অগ্রদৃষ্টি ডেস্ক: নিজ নিজ এলাকায় বিতর্কিতদের আগামী সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সেসব এলাকায় বিকল্প প্রার্থী খোঁজা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন কাদের।
শনিবার (১২ নভেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এক প্রশ্নের জবাবে এই কথা জানান ওবাদুল কাদের।
কাদের বলেন, যেসব এমপি স্ব স্ব এলাকায় বিতর্কিত, প্রশ্নবিদ্ধ, জনগণের কাছে যারা গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছেন, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমি বলতে পারি তাদের আর মনোনয়ন দেয়া হবে না। তাদের বিকল্প প্রার্থী আমরা দেখছি।
সকল সংসদ সদস্যের ‘এসিআর’ (বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আছে বলে জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের।
প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, এই মুহুর্তে আওয়ামী লীগের দুজন এমপি কারাগারে আছেন। বর্তমান সরকারের তিনজন মন্ত্রীকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হচ্ছে। সরকার কারও বিতর্কিত কর্মকান্ড সহজভাবে নিচ্ছে না।
সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দলের ভেতরে এবং মন্ত্রী হিসেবে পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা আনাকে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, দলকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা সড়ক পরিবহনের মতো কঠিন লড়াই। দলে শৃঙ্খলা আনা একটা চ্যালেঞ্জ। সড়ক পরিবহনে আমি শৃঙ্খলা আনতে পারিনি। এটা আমার জন্য চ্যালেঞ্জ। আর এই মুহুর্তে সড়ক পরিবহনের মতো দলেও শৃঙ্খলা আনা আমার জন্য চ্যালেঞ্জ।
‘অ্যাকশন শুরু হয়েছে। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা এসব বিষয়ে আপোষহীন। এজন্য মনে কিছুটা সাহস পাচ্ছি। তবে বিষয়টি সহজ নয়। ’
‘তৃণমূলে কলহ আছে। তবে কেন্দ্রে আমরা ঐক্যবদ্ধ। কেন্দ্রে কোন সমস্যা নেই। সমস্যা আছে তৃণমূলে। এটা ঠিক করা খুবই দুরূহ কাজ। তবে মাথার উপর নেত্রীর ছায়া আছে, এজন্য আমি আশাবাদী। ’ বলেন ওবায়দুল কাদের।
লালদিঘির মাঠে সংবর্ধনা সভায় দুই গ্রুপে চেয়ার ছোড়াছুড়ির প্রসঙ্গ টেনে কাদের বলেন, মঞ্চে ঐক্যের সুর, চট্টগ্রামে এটা অনেকদিন পর হয়েছে। হঠাৎ মঞ্চের বাইরে পেছনে কিছু তরুণ তুর্কি দেড়-দুই মিনিটের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করল। এটা কেন হবে ? এত শৃঙ্খলার মধ্যে একটা সমাবেশ হল, সেখানে এই সামান্য বিশৃঙ্খলাও কেন ?
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের ভাসমান জনপ্রিয়তা বাড়ছে। নেত্রীর উচ্চতা দলের চেয়ে অনেক উপরে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার অনেক শক্তিশালী। তবে দলটা শক্তিশালী নয়। ২০২১ সালকে যদি টার্গেট করি, তাহলে তো দলকে আরও গতিময়, স্মার্ট করতে হবে। না হলে ডিজিটাল বাংলাদেশ কিভাবে হবে ?
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি কলিম সরওয়ারের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান ও আলী আব্বাস, বিএফইউজের সহ সভাপতি শহীদ উল আলম এবং সিইউজের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী।
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক মহসিন চৌধুরী।
মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যরিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসক এম এ সালাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন ওবায়দুল কাদের।