আ হ জুবেদঃ ছেলেটি বেশ কয়েক দিন ধরে ফোন দিয়ে জানতে চাচ্ছে বাবার খবর।
প্রথমে বিষয়টি বুঝার চেষ্টা, পরে অনেকের সহযোগিতা নিয়েও ছেলেটিকে সন্তুষ্ট কিংবা খুশি, কোনোটাই করা সম্ভব হয়নি। এখানেই ছিল আমার ব্যর্থতা।
মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, বাবা নাজমুল হক দীর্ঘদিন ধরে জীবন আর জীবিকার তাগিদে কুয়েতে ছিলেন।
অজ্ঞাত কারণে কুয়েত প্রবাসী নাজমুল আকামাহীন হয়ে পড়েন। ফলে সাধারণ ক্ষমার সুযোগে তিনি দেশে যাওয়ার জন্য ১২ই এপ্রিল সাধারণ ক্ষমার প্রক্রিয়া সম্পন্ন শেষে কুয়েত সরকারের অধীনস্থ একটি ক্যাম্পে চলে যান।
পরে জানা গেছে সেখানে তিনি আকস্মিক স্ট্রোক করেন।
এদিকে দেশে থাকা নাজমুলের ছেলে মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বাবার সঙ্গে শেষ যোগাযোগ করেছিলেন ১২ই এপ্রিল।
তখন নাজমুল, ছেলেকে জানিয়ে ছিলেন যে, সাধারণ ক্ষমার প্রক্রিয়া শেষ করেছেন,এখন তাকে কোথাও নিয়ে যাওয়া হতে পারে।
এরপর থেকে ছেলে মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ শত চেষ্টা করেও বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হোন।
ফলে তিনি ”কুয়েত বাংলানিউজ” এর মাধ্যমে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে বাবা নাজমুলকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা বলে জানান।
প্রথমেই আমি এবিষটিকে গুরুত্ব দেই, এজন্য কুয়েতের বাংলাদেশ দূতাবাসের মান্যবর রাষ্ট্রদূতকে নাজমুলকে খুঁজে না পাওয়ার বিষয়টি অবহিত করি।
মান্যবর রাষ্ট্রদূত, বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান মোহাম্মদ আনিসুজ্জামানের সহযোগিতা কামনা করেন।
মিস্টার আনিসুজ্জামান আমাকে ফোন দিয়ে বিস্তারিত জানতে চান এবং নাজমুলকে খুঁজে বের করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন।
এদিকে ছেলে মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, বাবার খুঁজে বার বার ফোন দিচ্ছিলেন আমাকে।
যদিও আব্দুল্লাহ’র বার বার ফোনে বিব্রত বোধ করিনি, তবে সন্তুষ্টজনক জবাব দিতে না পারা ছিল আমার জন্য বড়ই কষ্টের।
অবশেষে খবর পাওয়া গেলো আব্দুল্লাহ এর বাবার।
তবে, এ খবর আব্দুল্লাহকে কীভাবে দেই বা দেবো এনিয়ে আমি চিন্তিত ছিলাম।
আব্দুল্লাহ এর বাবা নাজমুল হক কুয়েতের আবদালী এলাকার ক্যাম্পে স্ট্রোক করে প্রাণ হারান।
পরিস্থিতি ও নিয়মের কাছে আমরা বড়ই অসহায়, অন্যদিকে, নিষ্ঠুর বাস্তবতা, মুহূর্তের মধ্যেই স্তব্ধ করে দিয়েছে সবকিছু।
উল্লেখ্য, নিহত নাজমুল হকের বাড়ি চট্রগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলার হাদি ফাকিরহাটে।