ডেস্ক নিউজ : বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ নগরীর ফুটপাতে হকার বসানোকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের এমপি শামীম ওসমানের সমর্থকদের হামলায় মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী ও কয়েকজন সাংবাদিকসহ অন্তত অর্ধশত ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এসময় প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়াসহ দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
আজ (মঙ্গলবার) বিকেলে নগরীর চাষাঢ়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ দুই শতাধিক শর্ট গানের ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ‘হকার মুক্ত ফুটপাত চাই’ স্লোগান ধরে লোকজন নিয়ে চাষাঢ়ার দিকে হেঁটে আসছিলেন সেলিনা হায়াৎ আইভী। এ সময় সায়েম প্লাজা থেকে আইভীর লোকজনের ওপর বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। পিস্তল উঁচিয়ে ফাঁকা গুলিও ছোড়া হয়। এ সময় ধাক্কাধাক্কিতে সড়কে পড়ে যান সেলিনা হায়াৎ আইভী। সমর্থকরা মানবদেয়াল তৈরি করে লাঠি ও ইটপাটকেলের আঘাত থেকে মেয়রকে প্রাণে রক্ষা করেন। তবে তাঁর পায়ে ইটের আঘাত লাগায় তিনি প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।
এদিকে, সংঘর্ষের একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে হকারদের উদ্দেশে সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেন, ‘এ সমস্ত ছোটখাটো গুণ্ডাপাণ্ডা মোকাবিলা করার জন্য আমি একাই যথেষ্ট। আমার সব চেনা আছে, জানা আছে। প্রশাসনের ভূমিকা, যেটা নিয়েছেন, সেটা নিয়েছেন। মনে রাখবেন, যদি আমাদের মাঠে নামতে হয় তবে দুই-এক হাজার না, দুই-এক লাখ নামবে।’।
আইভীর অভিযোগের ব্যাপারে শামীম ওসমান বলেন, ‘আমি সেখানে প্রথমে ছিলামই না। আমার দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব আমাকে বিকেলে ফোন করে বলেন, সেখানে যা হচ্ছে তা বন্ধ করতে। পরে আমি সেখানে যাই এবং উত্তেজিত লোকজনকে সরিয়ে আনতে সক্ষম হই। আইভী কারও সঙ্গে কোনো কথা না বলে রাস্তায় নামলেন। তাঁর সঙ্গে ছিল যুবদলের খুনের আসামিরা। পরে তারা হকারদের মারধর করেছে। পরে হকাররা উত্তেজিত হলে সংঘর্ষ হয়। আইভীর লোকজনও গুলি চালিয়েছে। ককটেল ফাটিয়েছে। ১০ জন হকার আহত হয়েছেন।’
শামীম ওসমান বলেন, হকার্স উচ্ছেদ করে মেয়র আইভী অন্যায় করেছেন। তিনি শান্তিপূর্ণভাবে হকার্সদের বিকেল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বসার নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, নগরীর অক্ষুণ্ন রাখতে নারায়ণগঞ্জকে হকারমুক্ত করার ঘোষণা দেন মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। এ জন্য হকার্স মার্কেটও নির্মাণ করে দিয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন। কিন্তু হকাররা মেয়রের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানালে তাদের সমর্থন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের এই দুই নেতার বাকবিতণ্ডার চলার পর আজ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল।