মৌলভীবাজারের শেরপুর এলাকায় প্রতি বছরের মতো এবার বসেছে মাছের মেলা। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া তিনদিন ব্যাপী এই মেলা শেষ হয় আজ বুধবার দুপুরে। পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে এ মেলা কুশিয়ারা নদীর পাড়ে আয়োজন করা হয়। মেলায় হাওর ও নদীতে স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠা নানা প্রজাতির দেশি টাটকা মাছ কিনতে ক্রেতারা ভিড় জমান।
মেলা ঘুরে দেখা গেছে, একটি কাতল মাছের দাম হাঁকা হয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। আইড় মাছের দাম হাঁকা হয় ১ লাখ ৩৫ হাজার। বোয়াল মাছের দাম ১ লাখ ১০ হাজার। একটি আড়ই মাছ বিক্রি হয়েছে ৭৫ হাজার টাকায়।
মাছের মেলায় আসা ক্রেতা জসিম উদ্দিন জানান, হাওর ও নদীতে বেড়ে উঠা ফরমালিনমুক্ত টাটকা মাছ কিনতে তিনি মেলায় এসেছেন। অনেকেই আসেন পরিবার পরিজন নিয়ে মাছ কিনতে। মেলা উপলক্ষে অনেক প্রবাসী দেশে আসেন। এছাড়া মেলাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বাসিন্দাদের আত্নীয়-স্বজনরাও আসেন বাড়িতে নানা জাতের মাছের স্বাদ নিতে।
মাছ ব্যবসায়ী আমীর আলী ও রমিজ উদ্দিন জানান, ঐতিহ্য ধরে রাখতে বছরজুড়ে নানা কষ্টে তারা মাছ সংগ্রহে রাখেন। পরিপক্ব এ মাছগুলো খেতেও সুস্বাদু। তবে এ বছর মেলা উপলক্ষে মাছের সংগ্রহ বেশি থাকলেও ক্রেতার উপস্থিতি অনেকটা কম।
পাশের কুশিয়ারা নদী, হাকালুকি হাওর, কাওয়াদিঘি হাওর, হাইল হাওর ও সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মৎস্য ব্যবসায়ীরা রুই, কাতল, বোয়াল, গজার, বাঘাইড় ও আইড় মাছসহ বিশাল আকৃতির মাছ নিয়ে আসেন মেলায়।
মাছ ব্যবসায়ী কামরান মিয়া ১৫ কেজি ওজনের একটি বাঘইর মাছের দাম হাঁকেন ৩০ হাজার টাকা। ১০ কেজি ওজনের একটি বোয়াল মাছের দাম ছিল ২০ হাজার টাকা। ১০ কেজি ওজনের একটি রুই মাছের দাম ছিল ১২ হাজার টাকা।
আড়তদাররা জানান, মাছের মেলা এ অঞ্চলের একটি ঐতিহ্য। সিলেট বিভাগের মধ্যে মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জের বিভিন্ন হাওর-নদীর মাছ ছাড়াও খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর, রাজশাহী, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন স্থানের মাছ আসে এ মেলায়। এক রাতে এখানে দেড় থেকে দুই কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয়।
মাছের মেলা অয়োজক কমিটির সভাপতি মো. আশরাফ আলী খান জানান, প্রতিদিন এ মেলায় প্রায় ৫ থেকে ৭ কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয়। তিনি সরকারের কাছে এ মেলার জন্য স্থায়ীভাবে একটি জায়গা নির্ধারণের দাবি জানান।
সূত্র, বাংলা ট্রিবিউন