বিনোদন ডেস্ক : একটি সিনেমার জন্য বাজেট গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেই বাজেটকে যথাযথ প্রয়োগের জন্য যে দক্ষ হাত প্রয়োজন, তা এই সিনেমায় দেখা গেছে। এক শব্দে রিভিউ বলতে হয়, ‘অসাধারণ’!
প্রেক্ষাপট ১৩ শতকের রাজস্থান। মাহারাওয়াল রতন সিং-এর (শাহিদ কাপুর) স্ত্রী রানি পদ্মাবতীর (দীপিকা পাড়ুকোন) সৌন্দর্য ও শৌর্যের খ্যাতি সারা দেশ জোড়া। দিল্লির সুলতান, অত্যাচারী আলাউদ্দিন খিলজির নজর পড়ে রানি পদ্মাবতীর উপর। তাকে নিজের বশে আনার জন্যে সব সীমা অতিক্রম করেন খিলজী… অতঃপর… কী?
১৫৪০ সালে মালিক মুহাম্মদ জয়সি একটি সুফি কবিতা লেখেন। ‘পদ্মাবত’ নামের সেই কবিতা থেকেই এ সিনেমা। কবির বর্ণনার সঙ্গে যোগ হয়েছে পরিচালকের কল্পনা। ছবিটি দেখার আগে একটি কথা মাথায় রাখতে হবে, সঞ্জয় লীলা বনসালি পর্দায় যে পদ্মাবত ফুটিয়ে তুলেছেন, তা এককথায় রূপকথা। স্ক্রিনের উপর যে দৃশ্য উন্মোচিত হয়েছে, তা নিয়ে এতদিন ধরে এত অশান্তির প্রয়োজন বোধহয় ছিল না। আর মুগ্ধ হয়ে অভিনয় দেখতে হবে, দীপিকা ও রণবীরের। বাড়তি পাওনা শাহিদ কাপুর। এই ত্রয়ীর অসাধারণ অভিনয়, নিঃসন্দেহে প্রত্যেক দর্শকের মনে দাগ ফেলবে।
মেওয়ারের রাজা রতন সিং-এর ভূমিকায় অনবদ্য শাহিদ কাপুর। রাজপুত রাজার ভূমিকায় তার রাজকীয় অভিনয় এবং স্ক্রিন জুড়ে তার অনন্য উপস্থিতি ফের প্রমাণ করলো ভালো চরিত্র পেলে শাহিদ কতটা অসাধারন হতে পারে। মেওয়ারের প্রজা, রানি পদ্মাবতী থেকে শুরু করে প্রেক্ষাগৃহে বসে থাকা দর্শকের মনেও নিজের আসন পাকা করে নেন শাহিদ। সাহসী ও বুদ্ধিমতী রাজপুত রানি পদ্মাবতীর ভূমিকায় দীপিকা পাড়ুকোন প্রমাণ করলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনি আজ শুধু সুন্দরী নায়িকাই নন, তিনি খাঁটি অভিনেত্রীও বটে।
এবার আসা যাক অত্যাচারী সম্রাট আলাউদ্দিন খিলজি প্রসঙ্গে। সুরমা পরা হিংস্র চোখের চাউনি থেকে শুরু হয়ে এক পাশবিক শারীরিক ভাষা, রণবীর সিং এই চরিত্রে যথাযথ। ভারতীয় গনমাধ্যম এরই মধ্যে তার প্রশংসায় বুঁদহয়ে আছে। তার এবং শাহিদ কাপুরের মধ্যে যে ক’টি দৃশ্য রয়েছে তাতে দুই অভিনেতাই প্রখর। আলাউদ্দিনের বেগমের ভূমিকায় অদিতি রাও হায়দরিও এই চরিত্রটি যথেষ্ট যত্ন নিয়েই ফুটিয়ে তুলেছেন।
থ্রিডিতে যেন আরও বেশি করে ফুটে উঠেছে ঐশ্বর্য ও প্রাচুর্য। তবে এক্ষেত্রে সাধুবাদ জানাতেই হবে ছবির সিনেমাটোগ্রাফার সুদীপ চট্টোপাধ্যায়কে। তার ক্যামেরায় ধরা পড়েছে একের পর এক অসাধারণ ফ্রেম। তবে অ্যাকশন সিনগুলি বিশেষ দাগ কাটতে পারেনি। গানের দৃশ্যগুলিরও বিশেষ কোনও ভূমিকা ছিল না চিত্রনাট্যে। ছবির সময়ও খানিক কমালে বিশেষ ক্ষতি হত বলে মনে হয় না। ছোটখাটো কিছু খুঁত সবকিছুতেই থাকে, তবে এই ছবি নিঃসন্দেহে আপনার মনে বহুদিন থেকে যাবে।
টেকনিক্যাল রেটিং:
আইএমডিবি ইউজার রেটিং: ৮/১০
ওভারঅল রিভিউ রেটিং: ৪/৫
এডিটিং: ৩.৫/৫
অভিনয়: ৪.৫/৫
চিত্রনাট্য : ৪.৫/৫
সংগীত: ৩/৫
আবহ সংগীত: ৪/৫
প্রথম অর্ধেক: ৩/৫
দ্বিতীয় অর্ধেক: ৪/৫
একনজড়ে দেখে নেয়া যাক বলিউডের প্রভাবশালী গনমাধ্যমের রেটিং:
নিউজ ১৮( রাজিব মাসান্দ):৩.৫/৫
টাইমস অব ইন্ডিয়া- (মীনা আইয়ার):৩.৫/৫
ফিল্ম কম্পেনিয়ন-(অনুপমা চোপড়া):২.৫/৫
এনডিটিভি-(রাজা সেন):১.৫/৫
রেডিফ-(সাবেরা আর সমেশ্বর):১.৫/৫
কইমই (উমেশ পুনওয়ানি) : ৪/৫
বলিউড লাইফ- (স্রিজু):৪/৫
হিন্দুস্থান টাইমস (রহিত): ৩.৫/৫
বলিউড হাঙ্গামা (তারান আদার্শ):৪.৫/৫
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস (শুভ্রা গুপ্তা) :৪/৫
গলফনিউজ সাইট (মঞ্জুসা):৩/৫