অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে :বরিশালের আগৈলঝাড়ায় শতাধিক অবৈধ মোটরযান আটক করে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। থানাসূত্রে জানা গেছে, অবৈধ মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশনের জন্য সরকারী নির্দেশনার পর আগৈলঝাড়া থানা পুলিশ জনসচেতনতা বাড়াতে এলাকায় মাইকিং সহ ব্যাপক প্রচারণা চালায়। সরকারী নির্দেশ অমান্য করে মালিকেরা দীর্ঘদিনেও তাদের মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন না করায় ১৫ জুলাই থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত ১০দিনে উপজেলা বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ একাধিক অভিযান পরিচালনা করে। এসময় রেজিস্ট্রেশনহীন শতাধিক অবৈধ মোটরসাইকেল আটকও করে তারা। আটককৃত একাধিক মোটরসাইকেল মালিক অভিযোগ করেছেন, রেজিস্ট্রেশন ছাড়া ব্যক্তি মালিকানাধীন মোটরসাইকেলগুলো আটক করলেও উপজেলায় ভাড়ায় চালিত ‘মোটর সাইকেল সমবায় সমিতির’ নামে অবৈধ পাঁচশতাধিক মোটরসাইকেল রাস্তায় চলাচল করছে। যার ৯০ শতাংশরও বেশী মোটরযানের কোন রেজিস্ট্রেশন বা বৈধ কাগজপত্র নেই। তারা ওসিকে মাসোহারা দেয়ার কারণে সেগুলো পুলিশ আটক করছেনা। অভিযোগে তারা আরও বলেন, ওসি’র কারণে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারানোর পাশাপাশি বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর কারণে এলাকায় প্রায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা। এদিকে আটকের পরেও গত ১০দিনে অন্তত: ২৫-৩০টি মোটরসাইকেল অজ্ঞাতকারণে ছেড়ে দিয়েছে ওসি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মোটরসাইকেল সমবায় সমিতির দায়িত্বশীল এক নেতা জানান, উপজেলা সদর, বাশাইল, বাটরা এলাকার প্রায় একশ’ মোটরসাইকেল তাদের সমিতির আওতাভুক্ত। তিনি স্বীকার করেন যে, অধিকাংশ সদস্যের গাড়িরই কোন রেজিস্ট্রেশন নেই। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় মোটরসাইকেল চললেও সেগুলো তাদের সমিতিভুক্ত নয়। তারা তাদের সমিতিভুক্ত চালকদের বিশেষ তৈরী একটি পরিচয়পত্র দিয়েছে। যা দেখালে পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয়। সদস্যদের কাছ থেকে ১শ’ টাকা করে চাঁদা নেয়া হয়। ওই টাকা দিয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে রাস্তায় মোটরসাইকেল চলাচল করছে। চালকদের সুবিধা-অসুবিধা দেখার জন্যই মূলত: তারা সমিতি করেছেন। কথিত ওই সমিতির সভাপতি বাবুল শাহকে তার ০১৭৩৩-১৩৬২৬৬ নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে জাতীয় মহাসড়কে চলাচলকারী পরিবহন মালিকেরা অভিযোগ করেছেন, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মহাসড়কে সকল প্রকার ব্যাটারীচালিত ইজিবাইক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও বরিশাল-গৌরনদী-আগৈলঝাড়া-গোপালগঞ্জ মহাসড়কে প্রতিনিয়ত চলছে হাজার হাজার ইজিবাইক। জুলাই মাসের ১০দিন মোটরসাইকেল আটকের পর বর্তমানে থানায় মাত্র ২৫টি মোটরসাইকেল জমা থাকার কথা জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম। তিনি ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল সমিতির কাছ থেকে মাসোহারা নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, আটকের পর ৭৫টি মোটরসাইকেলের মালিকেরা বৈধ কাগজপত্র দেখিয়ে এবং বাকিরা বিআরটিআইতে রেজিস্ট্রেশনের জন্য টাকা জমা দিয়ে তার রশিদ দেখিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে গেছেন।