অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে :
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় অধ্যক্ষ কর্তৃক ৪র্থ শ্রেণীর বিধবা কর্মচারীসহ একাধিক কর্মচারীকে যৌণ নিপীড়নের অভিযোগে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত নির্দেশ দিলেন ইউএনও। কলেজের সভাপতি ও উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শতরূপা তালুকদার ও ওসি মনিরুল ইসলামের ঘটনাস্থল পরিদর্শন।
মোহনকাঠি আদর্শ আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ ফকরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ওই প্রতিষ্ঠানের সংখ্যালঘু এক বিধবা কর্মচারীসহ একাধিক কর্মচারীকে যৌণ নিপীড়নের সংবাদ প্রকাশের পর গতকাল সোমবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি শতরূপা তালুকদার এবং ওসি মনিরুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এসময় ইউএনও ঘটনা তদন্তে পৃথকভাবে কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের কাছ থেকে লিখিত জবানবন্দী গ্রহণ করেছেন। থানার ওসি মনিরুল ইসলামও পৃথক তদন্ত করেন।
সোমবার এডহক কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে মৃত সুরেশ চন্দ্র মিস্ত্রীর স্ত্রী প্রতিষ্ঠানের ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী শান্তি রানী মিস্ত্রী লিখিত অভিযোগে জানান, অধ্যক্ষ ফকরুল ইসলাম বিভিন্ন সময় তার সাথে অশোভন আচরণ করে আসছিলেন। সুযোগ বুঝে বিভিন্ন আপত্তিকর কথা বলে তার শরীর স্পর্শ করতেন। এমনকি তার সাথে রাত্রিযাপনেরও প্রস্তাব দেয়া হয় তাকে। চাকুরী যাবার ভয় ও মান-সম্মানের ভয়ে বিষয়টি তিনি সকল কিছু চেপে যাচ্ছিলেন। এরই মধ্যে গত ৩১ জুলাই কাজের অজুহাতে দেখিয়ে অধ্যক্ষ ফকরুল সকাল ৮টায় তাকে প্রতিষ্ঠানে আসতে বলেন। সে অনুযায়ী সকাল ৮টায় রুম ঝাড়– দেয়ার সময় স্যার আমাকে তার কাছে বসতে বলেন। আমি তাতে রাজী না হওয়ায় আমার হাত ধরে টান দিয়ে কাপড়ের একাংশ খুলে বুকে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানি করলে কোন রকমে তার রুম থেকে দৌঁড়ে বের হয়ে বিষয়টি কমিটির অন্যান্য শিক্ষক সদস্যদের জানান তিনি। যার অনুলিপি স্থানীয় সংসদ সনদস্য, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবরে অনুলিপি প্রদান করা হয়েছে।
ইউএনও শতরূপা তালুকদার জানান, তিনি অভিযোগের প্রাথমিক তদন্ত করেছেন। এই বিষয় নিয়ে বিকেলে তার কার্যালয়ে গভর্নিংবডির জরুরী সভা ডেকেছেন তিনি। তদন্ত রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। অধিকতর তদন্তের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলামকে দায়িত্ব প্রদান করেছেন বলেও জানান তিনি। শীঘ্রই তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান তিনি। ইউএনও’র নির্দেশ পেয়ে তিনি গতকাল দুপুরেই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তদন্ত করেছেন। রিপোর্ট দাখিলের আগে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।