জার্মানিতে শরণার্থী শিবিরে কাজ করছেন এমন এক প্রবাসী বাংলাদেশী অগ্রদৃষ্টিকে বলেন সিংহভাগ মানুষ শরণার্থীদের প্রতি সহানুভূতিশীল।
টেলিফোনে ফারজানা কবির খান “আমি বলবো ৯৫ শতাংশ জার্মান অভিবাসীদের প্রতি সহানুভূতিশীল।
এমনকি যাদের সামর্থ্য কম, পুরনো কাপড়, চকলেট, খেলনা নিয়ে আসছে তারা।”
তবে তিনি জানান, স্থানীয়দের মধ্যে কেউ কেউ উদ্বিগ্ন। “এদেশে বেকারত্ব সমস্যা রয়েছে। তারা ভয় পাচ্ছেন শরণার্থীদের জন্য অনেক খরচ করতে হবে। ফলে সরকার এই বেকারত্ব সমস্যার দিকে আরও কম নজর দেবে।”
কিছু জার্মান পুরোপুরি অভিবাসন বিরোধী। “তাদেরকে বলা হয় নাৎসি, তবে তারা তিন শতাংশও হবেনা।”
আশ্রয়প্রার্থীদের অনেক বাংলাদেশী
গত কয় মাসে কয়েক লাখ আশ্রয়প্রার্থী জার্মানিতে পৌঁছেছে। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে ফারজানা কবির জানান, আশ্রয় শিবিরগুলোর পঞ্চাশ শতাংশের মত সিরিয়া থেকে আসা, বাকিরা অন্যান্য দেশের।
“বাংলাদেশী আছে, ভারতীয় আছে, পাকিস্তানী আছে, ইরাকী আছে।”
জার্মানির সরকার বলছে, যুদ্ধ-বিধ্বস্ত সিরিয়া, ইরাক ছাড়া অন্যদের নিজ নিজ দেশে পাঠানো হবে।
আশ্রয় প্রার্থীদের সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে ফারজানা কবির বলেন, বিশেষ করে সিরিয়া থেকে আসা লোকজনের মধ্যে একধরণের নিরাপত্তা-বোধ, স্বস্তি স্পষ্ট।
“নিজের দেশে তাদের পালিয়ে বেড়াতে হতো, সর্বক্ষণ মৃত্যুর ভয়ে থাকতো হতো…এখানে তারা খুবই খুশী, বাচ্চারা আবারো খেলে বেড়াচ্ছে।”
জার্মানি অভিমুখে আসা শরণার্থীদের স্রোত সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে দক্ষিণের শহর মিউনিখ।
গতকাল শনিবারই এই শহরে এসে পৌঁছেছেন ১৩ হাজার মানুষ। মিউনিখের মেয়র বলছেন, এতো শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার জায়গা ফুরিয়ে আসছে। শহরের অলিম্পিক স্থাপনাগুলোতে আশ্রয় শিবির তৈরির কথা ভাবছেন তিনি।
শরণার্থী ও অভিবাসীদের জায়গা দেয়া নিয়ে জার্মানির বিভিন্ন অঞ্চলের কর্তৃপক্ষের মধ্যেই বিবাদ স্পষ্ট হচ্ছে।
গতকাল শনিবার একদিনেই যে পরিমাণ শরণার্থী এসেছে তার পরিমাণ অন্তত ১৩ হাজার যা এক নতুন রেকর্ড।
মিউনিখের মেয়র ডিটার রাইটার অভিযোগ করেছেন, জার্মানির অন্যান্য অঞ্চল এবং শহরগুলো এই চাপ ভাগাভাগি করে নিচ্ছে না।
“প্রতি রাজ্যের সরকার, আর প্রত্যেক বড় শহরের মেয়রকে এটা মানতে হবে যে – আমরা একটি জাতীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছি। এখন পর্যন্ত ব্যাভেরিয়া ও মিউনিখে আমরা একা হাতেই এই বোঝা বহন করছি।”
এই শরণার্থীরা জার্মানিতে আসছে অস্ট্রিয়া এবং হাঙ্গেরি হয়ে।
হাঙ্গেরির একটি টিভি চ্যানেল জানাচ্ছে, হাঙ্গেরি থেকে শনিবারই সাড়ে ৬ হাজারেরও বেশি অভিবাসী অস্ট্রিয়ায় ঢুকেছে। অষ্ট্রিয়ার পুলিশ বলছে, তাদের ধারণা, রোববার হয়তো প্রতি ঘণ্টায় পাঁচশ করে শরণার্থী আসবে।
হাঙ্গেরির সরকার বলছে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই তারা সার্বিয়ার সাথে তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দেবে এবং, তাদের ভাষায়, অবৈধ শরণার্থীদের গ্রেফতার করা শুরু করবে।