ব্যাংকের সফটওয়্যারের ভুলে কয়েক ঘণ্টার জন্য হাজার কোটি টাকার মালিক হওয়া পটুয়াখালীর সোহাগ ফকিরের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া ছিল—এত টাহা কোম্মে গোনে আইলে?
তিনি কিছুতেই বুঝতে পারছিলেন না কোত্থেকে এলো ঐ টাকা আর চলেই বা গেল কেন!
এ বছরের ১৪ই ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের পটুয়াখালী প্রধান শাখার কর্মকর্তারা দিন শেষে হিসেব মেলাতে গিয়ে দেখতে পান একই ব্যাংকের সিরাজগঞ্জ বাঘাবাড়ি শাখা থেকে অটোরিকশা চালক সোহাগের এ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে দশ হাজার বেয়াল্লিশ কোটি টাকা।
তবে, এই টাকা সোহাগ হাতে পাননি কোনদিনই।
ভুল বুঝতে পেরে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তা শুধরে নেয় জনতা ব্যাংক।
পরে সাংবাদিকদের কাছে ঘটনা শুনে অবাক সোহাগ।
“পুবালী ইনস্যুরেন্সে পাইলাম তিন হাজার পাঁচশ টাহা। হেইডা তো উডাইয়াও ফালাইছি। তাইলে এত টাহা কোম্মে গোনে আইলে!”
“এ্যাকাউন্ট খোলার পর কি হইছে, না হইছে, কিছু জানি না। মাইনসে এখন বলাবলি করে, আমার অনেক টাকা।”
কিন্তু ঐ ঘটনার পর ব্যাংকের ম্যানেজার তার কাছ থেকে চেকবই এবং ডিপোজিট বই জমা নিয়ে নেন বলে জানিয়েছেন সোহাগ।
ব্যাংক হিসাব বন্ধ না করলেও, ব্যাংকে তার কোন লেনদেন নেই বলে এতে তার তেমন ক্ষতি হচ্ছে না বলে জানান সোহাগ।
পটুয়াখালী সদরের লোহালিয়া খেয়া ঘাট থেকে বাউফল, দশমিনা, কাশীগঞ্জ এলাকায় রোজ অটোরিকশা চালান সোহাগ।
বীমা কোম্পানিতে একটি জীবনবীমা করেছিলেন, যার একটি লভ্যাংশ পেয়েছিলেন চেকের মাধ্যমে।
সেটি ক্যাশ করার জন্য সোহাগের দরকার ছিল একটি ব্যাংক এ্যাকাউন্ট।
সেজন্যই গত বছরের জুনে জনতা ব্যাংকের পটুয়াখালীর প্রধান শাখায় এক হাজার টাকা জমা দিয়ে একটি সঞ্চয়ী হিসাব খুলে ছিলেন।
জনতা ব্যাংকের পটুয়াখালী প্রধান শাখার ব্যবস্থাপক ফরিদ আহমেদ বলেন, অনলাইন ট্রান্সফারের সফটওয়্যার ত্রুটির কারণে এই অস্বাভাবিক লেনদেনের ঘটনা ঘটেছে।
ভুল বুঝতে পারার সাথে সাথে ব্যাংকের আইসিটি বিভাগকে জানানোর পর ভুল শুধরে প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
আর সোহাগকে তার চেকবই এবং ডিপোজিট বই ফিরিয়ে দেয়া হবে বলে জানান মি. আহমেদ।