নাসির উদ্দিন খোকন : সিলেটকে দেশের পুণ্যভূমি বলা হয়, বিপদে আপদে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতা নেত্রীরাও ছুটে যান পুণ্যভূমি সিলেটে, গেলো নির্বাচনেও আমরা দেখেছি দেশের প্রধান তিনটি রাজনৈতিক দলের প্রধানেরা সিলেটে হজরত শাহজালাল (রঃ) মাজার জিয়ারতের মাধ্যমেই তাদের নির্বাচনী কর্মকাণ্ড শুরু করেছেন, কিন্তু সেই হিসাবে সিলেটের অবকাঠামো উন্নয়ন হয়নি।
সিলেটের মানুষের দাবীও কিন্তু তেমন বেশি কিছু নয়, তাদের প্রধানতম দাবী হলো ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মৌলভীবাজার হাসপাতালটিকে মেডিকেল কলেজ হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া, এবং সিলেট ওসমানি বিমানবন্দরে কুয়েত থেকে সরাসরি ফ্লাইট চালু করা, এই দাবীটা এখন সিলেটসবাসির প্রাণের দাবীতে পরিণত হয়েছে, কারন অতিসম্প্রতি একটি মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় কেড়ে নিয়েছে সাত জন সিলেট প্রবাসীর মহা মুল্যবান প্রাণ, এবং গুরুতর আহত হয়েছেন প্রায় চল্লিশ জন। মহামূল্যবান এইজনই বলছি যে আমার দির্ঘ প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, অন্যান্য এলাকার লোকদের তুলনায় সিলেটের লোকগুলো বেশি পরিশ্রমী এবং সম্মানজনক কাজ করার চেষ্টা করে। এবং দেশের রাজনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও তারা অন্যান্য এলাকার লোকদের চাইতে বেশী সক্রিয়।
তাই সিলেটবাসীর এই দাবীটির সাথে আমিও একাত্মতা ঘোষণা করছি এইজন্যই যে, বৃহত্তর সিলেটের প্রায় ৩২ হাজার লোক কুয়েতে কর্মরত আছেন, যাদের অনেকেই ব্যবসাবাণিজ্য সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও সম্মানজনক পদে নিয়োজিত আছেন, এই মানুষগুলো বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরাচ্ছেন শুধু তাই নয়, সুদূর প্রবাসে এসেও দেশের ইতিহাস ঐতিহ্য শিল্প সংস্কৃতি হৃদয়ে ধারন ও লালন করে চলছে, দেশের রাজনৈতিক সামাজিক ক্ষেত্রেও রাখছেন অসামান্য অবদান। তাই সিলেটবাসীর সাথে আমিও সরকারের কাছে দাবী জানাচ্ছি কুয়েত টু সিলেট সরাসরি ফ্লাইট চালু করার জন্য।
অনেকেই হয়ত প্রশ্ন করতে পারেন, নাসের ভাই আপনি ফেনীর মানুষ হয়ে সিলেটের উন্নয়নের জন্য লেখালেখি করছেন কেন? হ্যাঁ বন্ধুরা সিলেটের উন্নয়নের দাবীতে আমার লেখার কারন হলো, আপনারা নিশ্চয় জানেন যে গত কয়েকদিন আগে ঢাকা থেকে সিলেট যাওয়ার পথে হবিগঞ্জ বিশ্বরোডে দুর্ঘটনায় সাতজন প্রবাসী মারা যায়, তাদের সবার বাড়ি সিলেটে, তারা দুবাই এবং কাতার থেকে এসেছিলেন ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর হয়ে। সড়ক দুর্ঘটনায় একসাথে এতগুলো প্রবাসীর মৃত্যু, আমি একজন প্রবাসী হিসাবে আমার হৃদয়কে নাড়া দিয়েছে।
যারা প্রবাসে আছেন তারা নিশ্চয় জানেন এক রুমে চারজন লোক থাকলে দেখা যায় চারজন চার জেলার, প্রবাসে আমাদের অনেকের কোন বাবা, ভাই বা কোন নিকটাত্মীয় নাই, দশ পিতার দশ সন্তান মিলেমিশেই আমরা প্রবাসে থাকি, একে অপরের সুখদুঃখ শেয়ার করি, দ্বিতীয়ত আমার প্রবাস জীবনের অনেক বন্ধু বান্ধব আছে যাদের সাথে আমার রক্তের সম্পর্ক না থাকলেও আত্মার সম্পর্ক আছে যাদেরকে আমি কখনো ভুলতে পারবোনা, তেমনি একজন সিলেটের মানুষ, সর্বজন শ্রদ্ধেয় হাজী মাহমুদ আলী, যিনি আমাকে সন্তান তুল্য স্নেহ করেন, কুয়েতে আজকে আমার যে সামাজিক এবং রাজনৈতিক অবস্থান, এর বেশিরভাগ অবদান’ই এ শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তির। এটি কখনো অস্বীকার করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়, শুধু তাই নয় তিনি একজন একজন বিশিষ্ট সমাজ সেবক হিসাবে বিশ্বনাথ বালাগঞ্জ আসন থেকে আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রতিদন্ধিতা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে, দল যদি তাঁকে মনোনয়ন দেন, তাহলে আমার ইচ্ছা আছে আমি স্বশরিরে সিলেট গিয়ে তাঁর নির্বাচনী কাজে অংশ নেবো ইনশাল্লাহ।
তবে আমার জন্মভূমি ফেনীর জন্যও আমি লেখালেখি করে আসছি দীর্ঘদিন থেকেই, ইতোমধ্যেই আমার প্রস্তাবিত ছোটফেনী নদীর মুখে ক্লোজার ড্যাম নির্মিত হয়ে গেছে, এবং সওদাগর হাট কোম্পানিগঞ্জ সংযোগ সেতু নির্মাণাধীন আছে, এবং আরো অনেকগুলো প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছে, সেইসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ফেনী হবে বাংলাদেশের সিংগাপুর ইনশা আল্লাহ।