জাকির সিকদার : মোবাইল ফোন গ্রাহকের সংখ্যা কমার ধারা অব্যাহত রয়েছে। জানুয়ারির চেয়ে ফেব্র“য়ারি মাসে মোবাইল ফোনের গ্রাহক কমেছে ৮ লাখ ৭১ হাজার। ফেব্র“য়ারি মাসে গ্রাহক কমেছিল ১৭ লাখ ৬৪ হাজার। চলতি বছরের দুই মাসে ২৬ লাখ ৩৫ হাজার মোবাইল গ্রাহক কমেছে। তবে ইন্টারনেট গ্রাহকের
সংখ্যা প্রতি মাসেই বাড়ছে। ফেব্র“য়ারি মাসে দেশে ২১ লাখ ৫০ হাজার ইন্টারনেট গ্রাহক বেড়েছে।
দেশের ছয়টি মোবাইল ফোন অপারেটরের মধ্যে জানুয়ারির মতো ফেব্র“য়ারিতেও একমাত্র রাষ্ট্রীয় কোম্পানি টেলিটকের গ্রাহক সংখ্যা বেড়েছে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সোমবার ফেব্র“য়ারি মাসের মোবাইল ও ইন্টারনেট গ্রাহকদের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। দীর্ঘদিন পর প্রথম চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মোবাইল ফোন গ্রাহকের সংখ্যা বৃদ্ধির ধারায় ছেদ পড়ে। কী কারণে অপারেটরের গ্রাহক কমেছে তা জানতে চাইলে অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশ (এমটব)-এর মহাসচিব টি আই এম নুরুল কবির বলেন, ‘সিম রি-রেজিস্ট্রেশন ও বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের বিষয়টি গ্রাহক সংখ্যা কমে যাওয়ার একটি কারণ হতে পারে। মূলত আমি বলতে চাই নতুন একটি প্রক্রিয়া শুরু হলে এর একটা ইমপ্লিকেশন আছে, এটাকে আমি সেভাবেই দেখি। যখন এ প্রসেসটা সম্পন্ন হবে তখন আবার অটোম্যাটিক্যালি এটা (গ্রাহক সংখ্যা) বাড়বে। কারণ আমাদের দেশে এখনো তো অনেক মানুষ মোবাইলের বাইরে রয়েছে।’ গত ১৬ ডিসেম্বর থেকে দেশে বায়োমেট্রিক বা আঙুলের ছাপ পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিটিআরসির পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, জানুয়ারি মাসে দেশে মোট মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৩ কোটি ১০ লাখ ৮৫ হাজার। জানুয়ারি মাসে এ সংখ্যা ছিল ১৩ কোটি ১৯ লাখ ৫৬ হাজার। এক মাসে গ্রাহক কমেছে ৮ লাখ ৭১ হাজার। অপরদিকে জানুয়ারিতে ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা ৫ কোটি ৬১ লাখ ৬৭ হাজার থাকলেও ফেব্র“য়ারিতে তা বেড়ে হয়েছে ৫ কোটি ৮৩ লাখ ১৭ হাজার। বৃদ্ধি পাওয়া ২১ লাখ ৫০ হাজারের মধ্যে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীই ২০ লাখ ৮১ হাজার। জানুয়ারিতে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫ কোটি ৩৪ লাখ ৩১ হাজার থাকলেও ফেব্র“য়ারিতে এ সংখ্যা হয়েছে ৫ কোটি ৫৫ লাখ ১২ হাজার। অন্যান্য ইন্টারনেট গ্রাহক (ওয়াইম্যাক্স, আইএসপি ও পিএসটিএন) ৬৯ হাজার বেড়েছে। ফেব্র“য়ারিতে রাষ্ট্রীয় মোবাইল ফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান টেলিটকের গ্রাহক বেড়েছে ৪৬ হাজার। জানুয়ারিতে টেলিটকের গ্রাহক ৪২ লাখ ১১ হাজার ছিল, এক মাস পর তা হয়েছে ৪২ লাখ ৫৭ হাজার। এ ছাড়া অন্য পাঁচটি অপারেটরের সবারই জানুয়ারির মতো গ্রাহক কমেছে। অপারেটরদের মধ্যে এক মাসে সবচেয়ে বেশি গ্রাহক কমেছে বাংলালিংকের। এ অপারেটরের গ্রাহক কমেছে ৪ লাখ ৮ হাজার। এক মাসের মধ্যে এদের গ্রাহক ৩ কোটি ২৩ লাখ ৬৮ হাজার থেকে কমে হয়েছে ৩ কোটি ১৯ লাখ ৬০ হাজার। রবির গ্রাহক কমেছে ২ লাখ ৪২ হাজার। জানুয়ারিতে রবির গ্রাহক ছিল ২ কোটি ৭৭ লাখ ৯৫ হাজার, ফেব্র“য়ারিতে তা হয়েছে ২ কোটি ৭৫ লাখ ৫৩ হাজার। গ্রামীণফোনের (জিপি) গ্রাহক কমেছে ৭২ হাজার। ৫ কোটি ৬২ লাখ ৪ হাজার থেকে ফেব্র“য়ারিতে জিপির গ্রাহক হয়েছে ৫ কোটি ৬১ লাখ ৩২ হাজার। এয়ারটেলের গ্রাহক কমেছে এক লাখ ৫৯ হাজার। ফেব্র“য়ারিতে এয়ারটেলের গ্রাহক এক কোটি ৩ লাখ ৫১ হাজারে দাঁড়িয়েছে, এক মাসে আগে এ সংখ্যা ছিল এক কোটি ৫ লাখ ১০ হাজার। এ সময়ে সিটিসেলের গ্রাহক কমেছে ৩৪ হাজার। জানুয়ারিতে সিটিসেলের গ্রাহক ৮ লাখ ৬৭ হাজার থাকলেও পরের মাসেই তা হয়েছে ৮ লাখ ৩৩ হাজার।