বিশেষ প্রতিনিধিঃ প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলীর ২য় মৃত্যুবার্ষিকী ১৪ সেপ্টেম্বর আজ বৃহস্পতিবার। ২০১৫ সালের এই দিনে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সৈয়দ মহসীন আলী মৃত্যুবরণ করেছিলেন।
প্রয়াত সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর পরিবার এবং সংগঠনের পক্ষ থেকে দিনব্যাপী কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। পরিবার ও সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, সকালে প্রয়াত মহসিন আলীর কবরে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে ফাতেহা পাঠ ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে।পরে বাসায় মিলাদ ও এতিমদের খাবার বিতরণ করা হবে।
এছাড়াও পরের দিন ১৫সেপ্টেম্বর শুক্রবার স্থানীয় পৌরজনমিলন কেন্দ্রে আলোচনা সভা ও দেয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
প্রয়াত সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী ১৯৪৮ সালের ১২ ডিসেম্বর এক সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।সৈয়দ মহসীন আলীর বাবার নাম সৈয়দ আশরাফ আলী। তিনি ব্যবসায়ী ছিলেন। সৈয়দ মহসীন আলীর মায়ের নাম আছকিরুনন্নেছা খানম। ৫ ভাইদের মধ্যে তিনি সবার বড় ছিলেন।ছাত্রলীগের একজন সদস্য হিসেবে মহসিন আলী ছাত্রজীবনেই আওয়ামী লীগ রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। ১৯৭১ এ ২৩ বছর বয়সে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।দেশমাতৃকার প্রতি তার মমত্ববোধের কারণে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তিযুদ্ধে। সম্মুখসমরে যুদ্ধ চলাকালে গুলিবিদ্ধও হয়েছিলেন তিনি। কাজ করেছেন যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশ গঠনেও। তিনি সামাজিক ও রাজনৈতিক কাজে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন।
মৌলভীবাজার মহকুমার রেডক্রিসেন্ট সোসাইটিতে তিনি ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।তিনি মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনিই একমাত্র জননেতা যিনি মৌলভীবাজার পৌরসভায় পর পর ৩ বার বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৯২ সালে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে তাকে শ্রেষ্ঠ পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করে।
২০১৪ সালের ১২ই জানুয়ারি তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন।
সমাজসেবায় অবদান রাখার জন্য-২০১৫ সালে সৈয়দ মহসিন আলী ভারতের আচার্য দীনেশ চন্দ্র সেন রিসার্চ সোসাইটির কাছ থেকে ‘আচার্য দীনেশ চন্দ্র সেন স্মৃতি স্বর্ণপদক-২০১৪’ লাভ করেন এবং ‘হ্যালো কলকাতা’ নামে কলকাতাভিত্তিক একটি সমাজকল্যাণ প্রতিষ্ঠান তাঁকে ‘নেহেরু সাম্য সম্মাননা-২০১৪’ পুরস্কারে ভূষিত করে।এছাড়াও দেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন তিনি, ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করে।
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন।একজন সৎ রাজনীতিবিদ হিসেবে তাঁর সুখ্যাতি ছিলো।মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।