ইতালী থেকে তুহিন মাহমুদঃ ইতালির মিলানে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল মিলান অফিস মিলনায়তনে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হলো জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোকদিবস।
সকাল ১১টায় বাংলাদেশ কন্স্যুলেট জেনারেল মিলান কর্তৃক কন্স্যুলেট মিলনায়াতনে খতমে কোরআন,মিলাদ মাহফিল,বিশেষ মোনাজাত,স্মরণ সভা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলাদেশ কন্স্যুলেট জেনারেল মিলান এর কনসাল জেনারেল মিজ্ রেজিনা আহমেদ,অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্হানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ স্বাধীন বাংলাদেশের স্হপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন।
জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত ও পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়।
জাতীর শোকাবহ এই দিনে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের হাতে শাহাদাৎ বরণকারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্য সহ ঐ রাতে নিহতদের আত্নার মাগফিরাত কামনায় খতমে কোরআন,মিলাদ মাহফিল আয়োজন করা হয়।এবং তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
মিলানের স্হানীয় একটি মসজিদের ইমাম বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের হাতে নিহত সকল বিদেহী আত্নার মাগফেরাত কামনা করা হয়।এবং একটি সুখী -সমৃদ্ধ, দারিদ্র্যমুক্ত,সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মুক্ত সোনার বাংলাদেশ বির্নিমানের জন্য দোয়া করা হয়।
অনুষ্ঠানের মধ্যেভাগে স্মরণসভা ও আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতেই কনসাল রফিকুল করিম মহামান্য রাস্ট্রপতি,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন!
বাণী পাঠের পর ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবসে সরকারের সাম্প্রতিক সাফল্য নিয়ে নির্মিত বিশেষ প্রামাণ্য চিত্র “উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ :সময় এখন আমাদের”প্রদর্শন করা হয়।
এরপর সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নেয় প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ এবং স্হানীয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। বক্তাগণ সকলেই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় স্বাধীনতার ঘোষক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসামান্য অবদান কৃতজ্ঞতা চিত্তে স্মরণ করেন।এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টের ঘৃন্য ও বর্বরেচিত হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন। বাংলাদেশ কন্স্যুলেট জেনারেল মিলান এর কনসাল জেনারেল মিজ্ রেজিনা আহমেদ এর সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
সমাপনী বক্তব্যে মিজ্ রেজিনা আহমেদ সরকারের সাম্প্রতিক সমস্ত উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড তুলে ধরেন।এবং উল্লেখ করেন যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার জীবনের সবচেয়ে বড় শোককে শক্তিতে পরিনত করেছেন।তিনি অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে জনগনের চাহিদা অনুযায়ী তাদের জীবনমান উন্নতকরণেরর জন্য একের পর এক প্রকল্প বাস্তবায়ন করে চলেছেন।তাই আজকের এই দিনে আমি আপনাদের সকলকে আহবান জানাই আমরা যার যার অবস্থান থেকে সরকারের রুপকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করি,মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করি এবং তা করতে পারলে আমি বিশ্বাস করি বঙ্গবন্ধুর আত্না শান্তি পাবে এবং যে লক্ষ্যে তিনি তাঁর সারাটা জীবন উৎসর্গ করেছেন তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। ঘাতকদের হাতে নিহত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ঐদিন নিহত সকলের আত্নার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট ঘাতকচক্র বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাস,ঐতিহ্য ও অগ্রগতিকে ধ্বংস করার ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালায়।তিনি আরও বলেন আল্লাহ্ ‘র অশেষ শোকরিয়া যে,ভাগ্যক্রমে বঙ্গবন্ধুর দু’কন্যা সেদিন বেঁচে গিয়েছিলেন এবং সে কারনেই আজ কে আমরা বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব পেয়েছি।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী তাঁর পিতা-মাতা,ভাই-বোন,আত্নীয় স্বজন হারানোর শোককে শক্তিতে রুপান্তরের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গঠনের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে
যাচ্ছেন।কিন্তু ঘাতকচক্র এবং তাদের দোসররা এখনও পিছু ছাড়েনি। সে কারনেই বাংলাদেশের মাটিতে এখন ও সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ মাঝে মধ্যে মাথা চাড়া দিয়ে উঠবার চেষ্টা করে।
কিন্ত বর্তমান সরকার সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে ” জিরো টলারেন্স” নীতি ঘোষনা করেছে।এর মাধ্যমে সরকার একটি সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ মুক্ত, ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত,উন্নত ও সমৃদ্ধ এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের জন্য কাজ করছে।
উল্লেখ করে তিনি সরকারের এ নীতি ও কর্মসূচি বাস্তবায়নে সকলকে যার যার অবস্হান থেকে সহযোগীতা করার আহবান জানান।কনসাল জেনারেল আরো বলেন,যদি আমরা সকলে মিলে বর্তমান সরকার ঘোষিত নীতি ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করি তাহলে।বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে।জাতি পাবে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ এবং তাতে করে বঙ্গবন্ধুর বিদেহী আত্না শান্তি পাবে।
অনুষ্ঠানে শত শত প্রবাসী বাংলাদেশী,কন্স্যুলেটের সকল সদস্য ও তাদের পরিবারবর্গ, মিলান বাঙলা প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ এবং স্হানীয় কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ উপস্হিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা এবং তাঁর সংগ্রামী রাজনৈতিক জীবনের উল্লেখযোগ্য দিকসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন,লোম্বারদিয়া আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আ:মান্নান মালিথা,সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী নেছার, সম্মানিত সদস্য আকরাম হোসেন, সহ সভাপতি আবুআলম,সাধারণ সম্পাদক নাজমুল কবির জামান,যুগ্নসম্পাদক মোহাম্মদ হানিফ শিপন,সরোয়ার হোসেন মোল্লা,জামিল আহমেদ, লুৎফর রহমান, তুহিন মাহামুদ,খান রিপন,সাংগঠনিক সম্পাদক আরফান শিকদার প্রচার সম্পাদক মামুন হাওলাদার,মুনছুর খালাসী, যুবলীগের সভাপতি খান মামুন,সাধারণ সম্পাদক শফিউদ্দিন, এনায়েত,ফজলুল হক,মিলান বাঙলা প্রেসক্লাবের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম কাওছার,বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি হাজী শাহআলম,সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান ভারেজ আওয়ামীলীগের সভাপতি সিরাজ,সুলতান শরীফ, নুর সহ প্রমূখ নেতৃবৃন্দ। সবশেষে আপ্যায়ন মাধ্যমে অনুষ্ঠানের পরি সমাপ্তি ঘটে।