ডাক্তার ফারহানা মোবিনঃ আমার আম্মা, এই মানুষ টা ভীষণ মেধাবী ছাত্রী ছিল । SSC তে Rajshahi Board থেকে মেধা তালিকায় মেয়েদের মধ্যে stand করেছিল । Class five আর Eight এ বৃত্তি পেয়েছিল । ছোট্ট বেলা থেকেই Scholarship পেয়ে লেখাপড়া করতো ।
অদ্ভুত সুন্দর লেখালেখি করতো । অনেক magazine এ ছাপা হয়েছে তার লেখা। খুব সুন্দর ছবি আঁকতো ।
মেধা তালিকায় ছিল আমার মায়ের অনেক পুরস্কার ।
ভীষণ মেধাবী এই মানুষ টা কে জোর করে বিয়ে দিয়েছিল আমার নানা । আমার নানার ধারণা ছিল , মেয়েদের বেশী লেখাপড়া করার দরকার নেয় ।
অথচ আমার নানা ছিলেন চিকিৎসক । সেই সময়ের অনেক মানুষের এই ধরনের ধারণা ছিল। তখন মানুষ জন মনে করতো , মেয়েদের খুব বেশী লেখাপড়া দরকার নেয় ।
ভীষণ মেধাবী আর বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী আমার মা কে , আমার নানা SSC এর গন্ডী পেরানোর আগেই বিয়ে দিয়েছিল।
আমার নানার বাড়িতে একজন বৃদ্ধ শিক্ষক ছিলেন ।
তিনি আমার মা , খালা আর আমার মামাদের পড়াতেন ।
আমার আম্মা অনেক বার আরো একজন শিক্ষক চেয়েছিল । আমার নানা রাজি হননি। আমার আব্বু র
বাসায় এসে আমার আম্মার SSC এর result হলো ।
পুরো রাজশাহী বিভাগ থেকে মেয়েদের মধ্যে দশম stand করেছিল ।
আমার আম্মা খুব সুন্দর কবিতা আবৃত্তি করতো ।
এই মানুষ টা কলেজে ভর্তি হলো । সরকার থেকে Scholarship পেলো । কিন্তু আমার পিতার অবহেলা , আমার দাদীর সেবা যত্ন আর পারিবারিক কাজের বোঝা বহন করতে যেয়ে , আমার মা তার কেরিয়ার গড়তে পারেনি ।
আমার বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী মা , আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করতে যেয়ে , নিজেকে তিল তিল করে শেষ করে দিয়েছে। আমার মা রাজশাহীর হেলেনাবাদ school থেকে সবসময় first হতো ।
তাঁর নানাবিধ প্রতিভার জন্য , school আর পাড়া প্রতিবেশী সবাই তাকে চিনতো ।
আব্বু যখন মারা যায় , তখন এই মানুষ টার বয়স ছিল ৩৪ বছর ।
আমরা তিন ভাই বোন তখন অনেক ছোট ।
শক্ত হাতে আমার মা, আমাদের কে তার মমতার আঁচল দিয়ে জড়িয়ে রেখেছে ।
আম্মা,
তুমি যদি পাশে না থাকতা, তাহলে আমরা তিন ভাই বোন খড় কুটোর মতো পানিতে ভেসে যেতাম ।
আমার সবটুকু পরিশ্রম দিয়ে চেষ্টা করবো , তোমার ইচ্ছে পূরণ করার । আল্লাহ তোমাকে দীর্ঘায়ু দান
করুন ।
তুমি আমাদের মা , তুমিই আমাদের বাবা ।
তোমাকে হাজারো সালাম ।
ডাঃ ফারহানা মোবিন
স্বাস্থ্য সম্পাদক ,
Agrodristi Online Newspaper.
7.9.17