রাজধানী ঢাকায় সন্ত্রাসবিরোধী পুলিশের এক অভিযানের সময় বিস্ফোরণে একজন সন্দেহভাজন জঙ্গি নিহত হয়েছেন।
ঢাকার পান্থপথের একটি হোটেলে সকালের দিকে এই ঘটনা ঘটে।
ধানমন্ডির ৩২ নম্বর এলাকায় যেখানে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানমালা চলছে, তার বেশ কাছেই হোটেলটির অবস্থান।
পুলিশের মহাপরিদর্শক বা আইজিপি শহীদুল হক ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন যে নিহত ব্যক্তির নাম সাইফুল ইসলাম, যার বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায়।
হক বলেন, সাইফুল ইসলাম নিজেই বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিজেকে উড়িয়ে দিয়েছেন।
যে হোটেলে এই ঘটনা ঘটে, সেই হোটেল ওলিও ড্রিম হেভেন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের এক কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত। ধানমন্ডির ঐ বাড়িতেই বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে ৪২ বছর আগে এই দিনে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল।
অভিযানের বর্ণনা করে আইজিপি বলেন, জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দেশব্যাপী যে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তারই অংশ হিসেবে গোয়েন্দা নজরদারীর মাধ্যমে পুলিশ জানতে পারে যে ধানমন্ডি এলাকায় জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটতে পারে।
“গোয়েন্দারা জানতে পেরেছিল যে জঙ্গিরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে আসা মিছিলে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালাবে। আমরা আরও জানতে পারি ওলিও হোটেলে জঙ্গিরা অবস্থান নিয়েছে,” বলছিলেন মি. হক।
পুলিশের শীর্ষ এই কর্মকর্তা জানান, প্রথমে ঐ হোটেলের একটি কক্ষে অবস্থানরত জঙ্গিকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। কিন্তু ঐ ব্যক্তি জবাবে একটি বিস্ফোরণ ঘটায়।
হক বলেন, এরপর ঐ জঙ্গি দরোজা ভেঙ্গে যখন আরও একটি বিস্ফোরণ ঘটানোর চেষ্টা করে, তখন পুলিশ গুলি চালায়।
আইজিপি বলেন, ঐ ব্যক্তি সুইসাইডাল ভেস্ট পরিহিত ছিল এবং এক পর্যায়ে সে নিজেই বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আত্মাহুতি দেয়।
“সে যে রুমে থাকতো, সে রুমের সবকিছু উড়ে গেছে – বারান্দা উড়ে গেছে, সাইড ওয়াল উড়ে গেছে। মানে এটা বুঝা গেছে এটা ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী একটি বিস্ফোরক, একটি আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) ছিল।”
হক বলেন, এটি যদি কোন সমাবেশে বিস্ফোরিত হতো তাহলে বড় ধরণের ক্ষতি হতো।
আইজিপি বলেন, নিহত সাইফুল ইসলাম খুলনা বিএল কলেজের শিক্ষার্থী ছিল এবং ঐ সময় সে ইসলামী ছাত্র শিবির করতো।
“যারাই বঙ্গবন্ধুকে ষড়যন্ত্র করে হত্যা করেছে, তারা এখনো ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এই জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা করেছিল,” বলেন শহীদুল হক।
সূত্র, বিবিসি