মোঃ আরিফ জাওয়াদ, দিনাজপুর: ঐতিহ্যগতভাবে সামাজিক রীতি, ভদ্রতা এবং আচার-আচরণের অংশ হিসেবেই পানের ব্যবহার অনেক আগে থেকে। রাজকীয় খানাপিনার পর পান খাওয়ার অভ্যাস আছে অনেকেরই। উৎসব, পূজা ও পুণ্যাহে পান এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের পানের প্রতিটি একেবারেই আকৃষ্ট নেই বললেই চলে। কিন্তু শখের বশে বাহারী মসলা দেখেই পানের স্বাদ গ্রহণ করছেন। আর সে দিকটি মাথায় রেখেই বাহারী স্বাদের মশলা দিয়ে খিলিপানের পশরা বসিয়েছেন আশরাফুল ইসলাম (৩৬)।
আশরাফুল ইসলামের বাড়ি জেলার নবাবগঞ্জের ৭নং দাউদপুর ইউপি’র খোদাইপুর গ্রামে। পেশায় রাজমিস্ত্রী হলেও শখে বশে বাহারী রকমের পান মসলা দিয়ে ‘বন্ধু-বউ সোহাগী’ খিলি পান বিক্রি করছেন।
২০১৪ সালে এক ইসলামী সমাবেশে গিয়ে শখের বশে বাহারী রকমের মশলা দেখে একটি পান মুখে দেন তিনি। পরবর্তীতে সেই ভাল লাগা থেকে ওই দোকানীর কাছ থেকে এ মিষ্টি পান তৈরি করার কৌশল শিখে পানের দোকান করার সিদ্ধান্ত নেন, বলে জানায় আশরাফুল।
তিনি জানায়, সকাল থেকে সন্ধ্যা রাজমিস্ত্রির কাজ করি। মেলা কিংবা ইসলামিক সমাবেশের খবর পেলেই রাতে ‘বন্ধু-বউ সোহাগী’ খিলি পানের দোকান দিই। অনেক মানুষ আছেন যারা কখনোই পান মুখে দেন নি কিন্তু পানের বাহারী রকমের সু-গন্ধি মশলা দোকান দেখে অনেকেই আছেন যারা জীবনের প্রথম পান খেয়েছেন, বলে দাবি করেন তিনি।
বগুড়ার চারমাথায় সৌর মসজিদ এলাকা থেকে বাহারী ধরনের এ পান মসলা কিনেন তিনি। প্রায় ৬০-৭০ প্রকারের মশলা দিয়ে তৈরি প্রতি ‘বন্ধু-বউ সোহাগী’ পানের মূল্য রেখেছেন ৫ টাকা।
খিলি পানের এ ধরনের অদ্ভুত নাম রাখার কারণ জানতে চাইলে আশরাফুল বলে, বাহারী রকমের মিষ্টি মশলা দিয়ে পান খাওয়ার মধ্য দিয়ে বন্ধু আর স্ত্রী’র মধ্যে সম্পর্কটা আরো ভাল হবে। সেই বিশ্বাস থেকে পানটির এ নাম রাখা।
আশরাফুল জানায়, মেলা কিংবা মাহফিলে এক রাতে কমপক্ষে ৫০০-৭০০ পান বিক্রি হয়। এত পান বিক্রি হলেও প্রতি পানে ৫০ পয়সা করে লাভ হয়, বলে জানান তিনি।
পান কিনতে আসাদের অল্প বয়সীদের শিশু-কিশোরদের সংখ্যাই বেশী। বেশ কয়েকজনের সাথে কথা হলে তারা জানায়, এ পানটি খেলে জিহ্বাহ যেমন লাল হয় ; তেমনি মুখে বেশিক্ষণ ধরে সুগন্ধ থাকে। সেই উদ্দেশ্যে এ পান খাওয়া।