তিনি বলেছেন, “গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় জনগণই সকল ক্ষমতার মালিক। রাষ্ট্র ও সরকারের সকল কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয় জনগণের কল্যাণে। তাই আপনাদের দায়িত্ব পালনকালে জনস্বার্থ ও জনকল্যাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।”
মঙ্গলবার যশোরে সেনাবাহিনীর সিগন্যাল কোরের ষষ্ঠ কোর পুনর্মিলনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে আবদুল হামিদ এসব কথা বলেন।
যশোর সেনানিবাসের শহীদ ক্যাপ্টেন আব্দুল হামিদ প্যারেড গ্রাউন্ডে এই কুচকাওয়াজে রাষ্ট্রপতি সালাম গ্রহণ করেন। এর আগে খোলা জিপে চড়ে সামরিক পোশাক পরিহিত আবদুল হামিদ প্যারেড পরিদর্শন করেন।
সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক আবদুল হামিদ বলেন, “মনে রাখতে হবে জনগণের কষ্টার্জিত করের টাকায়ই দেশের উন্নয়ন এবং রাষ্ট্রের যাবতীয় ব্যয়ভার মেটানো হয়। তাই জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি জনগণের সুখ-দুঃখে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।
“আমি আশা করি, দায়িত্ব পালনকালে আপনারা শুদ্ধাচার কৌশল যথাযথভাবে প্রতিপালন করবেন। নিজেদের দায়িত্ব সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে পালন করবেন।”
সরকার প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক বাংলাদেশ গড়তে তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ খাতকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, “বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ অভিজাত স্যাটেলাইট ক্লাবের সদস্য হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। বিদেশি স্যাটেলাইটের নির্ভরতা পরিহার করে ইতোমধ্যে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে অত্যন্ত কার্যকরভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে, যার সুফল দেশবাসী উপভোগ করছে।
“বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ইতোমধ্যে স্যাটেলাইট হাব-স্টেশন স্থাপন করে পার্বত্য চট্রগ্রামসহ সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়নে কাজ করছে, এটি পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে সেনাবাহিনীর সামগ্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে একটি অনন্য মাত্রা যোগ হবে।”
সেনাবাহিনীর উন্নয়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে আবদুল হামিদ বলেন, “সেনাবাহিনীর সার্বিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি সারা দেশে দুইটি সিগন্যাল ব্যাটালিয়ন, বরিশাল, সিলেট ও রামুতে তিনটি স্ট্যাটিক সিগন্যাল কোম্পানি ও চারটি ব্রিগেড সিগন্যাল কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।”
যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তির আধুনিকায়নের লক্ষ্যে ফোর্সেস গোল-২০৩০ এর আওতার সেনাবাহিনীতে সাইবার ওয়ারফেয়ার গ্রুপ, ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার ইউনিট, স্যাটকম ইউনিট এবং স্ট্রাটেজিক ট্রান্সমিশন ইউনিট ইত্যাদি অন্তর্ভুক্তির পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে, যা সামগ্রিকভাবে সেনাবাহিনীর সমরশক্তি ও যোগাযোগ সক্ষমতা আরো সুসংহত করবে। সেনাবাহিনীর অপারেশনাল যোগাযোগ ব্যবস্থার এই সামগ্রিক উন্নয়নকে আপনারা যথাযথ ব্যবহার করে রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরো জোরদার করতে সচেষ্ট হবেন বলে আমি আশা করি।
সিগন্যাল কোরের সদস্যদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, “সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার তালিকা প্রণয়ন প্রকল্পে সিগন্যাল কোরের সদস্যরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ন প্রকল্পসহ বিভিন্ন উন্নয়ন ও সেবামূলক কর্মকাণ্ডে সেনাবাহিনীর অংশ হিসেবে সিগন্যাল কোরের সদস্যদের অবদান প্রশংসনীয়।”
তিনি আরও বলেন, “জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে এবং কুয়েত পুনর্বাসন মিশনে দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে সিগন্যাল কোর আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও প্রশংসা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। দেশ ও জাতির প্রয়োজনে ভবিষ্যতেও একইভাবে জনকল্যাণমূলক কাজে সশস্ত্রবাহিনীকে অবদান রাখতে হবে।”
সূত্র, বিডিনিউজ২৪