হাই কোর্টের যে বেঞ্চের কার্যতালিকায় তার আগাম জামিনের আবেদনটি বৃহস্পতিবার শুনানির জন্য ছিল, সেই বেঞ্চ ‘লকডাউন’ ও মহামারীর এই পরিস্থিতিতে আগাম জামিনের শুনানি করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে।
আনভীরের দেশ ছাড়ার ওপর বিচারিক আদালত নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরদিন বুধবার হাই কোর্টে তার জামিন আবেদনের খবর পাওয়া যায়।
বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চের বৃহস্পতিবারের কার্যতালিকায় ১৩ ক্রমিক থেকে ২৭ ক্রমিক পর্যন্ত মোট ১৫টি আগাম জামিনের আবেদন ছিল। তার মধ্যে সায়েম সোবহান আনভীরের আবেদনটি ছিল ১৪তম ক্রমিকে।
কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে ওই আদালত কক্ষের দরজায় টাঙিয়ে দেওয়া এক নোটিসে বলা হয়, ‘বর্তমান লকডাউন এবং কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে অত্র কোর্ট আগাম জামিনের আবেদনপত্র পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত শুনানি গ্রহণ করিবেন না বলে অত্র আদালত অভিমত ব্যক্ত করিয়াছেন।’
পরে ভার্চুয়াল আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসূফ হোসেন হুমায়ুনসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী আগাম জামিন আবেদনের শুনানির বিষয়ে কথা বলেন।
বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক মামনুন রহমান তখন বলেন, “আগাম জামিনের বিষয়গুলো ভুলবশত কার্যতালিকায় এসেছে। আমাদের নির্দেশনা ছিল, এগুলা ভবিষ্যতে আসবে। তাই আজকের কার্যতালিকায় থাকা ১৩ থেকে ২৭ পর্যন্ত আগাম জামিন আবেদনের শুনানি হবে না।
“দেশের বর্তমান পরিস্থিতে কোনো আগাম জামিনের শুনানি হবে না। বিচারাধীন আপিলে কোনো জামিন আবেদনেরও শুনানি হবে না। এর আগে যেগুলো শুনানি করা হয়েছে তা আগামী রোববার প্রত্যাহার করা হবে।”
শুনানি কেন হয়নি জানতে চাইলে সায়েম সোবহান আনভীরের আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শুনানিটা কেন হয়নি তা আদালত বলেনি। আদালত শুধু বলেছেন এখন হবে না। কবে হতে পারে সে ব্যপারেও আদালত কিচ্ছু বলেনি।”
গত সোমবার সন্ধ্যায় গুলশান-২ এর ১২০ নম্বর রোডের একটি ফ্ল্যাট থেকে কলেজছাত্রী মুনিয়ার ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে রাতে গুলশান থানায় মামলা করেন ওই তরুণীর বোন নুসরাত জাহান।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘বিয়ের প্রলোভন’ দেখিয়ে সায়েম সোবহান আনভীর মুনিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। কিন্তু বিয়ে না করে তিনি উল্টো ‘হুমকি’ দিয়েছিলেন মুনিয়াকে।
বোনের ফোন পেয়ে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় এসে ওই বাসার দরজার তালা ভেঙে ঢুকে মুনিয়ার ঝুলন্ত লাশ পাওয়ার কথা এজাহারে লিখেছেন নুসরাত জাহান।
মামলা হওয়ার পর মঙ্গলবার পুলিশ আনভীরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করে। তাতে ঢাকার আদালত সাড়াও দেয়।
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মুনিয়ার ফ্ল্যাটে আনভীরের যাতায়াতের প্রমাণ তারা পেয়েছেন। এ ঘটনায় আনভীরের কোনো বক্তব্য কোনো গণমাধ্যমই পায়নি।
মুনিয়া ঢাকার একটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি কুমিল্লায়; পরিবার সেখানেই থাকে। মাস দুয়েক আগে এক লাখ টাকায় ভাড়া নেওয়া ওই ফ্ল্যাটে ওঠেন তিনি।
ময়নাতদন্তের পর মুনিয়াকে মঙ্গলবার কুমিল্লায় দাফন করা হয়েছে।
সূত্র, বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম