মধ্যপ্রাচ্যের কুয়েতে একজন রোমানা আহমেদ, কষ্টের সংসার নিয়ে অমানবিকভাবে জীবনযাপন করছেন।
হয়তো রোমানার কষ্টের কথা কেউ জানে, কেউ জানেনা কিংবা কেউ জানার চেষ্টাও করবেনা। কিন্তু রোমানা এ প্রতিবেদককে জানালেন, তাঁর প্রবাসী মানবেতর জীবনযাপনের কষ্টেভরা একটি অতিষ্ট জীবনের কথা।
১৫ বছর আগে রোমানাকে তাঁর স্বামী আকবর হুসেন কুয়েতে নিয়ে এসেছিলেন, কিন্তু এখন ধুধু মরুর দেশে কষ্টের সাথে আলিঙ্গন করে দুঃখেভরা জীবন কাটাচ্ছেন স্বামী পরিত্যক্ত রোমানা।
নিশ্চিত জীবনের পরাজয় মেনে নিয়ে কুয়েতের আব্বাসিয়া এলাকায় রোমানা আহমেদের ২ ছেলে ও ১ মেয়ের সংসার।
১৫ বছর আগে সংসারী হয়েছিলেন রোমানা।
এখন রোমানার স্বামীহীনা সংসার, গাদাগাদি পরিবেশে বেড়ে উঠা সন্তানদের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ।
২০০১ সালে রোমানাকে ঝিনাইদহের আকবর হুসেন বিয়ে করেন, এবং ২০০৩ সালে রোমানাকে তাঁর স্বামী কুয়েতে নিয়ে আসেন।
স্বামী-স্ত্রীর প্রবাসী জীবন শুরুর দিকে বেশ সুখেই কাটছিল।
রোমানা একটি বিউটি পার্লারে কাজ করছিলেন, স্বামী আকবর হুসেন ড্রাইভিং এর কাজ করছিলেন, মোটামুটি সুখ স্বাচ্ছন্দে কাটছিল তাঁদের দাম্পত্য জীবন।
এরই মধ্যে রোমানা-আকবর দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক-জননী হন।
এক পর্যায়ে রোমানা তাঁর উপার্জিত টাকা খরচ করে কুয়েতে নিয়ে আসেন সহোদর ৩ ভাইকে।
কিন্তু কুয়েতে নিয়ে আসা রোমানার ৩ ভাইয়ের উপার্জন ও রোমানার উপার্জিত টাকা স্বামী আকবর হুসেন আত্মসাৎ করা যখন শুরু করেন, তখন’ই তাঁদের সংসার জীবনে শুরু হয় নানা সমস্যার।
রোমানার সাথে স্বামীর নানা সমস্যা দিনকে দিন যখন বাড়তে শুরু করছিল, তখন তাঁর স্বামী আকবর হুসেন তালাকের মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
রোমানা পবিত্র ওমরা হজ্বে গিয়েও কান্নাকাটি করেন, তালাক না দেয়ার জন্য আর্তনাদ করে স্বামীকে বলেন, আমি তোমার কাছে কিচ্ছু চাইনা। শুধু আমার সন্তানদেরকে বাবা ডাকার অধিকার থেকে বঞ্চিত না করার অনুরোধ করছি।
যখনই রোমানা তাঁর ভাইদের উপার্জিত টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ এনে স্বামীকে কিছু বলতেন, তখনই রোমানার স্বামী তাঁর উপর পাশবিক নির্যাতন চালাতেন।
রোমানার স্বামী কাউকে কিছু না বলে হঠাৎ একদিন বাংলাদেশে চলে যান, এরপর ২০১১ সালে লোক মারফতে রোমানাকে তালাকনামা পাঠান স্বামী আকবর হুসেন।
একদিকে স্বামীছাড়া অবর্ণনীয় কষ্টের সংসার রোমানার, অন্যদিকে ৩ সন্তানদের মধ্যে ২ সন্তান’ই নানা রোগ ব্যাধি নিয়ে অমানবিক কষ্টে রীতিমতো অতিষ্ট হয়ে উঠেছে চার ৪টি জীবনের একটি অশান্তির নীড়।
নিজ জীবনের পরাজয় মেনে নিলেও- রোমানা সন্তানদের পরাজিত হতে দিতে চান না, রোমানার আর্তনাদ-আমার সব কিছু শেষ হয়ে গেছে।
হাজারো কষ্টের সাথে লড়াই করা রোমানার মানবেতর জীবনযাপনের কথা শুনে যদিও অনেকই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু কুয়েত প্রবাসী রোমানার কষ্টের সংসার এখনো আগের মতোই রয়ে গেছে।
আ.হ.জুবেদ
সম্পাদক- অগ্রদৃষ্টি ও মানবাধিকার কর্মী