান্টু রায় জানান, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দীগেন্দ্র বর্মন ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ২০১২ সালের ৩১ অগাস্ট দুপুরে আসামি আনোয়ার হোসেন জোর করে মোটরসাইকেলে তুলে বেড়ানোর কথা বলে তাহিরপুর সীমান্তে শাহ্ আরেফিন মোকামের পাশে নির্জন স্থানে নিয়ে যান এবং আখক্ষেতে নিয়ে ধর্ষণ করেন।
“এ সময় স্থানীয় লাউড়েরগড় গ্রামের ছয়ফুল্লাহ, সাইদুর রহমান ও শফিকুল তাদের ঘেরাও করে এবং আনোয়ার হোসেনকে বেঁধে তারাও ওই ছাত্রীকে দলবেঁধে ধর্ষণ করেন।”
মামলার নথি থেকে নান্টু আরও জানান, আসামি সেলিম, আনোয়ারুল আজিম আকাশ, মাফিনুর ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেন।
পিপি জানান, মামলার রায়ে আনোয়ার হোসেন খোকন, ছয়ফুল্লাহ, ছাইদুর রহমান ও শফিকুলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে এক লাখ জরিমানার সাজা দেওয়া হয়। জরিমানার টাকা ভিকটিম ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাবেন বলে রায়ে উল্লেখ কার হয়।
ধর্ষণের অপর ঘটনাটি ঘটে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায়।
এ মামলায় আসামি ইকবাল হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় ও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয় এবং আসামি জয়নাল আবেদীনকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয় এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় যা অনাদায়ে তাকে আরও তিন মাস কারাভোগ করতে হবে।
মামলার বরাতে পিপি নান্টু রায় বলেন, ছাতকের মোহনপুর গ্রামে ২০১২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টায় বাড়ি থেকে আসামি ইকবাল হোসেন আসামি জয়নাল আবেদীনের সহায়তায় অপহরণ করে এক তরুণীকে সিলেট নিয়ে যায় এবং সেখানে তাকে ধর্ষণ করেন।
অপর ঘটনাটি হলো সুনামগঞ্জ শহরের দিরাই সড়কে চলন্ত বাসে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা।
দুই বছর আগের এই ঘটনায় দিরাই আসামি বাসচালক শহিদ মিয়াকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ২৬ ডিসেম্বর দিরাই শহরের মজলিশপুর গ্রামের এক কলেজছাত্রী সিলেটের লামাকাজী থেকে বাড়ি আসছিলেন। গাড়ি থেকে নামতে গেলে নামতে না দিয়ে চালক শহিদ মিয়া তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন।
এ সময় ওই ছাত্রী চলন্ত বাস থেকে লাফ দিয়ে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন।
এ মামলায় আসামি আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
