মৌলভীবাজার থেকেঃ মৌলভীবাজার শহরের সর্বাধুনিক, বিলাসবহুল স্বনামধন্য বিপণি বিতান বিলাস ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোর ও এমবি ক্লথ ষ্টোরের সম্মুখে ভিক্ষুকদের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত মুখ শেফালী বেগম।
শেফালী বেগম এক অভিনব ভিক্ষুকের নাম। শেফালীর পেশাদারিত্ব ভিক্ষা ভিত্তি সুলভ আচরণে কেউ ভিক্ষা প্রদান ব্যতীত তার পাশ কাটিয়ে যাওয়া অসম্ভব। ভালো কাপড়চোপড় পরিহিত যে কাউকে পেলেই লন্ডনী ভাইসাব কিংবা আপা সম্বোধন করে ভিক্ষা চাওয়া শেফালীর এটি একটি প্রত্যাহিক অভ্যাস।
নুন্যতম সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের বেলায় ভিক্ষা চাওয়া অনুচিত’ই শুধু নয়; এটি এক ধরনের অপরাধ বলে বিবেচিত।
উন্নত বিশ্বের দেশ গুলোতে দরিদ্র কিংবা হতদরিদ্র সবার ক্ষেত্রে ভিক্ষা ভিত্তি সম্পূর্ণ নিষেধ। কিন্তু বাংলাদেশে এরকম কোনো আইন প্রণয়ন আজ অবধি হয়নি।
মৌলভীবাজারের বিলাস ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোর ও এমবি ক্লথ ষ্টোরের সম্মুখে গেলেই ভিক্ষুক শেফালী কনকনে এই শীতের সকাল,বিকেল এবং সন্ধ্যা উপেক্ষা করে মাস কিংবা দুমাস বয়সের এক বাচ্ছাকে কোলে নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করে ভিক্ষা ভিত্তির দৃশ্যটি প্রত্যহ চোখে পরে।
তবে সবচেয়ে অবাক হওয়ার বিষয়টি হলো এই যে, উক্ত ভিক্ষুক শেফালীর কোলে মায়ের আদরে-যত্নে যে বাচ্ছাটি প্রতিনিয়ত দেখা যায়; সেটি প্রায়শই এক’ই বয়সের পরিবর্তিত চেহারার শিশু বাচ্ছা প্রত্যক্ষ করা গেছে।
ফলে অনেকে’ই শেফালীকে অনেকটা কৌতূহলী ভঙ্গিমায় প্রশ্ন করেন, শেফালী তোমার শিশু বাচ্ছাটি বছরের পর বছর গেলেও আজো সেই ছোট’ই রয়ে গেলো, বলো তো তোমার এই বাচ্ছাটি কবে নাগাদ বড় হবে?
শেফালী সেই কথার উত্তর না দিয়ে, হেঁসে হেঁসে এড়িয়ে যায় প্রশ্নটি।
এমন একটি প্রশ্নও শেফালীকে করা হয় যে, শেফালী আমরা দেখছি তুমি প্রতি ৬ মাস পর পর একেকটি নতুন বাচ্ছা জন্ম দিচ্ছ, যেমনটি আমরা তোমার কোলে দেখি, তো এই ধারাবাহিকতাটি আর কতো দিন যাবত অব্যাহত থাকবে? .
শেফালী হাঁসতে হাঁসতে সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় বললো, আর কোনো নয়া বাচ্ছা দেখতায় নায়রেবা লন্ডনী সাব।