তথ্য ও প্রযুক্তি ডেস্কঃ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি’র গত দুই বছরের তুলনামূলক হিসাবে এ চিত্র উঠে এসেছে।
২০১৪ ও ২০১৫ সালের আমদানির হিসাবে দেখা যায়, বেসিক মোবাইল হ্যান্ডসেট (খুবই সামান্য বেসিক ফাংশন যেমন কল এবং এসএমএস ইত্যাদি) আমদানি কমেছে ১৬ শতাংশ।
২০১৪ সালে বেসিক হ্যান্ডসেট আমদানি ছিল ৯৬ লাখ ৭৯ হাজার আর ২০১৫ সালে আমদানির পরিমাণ ছিল ৮১ লাখ ৭৫ হাজার ৮০৭টি।
বিটিআরসি’র হিসাবে ফিচার হ্যান্ডসেট (স্মার্ট ফোনের মত হলেও সীমিত ফাংশনের) আমদানি বেড়েছে ২৮ শতাংশ।
২০১৪ সালে ফিচার হ্যান্ডসেটের আমদানি ছিল এক কোটি ৮ লাখ ৬ হাজার ৫৫৩ এবং ২০১৫ সালে ছিল এক কোটি ৩৮ লাখ ৯১ হাজার ৫৩৫টি।
গত দুই বছরের তুলনামূলক চিত্রে স্মার্ট মোবাইল হ্যান্ডসেট (ওএস নির্ভর অ্যাডভান্স কমিউটিং) এর আমদানি বেড়েছে ৩৯ শতাংশ। ২০১৪ সালে আমদানির পরিমাণ ছিল ৪০ লাখ ৫৬ হাজার ১৬১টি এবং ২০১৫ সালে ৫৬ লাখ ২১ হাজার ৭৬৯।
অন্যদিকে ২০১৫ সালে মোট মোবাইল হ্যান্ডসেট আমদানি ছিল দুই কোটি ৭৬ লাখ ৮৯ হাজার ১১১টি। এক বছর আগে এর সংখ্যা ছিল দুই কোটি ৪৬ লাখ এক হাজার ৭৭৭টি। এ হিসাবে মোট হ্যান্ডসেট আমদানি বেড়েছে ১৩ শতাংশ।
বিটিআরসি’র তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে মোট ১০৮ জন আমদানিকারক ৯১টি ব্র্যান্ডের মোবাইল হ্যান্ডসেট আমদানি করে থাকে।
বাংলাদেশে মোবাইল ফোন আমদানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমপিআইএ) সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দেশের বাজারে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে স্মার্ট হ্যান্ডসেট। এজন্য এই আমদানি বাড়ছে।”
২০১৫ সালের স্মার্ট হ্যান্ডসেট আমদানি ৩৯ শতাংশ বাড়লেও এই সংখ্যা এ বছর আরো বৃদ্ধি পাবে জানিয়ে রেজওয়ানুল হক বলেন, “আমদানিকারকরা আশা করছে এ বছর গ্রোথ প্রায় ৪০ শতাংশ বাড়বে।”
এই সেক্টরের বিদ্যমান কর কাঠামোর জন্য স্মার্ট হ্যান্ডসেট তুলনামূলকভাবে বাজারে বেশি আসছে না বলে মনে করেন তিনি।
রেজওয়ানুল বলেন, “বাজারে আমদানি করা বেশিরভাগ হ্যান্ডসেট একটু বেশি মূল্যের। করের পরিমাণ বেশি হওয়ায় বাজারে এর দাম বেশি থাকে, তাই অনেক ক্ষেত্রেই ক্রেতাদের মূল দামের চেয়ে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ গুণতে হয়। বেশি সুবিধা সম্বলিত স্মাটফোনগুলো সাধারণের নাগালের বাইরেই থেকে যাচ্ছে।”
প্রতিটি সেট আমদানিতে তার মূল্যের ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও ৫ শতাংশ শুল্কসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে প্রায় ২৫ শতাংশ সরকারকে দিতে হয় বলে জানান হ্যান্ডসেট ব্যবসায়ীরা।
বিটিআরসি’র হিসাবে গত ফেব্রুয়ারি মাস শেষ নাগাদ দেশে মোবাইল ফোন গ্রাহক সংখ্যা ১৩ কোটি ১০ লাখ ছাড়িয়েছে। সেগুলোর মধ্যে ৮ কোটির মতো সিম সক্রিয় থাকে বলে ধারণা করে অপারেটরটা।
একই হিসাবে ফেব্রুয়ারি শেষ নাগাদ দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী সংখ্যা পাঁচ কোটি ৮৩ লাখ, এর মধ্যে মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা পাঁচ কোটি ৫৫ লাখের বেশি।
মোবাইল ফোন অপারেটররা জানিয়ে আসছে, দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ৯৫ শতাংশের বেশি মোবাইল হ্যান্ডসেটের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকে।
অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব টি আই এম নুরুল কবির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ইন্টারনেট ডেটা ব্যবহার বৃদ্ধিতে স্মার্ট হ্যান্ডসেটের প্রসার খুবই প্রয়োজন।
মোবাইল হ্যান্ডসেট কর কাঠামোর বিষয়ে নুরুল কবির বলেন, “এই করহার এমনভাবে নির্ধারিত করা প্রয়োজন যাতে সাধারণ মানুষ স্মার্টি হ্যান্ডসেট ক্রয় করতে পারে। মূলত সরকারকে ‘শর্ট টাইম’ লাভের চেয়ে ‘লং টার্ম’ লাভের বিষয়ে চিন্তা করা প্রয়োজন।”