অগ্রদৃষ্টি ডেস্ক: সাংবাদিক শফিক রেহমানকে গ্রেফতারের মামলায় তাঁর পক্ষে বিরোধীদল বিএনপি দলগতভাবে আইনি লড়াই চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিএনপি নেতারা বলেছেন, শফিক রেহমানকে গ্রেফতারের পর বাংলাদেশ সরকার এবং পুলিশের পক্ষ থেকে বিএনপিকে জড়িয়ে বক্তব্য দেয়া হয়েছে। সেকারণেই দলের এই সিদ্ধান্ত।
আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে কোন পদে না থাকলেও দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সাথে শফিক রেহমানের ঘনিষ্ঠতা ওপেন সিক্রেট।
অনেক বিশ্লেষকের ধারণা সে কারণেই তার গ্রেফতারকে গুরুত্ব দিচ্ছে বিএনপি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদকে অপহরণ ও হত্যার পরিকল্পনায় জড়িত থাকার অভিযোগ এনে গত শনিবার মি: রেহমানকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
শফিক রেহমানের গ্রেফতারের পর এই ইস্যু নিয়েই বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া মঙ্গলবার রাতে দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন।
সেই বৈঠক থেকে শফিক রেহমানের পক্ষে আইনগত লড়াই চালানোর সিদ্ধান্ত হয়।
সরকার মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআইয়ের বরাত দিয়ে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণের পরিকল্পনায় শফিক রেহমানের জড়িত থাকার যে অভিযোগ তুলেছে, বিষয়টা আসলে কী সে ব্যাপারে তথ্য চেয়ে বিএনপি এফবিআইয়ের কাছেও চিঠি দেবে।
এমন অবস্থানের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “শফিক রেহমানকে গ্রেফতারের পর এখন সরকার এবং পুলিশ বলছে, বিএনপি ঘটনার সাথে জড়িত।বিএনপির নাম আনা হয়েছে। সেজন্য সত্য বের করা বিএনপির দায়িত্ব। আর তাই আমরা বিষয়টা দেখছি এবং আমাদের আইনজীবীরা এ নিয়ে কাজ করবেন।”
শফিক রেহমান বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এবং সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, তাদের দু’জনেরই ঘনিষ্ঠ।
ফলে দলে কোন পদ না থাকলেও তিনি বিএনপিতে প্রভাবশালী হিসেবেই পরিচিত।
বিএনপি থেকে শমসের মবিন চৌধুরীর পদত্যাগের পর দলটির যে কয়েকজন নেতা বিদেশী কূটনীতিকদের সাথে যোগাযোগ রাখেন, তাদের মধ্যে শফিক রেহমান অন্যতম।
বিএনপির সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিলে তাঁকে আন্তর্জাতিক কমিটির আহবায়ক করা হয়।
ফলে তাঁর গ্রেফতারের বিষয়কে বিএনপি শীর্ষ পর্যায়ে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
এবং সেকারণে দলগতভাবে অবস্থান নেয়া হয়েছে, এটা বলা যায়।
দলটির সমর্থিত পেশাজীবীদের ফোরাম শত নাগরিক কমিটির প্রধান অধ্যাপক এমাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এই গ্রেফতারের ঘটনায় সরকারের দিক থেকে বিএনপির প্রতি এক ধরণের উস্কানি রয়েছে, এমন ধারণা থেকে বিএনপি এখন দলগতভাবে অবস্থান নিয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আসিফ নজরুল মনে করেন, বিএনপির প্রতি দুর্বল বা সমমনারা যাতে হতাশ না হয়, দলটি এখন তা বিবেচনায় নিয়ে এমন অবস্থান নিতে পারে।
বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এখন আইনি বিষয়ে তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন।